উৎপাদন ও সংগঠন সাজেশন

  অধ্যায় :4 উৎপাদন ও সংগঠন

অর্থনীতি আপডেট সাজেশন

আমাদের  ওয়েবসাইট “অর্ডিনেট আইটি.কম” ও  চ্যানেল ”অর্ডিনেট ক্লাসরুম  ”আপনাদের  স্বাগতম । 
আমরা একটি ভিন্ন প্রজন্মের স্বপ্ন দেখি। আমরা অধিক চিন্তাশীল প্রজন্ম গড়তে চাই, আলাদা মানুষ যাদের আগে চিন্তা করার অভ্যাস থাকবে। আমরা মানুষ কেন? কারণ আমরা চিন্তা করি, এবং সেই চিন্তাকে মুক্তচিন্তা হতে হবে। আর মুখস্থ করে আর যা ই হোক, বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে না। আর সেই প্রচেষ্টারই অংশ হল আমাদের কনটেন্ট ও ভিডিও লেকচার। এই কনটেন্ট ও  ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বিষয় এমনভাবে শেখানোর চেষ্টা করা যাতে আপনি বইয়ের বাইরেও অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আর আপনি যখন চিন্তাশীল মানুষ হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝবেন এই দেশকে আলাদা করতে আমাদের কী করতে হবে, কতদূর যেতে হবে।

 

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

১. উৎপাদন কী? 

উত্তর: উপকরণ বা প্রাথমিক দ্রব্য ব্যবহার করে নতুন কোনো দ্রব্য বা উপযোগ সৃষ্টি করাকে উৎপাদন বলে।

২. উপযোগ সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?

উত্তর: উৎপাদনের উপযোগ সৃষ্টির প্রক্রিয়া পাঁচ প্রকার।

প্রশ্ন-৩. সাধারণ অর্থে উৎপাদন কাকে বলে?

উত্তর: সাধারণ অর্থে উৎপাদন বলতে কোনো কিছু সৃষ্টি করাকে বোঝায়। 

প্রশ্ন-৪. রূপগত উপযোগ কাকে বলে? 

উত্তর: দ্রব্যের রূপ পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন দ্রব্য উৎপাদন করাকে রূপগত উপযোগ বলে ।

প্রশ্ন-৫. কীভাবে রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করা যায়? 

 উত্তর: বস্তুর আকৃতি পরিবর্তনের মাধ্যমে রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করা হয়।

 প্রশ্ন-৬. স্থানগত উপযোগ কী? 

উত্তর: কোনো কোনো দ্রব্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করলে তার যে নতুন উপযোগ সৃষ্টি হয় তাকে স্থানগত উপযোগ বলে ।

 প্রশ্ন-৭. সময়গত উপযোগ কী? 

উত্তর: সময়ের ব্যবধানে অনেক জিনিসের উৎপাদন ও উপযোগ বাড়ে। এদেরকে সময়গত উপযোগ বলে।

প্রশ্ন-৮. সেবাগত উপযোগ কী?

উত্তর: মানুষ শ্রম বা সেবামূলক কাজের মাধ্যমে নতুন উপযোগ সৃষ্টি করলে তাকে সেবাগত উপযোগ বলে।

প্রশ্ন-৯. মালিকানাগত উপযোগ কী? 

উত্তর: কোনো কোনো অর্থনৈতিক দ্রব্য ও সেবার মালিকানা পরিবর্তন করে অতিরিক্ত উৎপাদন সৃষ্টি করা হয় তকে মালিকানাগত উপযোগ বলে ।

প্রশ্ন-১০. উৎপাদনের উপকরণ মূলত কয়টি? 

উত্তর: উৎপাদনের উপকরণ মূলত ৪টি।

প্রশ্ন-১১. উৎপাদনের উপকরণ কী? 

উত্তর:- কোনো কিছু উৎপাদনের জন্য যেসব বস্তুগত ও অবস্তুগত সামগ্রীর প্রয়োজন পড়ে সেগুলোকে উৎপাদনের উপকরণ বলে।

প্রশ্ন-১২. ভূমি কী? 

উত্তর: উৎপাদনে সাহায্য করে এমন সব প্রাকৃতিক সম্পদই ভূমি । 

প্রশ্ন-১৩. উৎপাদনের আদি ও মৌলিক উপকরণ কী? 

 উত্তর: উৎপাদনের আদি ও মৌলিক উপকরণ হলো ভূমি।

প্রশ্ন-১৪.শ্রম কাকে বলে? 

উত্তর: উৎপাদন কাজে নিয়োজিত মানুষের সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম, যার বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করা যায় তাকে অর্থনীতিতে শ্রম বলে। 

প্রশ্ন-১৫. সংগঠনের কাজ কী?

উত্তর: সংগঠনের কাজ হলো উৎপাদনের উপকরণসমূহের সমন্বয় সাধন ও ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করা।

প্রশ্ন-১৬.মূলধন কী? 

উত্তর: যেসব দ্রব্যসামগ্রী মানুষের শ্রমের দ্বারা উৎপাদিত এবং সরাসরি ভোগের জন্য ব্যবহৃত না হয়ে পুনরায় উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে মূলধন বলে।

প্রশ্ন-১৭. উদ্যোক্তা কী?

উত্তর: যিনি উৎপাদনের উপকরণগুলোর (ভূমি, শ্রম, মূলধন) মধ্যে সুষ্ঠুভাবে সমন্বয়ের কাজ করেন তাকে উদ্যোক্তা (Organiser) বলা হয় ।

 প্রশ্ন-১৮. সমন্বয়কারী কাকে বলে?

উত্তর: যিনি উৎপাদন ক্ষেত্রে ভূমি, শ্রম, মূলধন ইত্যাদি উপকরণের মধ্যে উপযুক্ত সমন্বয় ঘটিয়ে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করেন তাকে সমন্বয়কারী বলে ।

প্রশ্ন-১৯. অর্থনীতিতে সংগঠনের অর্থ কী?

উত্তর: অর্থনীতিতে সংগঠনের অর্থ হলো উপকরণগুলোর একত্রীকরণ সেগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা।

প্রশ্ন-২০. বিনিয়োগ কী।

উত্তর; সঞ্চিত অর্থ উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হলে তাকে বিনিয়োগ বলে। 

প্রশ্ন-২১. সংগঠন কাকে বলে?

উত্তর: কোনো কিছু উৎপাদনের জন্য ভূমি, শ্রম ও মূলধনকে একত্র করা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করাকে সংগঠন বলে।

প্রশ্ন-২২. ব্যবসায়ের ভিত্তি কী?

উত্তর: সংগঠন হচ্ছে ব্যবসায়ের ভিত্তি

প্রশ্ন-২৩. সংগঠনের প্রথম ধাপে কী করতে হয়?

উত্তর: সংগঠনের প্রথম ধাপে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য কী হবে তা নির্ধারণ করতে হয়।

প্রশ্ন-২৪. অধিকার ও ভার বণ্টন কী?

 উত্তর: অধিকার ও ভার বণ্টন বলতে কর্তব্য পালনের উপযুক্ত কার্যনির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করাকে বোঝায়।

প্রশ্ন-২৫. কীসের ভিত্তিতে কর্তব্য বণ্টন করা হয়? 

 উত্তর: কর্মীর অভিজ্ঞতা, ক্ষমতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে কর্তব্য বণ্টন করা হয়। 

প্রশ্ন-২৬. ভার অর্পণ বলতে কী বোঝায়? 

উত্তর: ভার অর্পণ বলতে কর্তব্য পালনের উপযুক্ত কার্যনিবাহী ক্ষমতা অর্পণ করাকে বোঝায়।

প্রশ্ন-২৭.উৎপাদনবিধি কী? 

উত্তর: যে বিধির সাহায্যে উপকরণ নিয়োগ তথা উৎপাদন খরচ এবং উৎপাদনের আনুপাতিক পরিবর্তন জানা যায়, তাকে উৎপাদনবিধি বলে ।

 প্রশ্ন-২৮. সাধারণত কোন ক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদনবিধিটি অধিক কার্যকর? 

উত্তর: সাধারণত কৃষিক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদনবিধিটি অধিক কার্যকর।

প্রশ্ন-২৯.মোট উৎপাদন কী? 

উত্তর: বিভিন্ন উপকরণ নিয়োগের তাকে মোট উৎপাদন বলে।

প্রশ্ন-৩০. শ্রম ঘণ্টা কাকে বলে?

উত্তর: শ্রমিকের কর্মে নিযুক্ত সময়কে শ্রম ঘণ্টা বলে। যেমন: একজন শ্রমিকের এক ঘণ্টার কাজকে এক শ্রম ঘণ্টা বলে ।

প্রশ্ন-৩১. প্রান্তিক উৎপাদন কী? 

 উত্তর: উৎপাদনের উপকরণের এক একক পরিবর্তনের ফলে উৎপাদনের যে পরিবর্তন হয়, তাকে প্রান্তিক উৎপাদন বলে।

প্রশ্ন-৩২. গড় উৎপাদন কাকে বলে?

উত্তর: মোট উৎপাদনের পরিমাণকে মোট উপকরণ বা উপাদান দ্বারা ভাগ করলে যা পাওয়া যায় তাকে গড় উৎপাদন বলে।

প্রশ্ন-৩৩.গড় উৎপাদনের সূত্রটি লেখো। 

উত্তর: গড় উৎপাদন = মোট উৎপাদনের পরিমাণ / মোট উপকরণের সংখ্যা।

প্রশ্ন-৩৪. উৎপাদন ব্যয় কাকে বলে? 

উত্তর: কোনো দ্রব্য উৎপাদনের জন্য উৎপাদনকারী যে অর্থ ব্যয় করে তাকে উৎপাদন ব্যয় বলে।

প্রশ্ন-৩৫. উৎপাদন ব্যয় কত প্রকার? 

উত্তর: উৎপাদন ব্যয় দু'প্রকার।

প্রশ্ন-৩৬.আর্থিক উৎপাদন ব্যয় কী?

উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি দ্রব্য বা সেবা উৎপাদন করতে উৎপাদক বিভিন্ন ধরনের উপকরণ সংগ্রহ ও ব্যবহারের জন্য যে করে তাকে উৎপাদনের আর্থিক ব্যয় বলে।

প্রশ্ন-৩৭.প্রকাশ্য ব্যয় কী? 

উত্তর:- কোনো উৎপাদনী প্রতিষ্ঠান উপকরণ ভাড়া বা ব্রুয়ের জন্য দৃশ্যমান যে ব্যয় করে তার সমষ্টিকে প্রকাশ্য ব্যয় বলে।

প্রশ্ন-৩৮.অপ্রকাশ্য ব্যয় কাকে বলে? 

উত্তর: উদ্যোক্তার নিজের শ্রমের মূল্য, অন্যান্য ব্যয় ও নিয়োজিত সম্পদের খরচকে অপ্রকাশ্য ব্যয় বলে।

প্রশ্ন-৩৯. প্রকৃত উৎপাদন ব্যয় কী? 

 উত্তর: যে বায়কে অঙ্কে পরিমাপ করা যায় না এবং যা একটি মানবিক ধারণা তাই হলো প্রকৃত উৎপাদন ব্যয়

প্রশ্ন-৪০. ব্যক্তিগত ব্যয় কী?

 উত্তর: ব্যক্তিগত ব্যয় হচ্ছে (ব্যক্তিমালিকানাধীন ফার্মের) উৎপাদনের সাথে জড়িত সব ধরনের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ব্যয়ের যোগফল।

প্রশ্ন-৪১. সামাজিক ব্যয় কী? 

 উত্তর: উৎপাদন বা ভোগ করতে গেলে উৎপাদন প্রক্রিয়ার বাইরে সমাজের নানা ব্যক্তির অনেক সময় ক্ষতিপূরণ দিতে যে অর্থের প্রয়োজন পড়ে তাই সামাজিক ব্যয়।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. উৎপাদন কী ধরনের উপযোগ সৃষ্টি করে?

উত্তর: উৎপাদন- রূপগত, স্থানগত, সময়গত, সেবাগত ও মালিকানাগত উপযোগ সৃষ্টি করে ।দ্রব্যের রূপ পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন দ্রব্য উৎপাদন করাকে রূপগত উপযোগ বলে। কোনো কোনো দ্রব্যের স্থান পরিবর্তনের ফলে এর উপযোগ বৃদ্ধি পায়। এটি স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি করে। মানুষ তার সেবা দ্বারা যে উপযোগ সৃষ্টি করে তাকে সেবাগত উপযোগ বলে। আর মালিকানা পরিবর্তনের ফলে দ্রব্যের উপযোগ বৃদ্ধি পেলে তাকে মালিকানাগত উপযোগ বলে। 

প্রশ্ন-২.রূপগত উপযোগ বলতে কী বোঝ?

 উত্তর: কোনো দ্রব্যের রূপ বা আকৃতি পরিবর্তন করে যে উপযোগ সৃষ্টি হয় তাকে ৰূপগত উপযোগ বলা হয়।যেমন— তুলার রূপ পরিবর্তন করে বস্ত্র, কাঠকে সুবিধামতো পরিবর্তন করে খাট, চেয়ার, টেবিল বানানো হয়। খাট, চেয়ার, টেবিল হলো রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করা হয়।

প্রশ্ন-৩. বাঁশ থেকে ঝুড়ি তৈরি কোন ধরনের উপযোগ? ব্যাখ্যা দাও।

উত্তর: বাঁশ থেকে ঝুড়ি তৈরি রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করে।দ্রব্যের রূপ বা আকৃতি পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন দ্রব্য উৎপাদন করাই রূপগত উপযোগ। যেমন: নির্দিষ্ট আকারে বাঁশ কেটে তা দিয়ে ঝুড়ি তৈরি করা হয় । এতে বাঁশের রূপ পরিবর্তন হয়।

প্রশ্ন-৪. কীভাবে মালিকানাগত উপযোগ সৃষ্টি হয়? 

উত্তর: যেসব অর্থনৈতিক দ্রব্য ও সেবার মালিকানা পরিবর্তন করে যে অতিরিক্ত উপযোগ সৃষ্টি করা হয় তাকে মালিকানাগত উপযোগ বলে। | অব্যবহৃত জমি কিনে নিয়ে একজন কৃষক চাষাবাদ করে উৎপাদন করতে পারে । অথবা ব্যবহৃত জমি কিনে আরো ভালোভাবে চাষাবাদের মাধ্যমে -উৎপাদন বাড়াতে পারে। এভাবে মালিকানা পরিবর্তন করে অতিরিক্ত উৎপাদন তথা মালিকানাগত উৎপাদন সৃষ্টি হয় ।

প্রশ্ন-৫. সময়গত উপযোগ কী? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: সময়ের ব্যবধানের ফলে, যে অতিরিক্ত উপযোগ সৃষ্টি হয় তাকে।সময়গত উপযোগ বলে।যেমন- পৌষ-মাঘ মাসে ধানের মৌসুমে সরবরাহ বেশি হয়। এই সময়ে ধানের দাম কম থাকে। এ সময়ে ধান মজুত করে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে বিক্রি করলে বেশি দাম পাওয়া যায়। অর্থাৎ সময়গত উপযোগ বলতে সময়ের ব্যবধানে কোনো দ্রব্যের উপযোগ বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বোঝায়। 

প্রশ্ন-৬. সাগর থেকে মাছ ধরে শুঁটকি তৈরি কোন ধরনের উপযোগ? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: সাগর থেকে মাছ ধরে শুঁটকি তৈরি করা রূপগত উপযোগ দ্রব্যের রূপ পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন দ্রব্য উৎপাদন করাকে রূপগত উপযোগ বলে। যেমন, কাঠকে সুবিধামতো পরিবর্তন করে খাট, চেয়ার, টেবিল বানানো হয়। খাট, চেয়ার, টেবিল হলো রূপগত উৎপাদন। তেমনি সাগর থেকে মাছ ধরে শুঁটকি তৈরি করা হলো রূপগত উপযোগ । 

প্রশ্ন-৭. উপযোগ সৃষ্টির প্রক্রিয়া কী?

উত্তর: উপযোগ সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি হলো উৎপাদন।উপকরণ বা প্রাথমিক দ্রব্য ব্যবহার করে নতুন কোনো দ্রব্য বা উপযোগ, সৃষ্টি করাকে উৎপাদন বলে। অর্থাৎ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উপকরণ বা প্রাথমিক দ্রব্য থেকে নতুন উপযোগ সৃষ্টি করা হয়। বিভিন্নভাবে উপযোগ সৃষ্টি করা যায়। যেমন: উপকরণের রূপগত পরিবর্তন সাধন, দ্রব্যের স্থান ও মালিকানা পরিবর্তন প্রভৃতি।

প্রশ্ন-৮.কাঠ দিয়ে খাট তৈরি কোন ধরনের উপযোগ সৃষ্টি করে?

উত্তর: কাঠ দিয়ে খাট তৈরি রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করে।দ্রব্যের রূপ পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন দ্রব্য উৎপাদন করাকে রূপগত উপযোগ বলে। যেমন- কাঠকে সুবিধামতো পরিবর্তন করে খাট, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি বানানো। কাঠ থেকে যে পরিমাণ উপযোগ পাওয়া যেত কাঠের আকার পরিবর্তনের মাধ্যমে তার চেয়ে বেশি উপযোগ পাওয়ায় যায় ।

প্রশ্ন-৯. সেবাগত উপযোগ কী? ব্যাখ্যা করো। 

 উত্তর: মানুষ তার শ্রম ও সেবা কর্মের মাধ্যমে যে উপযোগ সৃষ্টি করে তাকে সেবাগত উপযোগ বলে।গ্রাহক যখন সেবা পেরে তৃপ্ত বা সন্তুষ্ট হয় তখন সেবাগত উপযোগ সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে সেবা দাতা তার সেবার মালিকানা হস্তান্তর না করে অভাব পূরণ করে। পণ্যের মতো সেবাগত উপযোগের বিনিময় মূল্য রয়েছে । উদাহরণস্বরূপ ডাক্তারের চিকিৎসা, শিক্ষকের পাঠদান, আইনি পরামর্শ গ্রহণ সেবাগত উপযোগ।

প্রশ্ন-১০.অর্থনীতিতে ভূমি বলতে কী বোঝায়?

 উত্তর: উৎপাদনে সাহায্য করে এমন সব প্রাকৃতিক সম্পদকে অর্থনীতিতে ভূমি বলে ।ভূমি প্রকৃতির দান। এটি মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না। জমি, মাটি, মাটির উর্বরাশক্তি, খনিজ দ্রব্য, বনজ ও জলজ সম্পদ, সূর্যকিরণ, বৃষ্টিপাত, আবহাওয়া প্রভৃতি সব রকম প্রাকৃতিক সম্পদ ভূমির অন্তর্গত। 

প্রশ্ন-১১. কলম তৈরিতে উৎপাদন উপকরণগুলোর নাম লেখো।

উত্তর: কলম তৈরিতে উৎপাদনের চারটি উপকরণ অর্থাৎ ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠনের সম্মিলিত প্রয়াস আবশ্যক।কলম তৈরির একটি উপকরণ হলো কার্বন। এটি খনিজ সম্পদ থেকে পাওয়া যায়। যা ভূমি হিসেবে গণ্য। এরপর এটি তৈরি করতে শ্রমিকের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়। কলম উৎপাদন করতে যে যন্ত্রপাতির ব্যবহার প্রয়োজন তা অর্থনীতির ভাষায় মূলধন নামে পরিচিত। সর্বশেষে এসব উপকরণগুলোর সমন্বয়সাধন বা তদারকির জন্য প্রয়োজন হয় সংগঠনের।

প্রশ্ন-১২.মূলধনকে উৎপাদনের উৎপাদিত উপকরণ বলা হয় কেন?

উত্তর: মূলধন ভোগ না করে নতুন দ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহার করা হয় বলে একে উৎপাদনের উৎপাদিত উপকরণ বলা হয়।মূলধন এমন এক সম্পদকে নির্দেশ করে, যা মনুষ্য-সৃষ্ট, প্রকৃতি প্রদত্ত নয়। যেমন- যন্ত্রপাতি, কলকারখানা, কাঁচামাল ইত্যাদি হলো মূলধন। এগুলো সরাসরি ভোগযোগ্য নয়; বরং এগুলো নতুন উৎপাদনে সহায়তা করে। তাই। উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীসহ অর্থের মূলধন হিসেবে বিবেচিত হয়, যা নতুন উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত করা। হয়। এ কারণে মূলধনকে উৎপাদনের উৎপাদিত উপকরণ বলা হয়।

প্রশ্ন-১৩.“শ্রমিক শ্রম বিক্রয় করে, নিজেকে নয়” ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: শ্রমিক মজুরির বিনিময়ে তার শ্রম বিক্রয় করে।শ্রম উৎপাদনের একটি জীবন্ত উপকরণ। শ্রমিকের মধ্যেই শ্রম দানের ক্ষমতা নিহিত থাকে। শ্রমিক ও শ্রমকে বিচ্ছিন্ন করা উপায় নেই। যেমন: একটি পশু ক্রয় করলে তার মালিক হওয়া যায়। কিন্তু মজুরির বদলে একজন শ্রমিকের সেবাই নেওয়া যায় কিন্তু তার দেহ ও মনের ওপর অধিকার জন্মায় না। সুতরাং, শ্রমিক শ্রম বিক্রয়া করে নিজেকে নয় ।

প্রশ্ন-১৪, মূলধন ব্যতীত উৎপাদন সম্ভব নয় কেন?

উত্তর: উৎপাদনের পরিমাণ প্রকৃতপক্ষে মূলধনের ওপরে নির্ভর করে বলে মূলধন ছাড়া উৎপাদন সম্ভব নয়।উৎপাদনের মৌলিক উপকরণ চারটি। যেমন: ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন। এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটির অভাব হলে উৎপাদন সম্ভব নয়। উদাহরণস্বরূপ— একজন সংগঠকের ভূমি ও শ্রম আছে। কিন্তু মূলধন (যেমন- যন্ত্রপাতি, বীজ) নেই। তাহলে সে কোনো দ্রব্যই উৎপাদন করতে পারবে না। মূলধন ছাড়া ভূমি এবং শ্রমকে সম্পূর্ণরূপে উৎপাদন কাজে নিয়োজিত করা যায় না। তাই বলা যায়, মূলধন ব্যতীত উৎপাদন সম্ভব নয় । 

প্রশ্ন-১৫. উৎপাদনের কোন উপাদানকে উদ্যোক্তা বলে এবং কেন?

উত্তর: উৎপাদনের চতুর্থ উপাদান সংগঠনকে উদ্যোক্তা বলা হয়। উৎপাদন ক্ষেত্রে ভূমি শ্রম ও মূলধন ও সমন্বয় করে উৎপাদন পরিচালনা করাই হলো সংগঠন। যে ব্যক্তি এ কাজটি সম্পাদন করে থাকেন তাকে সংগঠক বলা হয়। আর সংগঠকই উৎপাদনের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সব কাজের দায়িত্ব নেন তাই তাকে উদ্যোক্তাও বলে।

প্রশ্ন-১৬. বৃষ্টিপাত কোন ধরনের উপকরণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: বৃষ্টিপাত হলো উৎপাদনের ভূমি উপকরণ। | উৎপাদনে সাহায্য করে এমন সব প্রাকৃতিক সম্পদকে ভূমি বলে। যেমন: মাটি, খনিজ দ্রব্য, সূর্য কিরণ, আবহাওয়া প্রভৃতি সব রকম প্রাকৃতিক সম্পদ ভূমির অন্তর্ভুক্ত। তেমনি বৃষ্টিপাত একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। এটি উৎপাদনে সাহায্য করে। তাই এটি উৎপাদনের ভূমি উপকরণের অন্তর্ভুক্ত। 

প্রশ্ন-১৭.বাংলাদেশে উৎপাদন ব্যবস্থায় মূলধনের তুলনায় ভূমি ও শ্রমের গুরুত্ব বেশি কেন? ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: বাংলাদেশের উৎপাদন ব্যবস্থা শ্রমনিবিড় বলে মূলধনের তুলনায় ভূমি ও শ্রমের গুরুত্ব বেশি।বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান ও জনবহুল দেশ। দেশের জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় কম খরচে শ্রমিক পাওয়া যায়। মূলধন স্বল্পতার কারণে ভূমি ও শ্রমিক ব্যবহার করে উৎপাদন কাজ পরিচালিত হয়। তাই বাংলাদেশের উৎপাদন ব্যবস্থায় মূলধনের তুলনায় ভূমি ও শ্রমের গুরুত্ব বেশি।

প্রশ্ন-১৮.জাপানে ভূমি ও শ্রমের তুলনায় মূলধনের গুরুত্ব বেশি কেন? ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: উৎপাদন ব্যবস্থা মূলধন নিবিড় হওয়ায় জাপানে ভূমি ও শ্রমের তুলনায় মূলধনের গুরুত্ব বেশি।জাপানে ভূমির পরিমাণ তুলনামূলক কম এবং শ্রমের চাহিদা কম। উৎপাদন বৃদ্ধি করতে জাপান মূলধন নিবিড় দ্রব্যে বিনিয়োগ করে থাকে। প্রযুক্তিগত , স্বনির্ভরতা কাজে লাগিয়ে মূলধন নিবিড় দ্রব্যের উৎপাদন বেশি করে। তাই, জাপানে ভূমি ও শ্রমের তুলনায় মুলধনের গুরুত্ব বেশি।

প্রশ্ন-১৯.কর্তব্য বণ্টন বলতে কী বোঝায়?

 উত্তর: উৎপাদনক্ষেত্রে কর্মীর দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের ভার অর্পণ করাকে কর্তব্য বণ্টন বলে।উৎপাদনক্ষেত্রে প্রতিটি কর্মীকে একটি নির্দিষ্ট কাজের ভার অর্পণ করা হয়। অভিজ্ঞতা, দক্ষতা অনুসারে প্রতিটি বিভাগে ও উপবিভাগের কর্মীকে সুনির্দিষ্ট কর্তব্য স্থির করে দেওয়া হয়। যে কর্মী যে কাজে অভিজ্ঞ ও দক্ষ | তাকে সেই কাজ দেওয়া হয়। ফলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় ।

প্রশ্ন-২০.উৎপাদনের ক্ষেত্রে সংগঠনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তর: সংগঠন ব্যবস্থাপনা যত সুন্দর তত বেশি হবে।মডেল গালস হাইস্কুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ও সুষ্ঠু হবে, ব্যবসায়ের সাফল্য সংগঠনই হলো ব্যবসায়ের মালিক ও প্রধান বিষয়। তাছাড়া, উৎপাদনের | বিভিন্ন উপকরণ যেমন: ভূমি, শ্রম ও মূলধন সংগ্রহ এবং এদের মধ্যে সমন্বয় করে থাকে সংগঠন। সত্যিকার অর্থে, সংগঠন ছাড়া উৎপাদন ও ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা প্রায় অসম্ভব। অর্থাৎ সংগঠনই হচ্ছে ব্যবসা বা উৎপাদনের মূল ভিত্তি। তাই উৎপাদন ক্ষেত্রে সংগঠনের ভূমিকা অপরিসীম।

 প্রশ্ন-২১. সংগঠনকে সমন্বয়কারী বলা হয় কেন?

উত্তর: উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণ একত্র করে সংগঠক উৎপাদন কাজ পরিচালনা করেন বলে, তাকে সমন্বয়কারী বলা হয়।সংগঠন উৎপাদনের চতুর্থ উপাদান। এর মাধ্যমে উৎপাদনের উপাদানগুলোকে একত্র ও সমন্বয় করা হ্যাঁ। প্রকৃতপক্ষে সংগঠক উৎপাদনের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে নীতি নির্ধারণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পাশাপাশি উৎপাদন কাজের তত্ত্বাবধান ও ঝুঁকি গ্রহণ প্রভৃতি দায়িত্ব সম্পাদন করেন। এসব কাজ সম্পাদনের জন্য সংগঠককে সমন্বয়কারী বলে।

প্রশ্ন-২২. ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদনবিধি কাকে বলে?

উত্তর: ভোগের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে প্রান্তিক উপযোগ কমে যাওয়ার প্রবণতাকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদনবিধি বলে।মনে করি, ভূমি ও শ্রম দুটি উপকরণ আছে। উৎপাদনক্ষেত্রে ভূমিকে স্থির রেখে শ্রমের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করা হলে মোট উৎপাদন প্রথম পর্যায়ে ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পায় এবং পরে ঐ জমিতে আরও শ্রম নিয়োগ করা হলে মোট উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে। উপকরণ ব্যবহারের সাথে উৎপাদন বাড়ার এ নিয়মকে অর্থনীতিতে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদনবিধি বলা হয়।

প্রশ্ন-২৩. মোট উৎপাদন (TP) বলতে কী বোঝায়? 

 উত্তর: নির্দিষ্ট পরিমাণ উপকরণ ব্যবহার করে একটি ফার্ম যে পরিমাণ দ্রব্য উৎপাদন করে তাকে মোট উৎপাদন বলে।ধারণাটি ব্যাখ্যার জন্য একটি উদাহরণ দেওয়া যায়। যেমন, ১ম, ২য় ও ৩য় একক শ্রম নিয়োগ করলে যদি উৎপাদন যথাক্রমে ১০ একক, ৯ একক ও ৮ একক পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে TP ১০ একক + ৯ একক + ৮ একর = ২৭ একক হয়। সাধারণভাবে মোট উৎপাদনকে TP দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

প্রশ্ন-২৪. প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হয় কেন ?

উত্তর: উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অন্যান্য উপকরণ স্থির রেখে একটি উপকরণ বৃদ্ধি করা থাকলে মোট উৎপাদন এক পর্যায়ে ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে তাই প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হয় ।উৎপাদনের প্রথম দিকে শ্রমের পরিমাণ কম থাকায় প্রান্তিক শ্রম বাড়লে তার জন্য উৎপাদন পর্যাপ্ত থাকে। কিন্তু উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ক্রমাগত বেশি পরিমাণ উপকরণ নিয়োগ করলে প্রান্তিক উৎপাদন কমে যায়। এর কারণে প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হয়।

প্রশ্ন-২৫.প্রান্তিক উৎপাদন বলতে কী বোঝায়?

উত্তর:অতিরিক্ত এক একক উপকরণ নিয়োগের ফলে যে অতিরিক্ত উৎপাদন পাওয়া যায় তাকে প্রান্তিক উৎপাদন বলে।প্রান্তিক উৎপাদন মূলত উপকরণের সর্বশেষ একক থেকে প্রাপ্ত উৎপাদনের পরিমাণ। উদাহরণস্বরূপ, কোনো উৎপাদনক্ষেত্রে শ্রমিকের সংখ্যা ১০ জন থেকে ১১ জনে উন্নীত করায় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ মণ, থেকে ৩২ মণ হয় । তাহলে এক্ষেত্রে প্রান্তিক উৎপাদন হলো (৩২–৩0 ) = ২

প্রশ্ন-২৬. মোট উৎপাদন ও গড় উৎপাদনের পার্থক্য দেখাও।

উত্তর: মোট উৎপাদন ও গড় উৎপাদনের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। মোট উৎপাদন হলো একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ উপকরণ ব্যবহার করে উৎপাদিত মোট আউটপুটের পরিমাণ, যেখানে গড় উৎপাদন হলো প্রতি ইউনিট উপকরণ ব্যবহার করে উৎপাদিত গড় আউটপুট।বিভিন্ন উপকরণ নিয়োগের দ্বারা যে উৎপাদন পাওয়া যায় তা মোট উৎপাদন। আর মোট উৎপাদনের পরিমাণকে মোট উপকরণ দ্বারা ভাগ করলে গড় উৎপাদন পাওয়া যায়। মোট উৎপাদন সাধারণত সবউপকরণ থেকে প্রাপ্ত উৎপাদনের সমষ্টি। আর গড় উৎপাদন উপকরণ প্রতি উৎপাদন। গড় উৎপাদন মোট উৎপাদনের ওপর নিজকরে । কিন্তু মোট উৎপাদন গড় উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে না।

প্রশ্ন-২৭.অপ্রকাশ্য ব্যয় কেন হিসাবের বইয়ে লেখা থাকে না? ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: উদ্দ্যোক্তার নিজের শ্রমের মূল্য, অন্যান্য ব্যয় ও স্বনিয়োজিত সম্পদের খরচকে অপ্রকাশ্য ব্যয় বলে।অপ্রকাশ্য ব্যয় দৃশ্যমান থাকে না। তাই এ ব্যয় ফার্মের হিসাব বইয়ে থাকে না। নিজের বাড়িতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কারখানা স্থাপন, অি বানানো ইত্যাদি অপ্রকাশ্য বায়।

 প্রশ্ন-২৮. প্রকৃত উৎপাদন ব্যয় বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: উৎপাদনের যে সকল উপকরণের ব্যয় আর্থিক মূল্যে হিসাব যায় না তাকে প্রকৃত উৎপাদন ব্যয় বলে।প্রকৃত উৎপাদন ব্যয় একটি মানসিক ধারণা। এটিকে টাকার অে পরিমাপ করা যায় না। যেমন- একজন লেখক বই লেখার সময় আরাম, আনন্দ, বিশ্রাম, ঘুম ইত্যাদি ত্যাগ করে থাকেন। আবার শ্রমিক শ্রম জোগান দিতে বিশ্রাম ও আরাম ত্যাগ করেন। এ ধরনের ব্যয়রে সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকৃত উৎপাদন ব্যয় বলে ।

প্রশ্ন-২৯. প্রকাশ্য ব্যয় বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: কোনো উৎপাদনী প্রতিষ্ঠান ভাড়া বা উপকরণ ক্রয়ের জ দৃশ্যমান যে ব্যয় করে তার সমষ্টিকে প্রকাশ্য ব্যয় বলে ।উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মরত কর্মচারীর বেতন ও ভাতাদি, কাঁচামাল, মাধ্যমিক দ্রব্য ক্রয়ের জন্য ব্যয় করে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের স্থির ব্যয় যেমন: বাড়ি ভাড়া, মূলধনের সুদ ইত্যাদি ব্যয় বহন করে। দৃশ্যমান এ সব ব্যয়কেই প্রকাশ্য ব্যয় বলে।

প্রশ্ন-৩০.অপ্রকাশ্য ব্যয় বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: উদ্যোক্তার নিজের শ্রমের মূল্য, অন্যান্য ব্যয় ও স্বনিয়োজিত সম্পদের খরচকে অপ্রকাশ্য ব্যয় বলে।নিজের বাড়িতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কারখানা স্থাপন, অফিস বানানো ইত্যাদি অপ্রকাশ্য ব্যয়। অপ্রকাশ্য ব্যয় ফার্মের হিসাব বইতে থাকে না। ব্যক্তি মালিকানাধীন ফার্মের ক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজের বেতন পৃথকভাবে হিসাবে না করে। মুনাফাকে তার সেবার পারিশ্রমিক হিসাবে গণনা করে। এক্ষেত্রে মালিকের যে কোনো রকমের ভাতাদি অপ্রকাশ্য বায় হিসেবে বিবেচিত হয়।

প্রশ্ন-৩১.ব্যক্তিগত ব্যয় বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: ব্যক্তিগত ব্যয় হচ্ছে উৎপাদনের সাথে জড়িত সব ধরনের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ব্যয়ের যোগফল।কোনো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভাড়া বা উপকরণ ক্রয়ের জন্য দৃশ্যমান যে ব্যয় করে তাকে প্রকাশ্য ব্যয় বলে। যেমন- ফার্মে কর্মরত মানুষের বেতন ও ভাতাদি, কাঁচামাল, মাধ্যমিক দ্রব্য ক্রয়ের জন্য ব্যয়, বাড়ি ভাড়া, মূলধনের সুদ ইত্যাদি হলো প্রকাশ্য ব্যয়। আর উদ্যোক্তার নিজের শ্রমের মূল্য, স্ব-নিয়োজিত সম্পদের ব্যয় ও উদ্যোক্তার আনুষঙ্গিক ব্যয় | ইত্যাদি হলো অপ্রকাশ্য ব্যয়। এই সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ব্যয়ের সমষ্টিই হলো ব্যক্তিগত বায়।

প্রশ্ন-৩২.সামাজিক ব্যয় বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: উৎপাদন বা ভোগ প্রক্রিয়ার বাইরে সমাজের অন্যান্য ব্যক্তি | ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। তাই সামাজিক ব্যয়।কোনো দ্রব্য উৎপাদন বা ভোগ করতে গেলে সমাজের নানা ব্যক্তি অনেক সময় পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে গেলে যে অর্থের প্রয়োজন পড়ে সেই অর্থের পরিমাণই হলো সামাজিক ব্যয় । যেমন: ট্যানারি শিল্পের এলাকার ২০ জন লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে তাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ কোটি টাকা দেওয়া হলো । এই ২ কোটি টাকা হলো সামাজিক ব্যয়।


              

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url