উপযোগ, চাহিদা, যোগান ও ভারসাম্য সাজেশন

 তৃতীয় অধ্যায় : উপযোগ, চাহিদা, যোগান ও ভারসাম্য

১০০% কমন সাজেশন

আমাদের  ওয়েবসাইট “অর্ডিনেট আইটি.কম” ও  চ্যানেল ”অর্ডিনেট ক্লাসরুম  ”আপনাদের  স্বাগতম । 
আমরা একটি ভিন্ন প্রজন্মের স্বপ্ন দেখি। আমরা অধিক চিন্তাশীল প্রজন্ম গড়তে চাই, আলাদা মানুষ যাদের আগে চিন্তা করার অভ্যাস থাকবে। আমরা মানুষ কেন? কারণ আমরা চিন্তা করি, এবং সেই চিন্তাকে মুক্তচিন্তা হতে হবে। আর মুখস্থ করে আর যা ই হোক, বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে না। আর সেই প্রচেষ্টারই অংশ হল আমাদের কনটেন্ট ও ভিডিও লেকচার। এই কনটেন্ট ও  ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বিষয় এমনভাবে শেখানোর চেষ্টা করা যাতে আপনি বইয়ের বাইরেও অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আর আপনি যখন চিন্তাশীল মানুষ হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝবেন এই দেশকে আলাদা করতে আমাদের কী করতে হবে, কতদূর যেতে হবে।



১.উপযোগ কাকে বলে?

উত্তর : কোনো দ্রব্য বা সেবার দ্বারা মানুষের অভাব পূরণের ক্ষমতাকে উপযোগ বলে ।

২.প্রান্তিক উপযোগ কাকে বলে?

উত্তর : একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো একটি দ্রব্যের অতিরিক্ত এক একক ভোগ করে একজন ভোক্তা যে অতিরিক্ত পরিমাণ উপযোগ লাভ করে তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে।

৩.ক্রমহ্রাসমান উপযোগ বিধিটি কী?

উত্তর : ভোক্তা কোনো একটি দ্রব্য যত বেশি ভোগ করে তার কাছে ঐ দ্রব্যের প্রান্তিক উপযোগ তত কমে যেতে থাকে। ভোগের মোট পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে প্রান্তিক উপযোগ কমে যাওয়ার এ প্রবণতাকে ক্রমহ্রাসমান' প্রান্তিক উপযোগ বিধি বলে।

৪.মোট উপযোগ কাকে বলে?

উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি দ্রব্যের বিভিন্ন একক থেকে প্রাপ্ত উপযোগের সমষ্টিকে মোট উপযোগ বলে ।

৫.ভোক্তা কাকে বলে?

উত্তর : কোনো অবাধ সহজলভ্য দ্রব্য ছাড়া অন্যসব দ্রব্য ভোগ করার জন্য যে ব্যক্তি অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত থাকে তাকে ভোক্তা বলে।

৬.ভোগ কাকে বলে? 

উত্তর : মানুষের অভাব পূরণের জন্য কোনো দ্রব্যের উপযোগকে নিঃশেষ করাকে ভোগ বলে।

৭.ভারসাম্য দাম কাকে বলে?

উত্তর : যে দামে চাহিদা ও যোগান পরস্পর সমান হয় তাকে ভারসাম্য দাম। বলে।

৮.চাহিদা কাকে বলে? 

উত্তর : ক্রেতার একটি পণ্য নির্দিষ্ট সময়ে কেনার আকাঙ্ক্ষা, সামর্থ্য এবং নির্দিষ্ট মূল্যে দ্রব্যটি ক্রয় করার ইচ্ছা থাকলে তাকে অর্থনীতিতে চাহিদা বলে।

৮. চাহিদা বিধি কী?

উত্তর : কোনো দ্রব্যের দামের সাথে তার চাহিদার পরিমাণের সম্পর্ক যে বিধির সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হয় তাকে চাহিদা বিধি বলে।

৯.চাহিদার শর্ত কয়টি?

উত্তর : চাহিদার শর্ত তিনটি ।

১০. বাজার চাহিদা কী?

উত্তর : বাজারে নির্দিষ্ট দামে সব ভোক্তার ব্যক্তিগত বা ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ চাহিদার সমষ্টিকে বলা হয় বাজার চাহিদা।

১১. যোগান কাকে বলে? 

উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট দামে কোনো বিক্রেতা নির্দিষ্ট পণ্যের যে পরিমাণ বিক্রয় করতে প্রস্তুত থাকে তাকে যোগান বলে।

 ১২. অর্থনীতিতে যোগান বলতে কী বোঝ?

উত্তর : অর্থনীতিতে যোগান বলতে একজন বিক্রেতা কোনো একটি দ্রব্যের যে পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট দামে বেচার উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে আসে তাকে বোঝায়।

১৩. যোগান সূচি কী?

উত্তর : দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগানের পরিমাণ বাড়ে, দাম কমলে যোগানের পরিমাণ কমে। দাম পরিবর্তনের ফলে যোগানের এ. সমমুখী পরিবর্তনকে যে ছকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় তাই যোগান সূচি।

১৪. যোগান রেখা কাকে বলে?

উত্তর : কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগান বাড়ে দাম কমলে যোগান কমে। দাম পরিবর্তনের ফলে যোগানের এ সমমুখী পরিবর্তনকে যখন রেখাচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয় তখন তাকে যোগান রেখা বলে । 

১৫. ব্যক্তিগত যোগান কী?

অথবা, 

ব্যক্তিগত যোগান সূচি কী?

 উত্তর : একটি নির্দিষ্ট সময়ে একজন বিক্রেতা বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের যে বিভিন্ন পরিমাণ দ্রব্য যোগান দেন তাকে ব্যক্তিগত যোগান বা ব্যক্তিগত যোগান সূচি বলে ।

১৬. কখন প্রান্তিক উপযোগ শূন্য হয়?

উত্তর : মোট উপযোগ সর্বোচ্চ হলে প্রান্তিক উপযোগ শূন্য হয়।

১৭. অতিরিক্ত এক একক ভোগের জন্য যে অতিরিক্ত উপযোগ সৃষ্টি হয় তাকে কী বলে?

উত্তর : অতিরিক্ত এক একক ভোগের জন্য যে অতিরিক্ত উপযোগ সৃষ্টি হয় প্রান্তিক উপযোগ বলে ।

১৮. চাহিদা সংকোচন কী?

উত্তর : অন্যান্য বিষয় (ক্রেতার আয়, ক্রেতার রুচি, সময়) অপরিবর্তিত অবস্থায় শুধু দ্রব্যটির নিজের দাম বাড়লে চাহিদা কমে একে চাহিদার সংকোচন বলে।

১৯. ভেবলেন দ্রব্য কী?

উত্তর : যে সব পণ্য মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করে, দেখতে জাঁকজমকপূর্ণ এসব দ্রব্যকে ভেবলেন দ্রব্য বলা হয়।

২০. গিফেন দ্রব্য কী?

উত্তর : যে দ্রব্যের ক্ষেত্রে দাম কমলে তার চাহিদা কমে এবং দাম বাড়লে তার চাহিদা বাড়ে তাকে গিফেন দ্রব্য বলে।

২১. ভারসাম্য পরিমাণ কী?

উত্তর : ভারসাম্য দামে যে পরিমাণ কেনা-বেচা হয় তাকে ভারসাম্য পরিমাণ বলে।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. উপযোগ বলতে কী বোঝায়? 

উত্তর : সাধারণত উপযোগ বলতে কোনো দ্রব্যেও উপকারিতাকে বুঝোয়। কিন্তু অর্থনীতিতে উপযোগ একটি বিশেষে অর্থ বহন করে। অর্থাৎ, কোনো দ্রব্য বা সেবার দ্বারা মানুষের অভাব পূরণের ক্ষমতাকে উপযোগ বলে।দ্রব্য বা সেবা যা-ই হোক না কেনো, মানুষের অভাব পরণ করতে পারে তা উপযোগ বলে মনে করা হবে। যেমন: খাদ্য, বস্ত্র, কলম, কাগজ ইত্যাদি।

প্রশ্ন-২. মোট উপযোগ ও প্রান্তিক উপযোগ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : মোট উপযোগ : একটি নির্দিষ্ট সময়ে একজন ভোক্তা কোনো একটি দ্রব্যের বিভিন্ন একক ভোগ করে যে পরিমাণ উপযোগ লাভ করে তার সমষ্টিকে মোট উপযোগ বলে। যেমন- কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একজন ভোক্তা যদি পর পর ৩টি আম ভোগ করে এবং ১ম, ২য় ও ৩য় আম থেকে যথাক্রমে ৫, ৪ ও ৩ টাকার সমান উপযোগ পায়, তবে মোট উপযোগ হবে (৫ + ৪ + ৩) = ১২ টাকার সমান। প্রান্তিক উপযোগ : একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো একটি দ্রব্যের অতিরিক্ত এক একক ভোগ করে একজন ভোক্তা অতিরিক্ত যে পরিমাণ উপযোগ লাভ করে তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে। ধরা যাক, একজন ভোক্তা ২ একক পাকা আম ভোগ করে ৯ টাকার সমান উপযোগ পায়।এখন, ৩য় একক ভোগ করার ফলে যদি উপযোগ বেড়ে ১২ টাকার সমান হয় তবে প্রান্তিক উপযোগ হবে (১২ টাকা – ৯ টাকা) = ৩ টাকার সমান।

প্রশ্ন-৩. চাহিদা বিধি কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কোনো দ্রব্যের দামের সাথে তার চাহিদার পরিমাণের বিপরীত সম্পর্ক যে বিধির সাহায্যে প্রকাশ করা হয় তাকে চাহিদা বিধি বলে। চাহিদা বিধি বলতে আমরা বুঝি, 'অন্যান্য অবস্থা (ভোক্তার আয়, রুচি ও অভ্যাস, বিকল্প দ্রব্যের দাম সময়) অপরিবর্তিত থেকে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে দ্রব্যের দাম কমলে তার চাহিদার পরিমাণ বাড়ে এবং দাম বাড়লে চাহিদার পরিমাণ কমে। যেমন- কোনো দ্রব্যের প্রতি এককের দাম ১০ টাকা হলে একজন ভোক্তা B একক দ্রব্য ক্রয় করে। দাম কমে যথাক্রমে ৮ টাকা, ৬ টাকা এবং ৪ টাকা হলে চাহিদা বেড়ে যথাক্রমে ৬, ৮, ১০ একক হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায় দ্রব্যের দাম ও চাহিদার পরিমাণের সাথে বিপরীত সম্পর্ক যা চাহিদা বিধিতে প্রকাশ পায় ।

প্রশ্ন-৪. চাহিদা রেখা ডানদিকে নিম্নগামী কেন? ব্যাখ্যা কর।

 উত্তর : দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে বিপরীতমুখী সম্পর্কের কারণে চাহিদা রেখাটি ডানদিকে নিম্নগামী হয় । চাহিদা বিধিতে অন্যান্য অবস্থা তথা ভোক্তার আয়, রুচি ও অভ্যাস, সম্পর্কিত দ্রব্যের দাম, ক্রেতার সংখ্যা ইত্যাদি স্থির ধরে নিয়ে দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক প্রকাশ পায়। অর্থাৎ, কোনো দ্রব্যের দাম কমলে তার চাহিদা বাড়ে এবং দাম বাড়লে চাহিদা কমে। দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে এ রকম বিপরীত সম্পর্ক বলেই চাহিদা রেখাটি ডানদিকে নিম্নগামী হয় । 

প্রশ্ন-৫. বাজার চাহিদা বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : বাজারে সব ভোক্তার ব্যক্তিগত চাহিদার সমষ্টিকে বলা হয় বাজার চাহিদা। একজন ব্যক্তির চাহিদাসূচি থেকে যেমন ব্যক্তিগত চাহিদা রেখা অঙ্কন করা যায়,ঠিক তেমনি সমস্ত ক্রেতার ব্যক্তিগত চাহিদা যোগ করে বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন করা সম্ভব । উদাহরণস্বরূপ কোনো বাজারে যদি দুইজন ক্রেতা থাকে এবং পণ্যের দাম ২ টাকা হয় এবং তাদের চাহিদা যদি যথাক্রমে ১৫ ও ২০ একক হয় তাহলে বাজার চাহিদা হবে (১৫ + ২০) = ৩৫ একক। এভাবে বাজার চাহিদাসূচি তৈরি করা সম্ভব এবং তা দ্বারা বাজার চাহিদা রেখা আঁকা যায়।

প্রশ্ন-৬. যোগান রেখা ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয় কেন?

উত্তর : দ্রব্যের দামের সাথে যোগানের সমমুখী সম্পর্ক রয়েছে এবং এ সমমুখী ■ সম্পর্কের জন্যই যোগান রেখা বামদিক থেকে ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয়। যোগান রেখা ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হওয়ার কারণ হলো— যোগান বিধি অনুসারে কোনো দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে যোগান বৃদ্ধি পায় এবং মূল্য কমে গেলে যোগান কম হয়। যোগান বিধির এরূপ একমুখী সম্পর্কের জন্যে যোগান রেখা ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয়।

প্রশ্ন-৭. ভোগ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : অর্থনীতিতে মানুষের অভাব পূরণের জন্য কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করাকে ভোগ বলে। আমরা প্রতিদিন নানা ধরনের পণ্য ভোগ করি। এখানে ভোগ - বলতে এগুলোর নিঃশেষ করাকে বোঝায় না, আমরা শুধু দ্রব্যগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে এর উপযোগ গ্রহণ করতে পারি। অভাব মোচন দ্বারা দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা হলে তাকে ভোগ বলে।.

প্রশ্ন-৮.যোগান সুচি ও যোগান রেখার মধ্যে তফাৎ কী?

উত্তর : যোগান সুচি হলো যোগান বিধির গাণিতিক ছকবদ্ধ রূপ। আর যোগান রেখা হলো যোগান বিধির জ্যামিতিক রূপ। সাধারণত কোনো প্রব্যের দাম বাড়লে যোগানের পরিমাণ বাড়ে এবং দাম কমলে যোগানের পরিমাণ কমে। 
একে যোগান বিধি বলা হয়। যে সূচির মাধ্যমে যোগান বিধি দেখানো হয়, তাকে যোগান সূচি বলে। অন্যদিকে, জ্যামিতিকভাবে যে রেখার মাধ্যমে যোগান বিধি দেখানো হয়, তাকে যোগান রেখা বলে ।

প্রশ্ন-৯.ভারসাম্য দাম বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : যে দামে চাহিদা ও যোগান পরস্পর সমান হয় তাকে ভারসাম্য দাম বলে। বাজারে কোনো দ্রব্যেও ক্রয়-বিক্রয় ক্রেতা-বিক্রেতার দর-কষাকষি চলে। ক্রেতা সর্বোনিম্ন দামে কিনতে চায়। কিন্তু বিক্রেতা সর্বোচ্চ দামে তা বিক্রয় করতে আগ্রহী হয়। এরকম দর-কষাকষির ফলে এমন একটি দামে দ্রব্যটি কেনা-বেচা হয়, যেখানে মোট চাহিদা ও যোগান সমান হয়। আর এই দামই হলো ভারসাম্য দাম ।

প্রশ্ন-১০.চাহিদা বিধি ও যোগান বিধির মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর : চাহিদাবিধি ও যোগানবিধির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। চাহিদাবিধি বলতে বোঝায় অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থেকে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে পণ্যের দাম কমলে তার চাহিদার পরিমাণ বাড়ে এবং দাম বাড়লে চাহিদার পরিমাণ,কমে। অপরদিকে যোগান বিধি বলতে বোঝায় অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে দাম বৃদ্ধি পেলে যোগানের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং দাম হ্রাস পেলে যোগানের পরিমাণ হ্রাস পায়। চাহিদা বিধি অনুযায়ী দেখা যায়, দামের সাথে চাহিদার সম্পর্ক বিপরীতমুখী। কিন্তু দাম ও যোগানের সম্পর্ক সমমুখী । চাহিদাবিধি ও যোগান বিধির মাঝে এসব পার্থক্যই বিদ্যমান।

প্রশ্ন-১১. চাহিদা বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।

 উত্তর : কোনোকিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে চাহিদা বলে। একজন ছাত্রের কলম কেনার আকাঙ্ক্ষা চাহিদা হবে। কিন্তু একজন ভিক্ষুকের গাড়ি কেনা কিংবা কৃপণ ব্যক্তির রসগোল্লা খাওয়ার সখ চাহিদা হবে না। কারণ ভিক্ষুকের গাড়ি কেনার সামর্থ্য নেই। অর্থনীতিতে চাহিদা হতে হলে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়। 
যেমন- 
  • ১. কোনো দ্রব্য পাওয়ার ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা, 
  • ২. ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অধিক সামর্থ্য, 
  • ৩. অর্থ ব্যয় করে দ্রব্যটি ক্রয়ের ইচ্ছা।
সুতরাং, ক্রেতার একটি পণ্য নির্দিষ্ট সময়ে কেনার আকাঙ্ক্ষা, সামর্থ্য এবং নির্দিষ্ট মূল্যে দ্রব্যটি ক্রয় করার ইচ্ছা থাকলে তাকে অর্থনীতিতে চাহিদা বা (Demand) বলে।

প্রশ্ন-১২. ভোগ ও ভোক্তা বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : অর্থনীতিতে মানুষের অভাব পূরণের জন্য কোনো দ্রব্যের উপযোগ গ্রহণ করাকে ভোগ বলা হয়। যেমন- আমরা ভাত, মাছ, কলম, ঘড়ি, জামা-কাপড় এগুলো ভোগ করি । এখানে ভোগ বলতে দ্রব্যগুলো নিঃশেষ করাকে বোঝায় না। বরং দ্রব্যগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে এর উপযোগ নিঃশেষ করাকে বোঝায়।
আবার, কোনো অবাধ সহজলভ্য দ্রব্য ছাড়া অন্য সব দ্রব্য ভোগ করার জন্য যে ব্যক্তি অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত থাকে তাকে ভোক্তা বলা হয়। যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, গাড়ি, তরিতরকারি ইত্যাদির জন্য ব্যক্তিকে অর্থ ব্যয় করতে হয়। 
তাই এক্ষেত্রে ব্যক্তি হচ্ছে একজন ভোক্তা।

প্রশ্ন-১৩.ভোগ ও তৃপ্তির মধ্যে সম্পর্ক কী?

উত্তর : ভোগ ও তৃন্তির মধ্যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। কোনো দ্রব্য ভোগ ছাড়া তৃন্তি লাভের কথা কল্পনাই করা যায় না। সাধারণত ভোগ বলতে কোনো দ্রব্যের ধ্বংস বা বিনাশ করা বোঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে ভোগের অর্থ কোনো দ্রব্য ধ্বংস বা বিনাশ করা নয়। অর্থনীতিতে কোনো দ্রব্য ব্যবহারের মাধ্যমে তার উপযোগ লাভ করাকেই ভোগ বলা হয়। আর মানুষ যখন দ্রব্য ভোগ করে তখন তা থেকে তৃপ্তি পায়। কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা হলে তা থেকেই 
মানসিক পরিতৃপ্তি আসে।

প্রশ্ন-১৪. প্রান্তিক উপযোগ রেখা নিম্নগামী হয় কেন?

উত্তর : অতিরিক্ত এক একক ভোগের জন্যে যে অতিরিক্ত উপযোগ সৃষ্টি হয় তাকে প্রান্তিক উপযোগ বলে। কোনো দ্রব্যের ভোগের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে প্রান্তিক উপযোগ ক্রমান্বয়ে কমে। সে কারণেই প্রান্তিক উপযোগ রেখা নিম্নগামী
হয়ে থাকে।

প্রশ্ন-১৫. ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : ভোক্তা কোনো একটি দ্রব্য যত বেশি ভোগ করে তার কাছে ঐ দ্রব্যের প্রান্তিক উপযোগ তত কমে যেতে থাকে। ভোগের একক বৃদ্ধির ফলে প্রান্তিক উপযোগ কমে যাবার এ প্রবণতাকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধি বলে। 

প্রশ্ন-১৬. দামের সাথে চাহিদার সম্পর্ক বর্ণনা দাও।

উত্তর : দাম ও চাহিদার আচরণ পর্যালোচনা করে বলা যায়, উভয়ের মধ্যে একটি বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে। চাহিদা সূচিতে দেখা যায় দ্রব্যের দাম কমলে তার চাহিদা বাড়ে এবং দাম বাড়লে চাহিদা কমে। অর্থাৎ দাম ও চাহিদার মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান।

প্রশ্ন-১৭. যোগান বিধিটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : যে বিধি দামের সাথে দ্রব্যের যোগানের সম্পর্ক প্রকাশ করে তাকে যোগান বিধি বলে। এ বিধি অনুযায়ী অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থেকে কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে তাঁর যোগান বাড়ে এবং দাম কমলে যোগান কমে। 
অর্থাৎ দাম ও দ্রব্যের যোগানের মধ্যে সবসময় সরাসরি ও সমমুখী সম্পর্ক বিরাজ করে। 

প্রশ্ন-১৮. বাজার যোগান রেখা কীভাবে পাওয়া যায়?

উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি দ্রব্যের বিভিন্ন দামে বাজারের সব বিক্রেতা যে পরিমাণ দ্রব্য যোগান দেন তা বাজার যোগান। অন্যদিকে, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি দ্রব্যের বিভিন্ন দামে বাজারের সব বিক্রেতা যে পরিমাণ দ্রব্য যোগান দেন তা একটি বাজার যোগান সূচিতে দেখানো যায়। সব বিক্রেতার ব্যক্তিগত যোগান সূচি যোগ করে বাজার যোগান সূচি তৈরি করা যায়। এই বাজার যোগান সূচি থেকে রেখাচিত্রের মাধ্যমে বাজার যোগান রেখা পাওয়া যায়।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url