গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন
সপ্তম অধ্যায় : গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন
পৌরনীতি ও নাগরিকতা
Civics and Citizenship
আমাদের ওয়েবসাইট “অর্ডিনেট আইটি.কম” ও চ্যানেল ”অর্ডিনেট ক্লাসরুম ”আপনাদের স্বাগতম ।
আমরা একটি ভিন্ন প্রজন্মের স্বপ্ন দেখি। আমরা অধিক চিন্তাশীল প্রজন্ম গড়তে চাই, আলাদা মানুষ যাদের আগে চিন্তা করার অভ্যাস থাকবে। আমরা মানুষ কেন? কারণ আমরা চিন্তা করি, এবং সেই চিন্তাকে মুক্তচিন্তা হতে হবে। আর মুখস্থ করে আর যা ই হোক, বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে না। আর সেই প্রচেষ্টারই অংশ হল আমাদের কনটেন্ট ও ভিডিও লেকচার। এই কনটেন্ট ও ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বিষয় এমনভাবে শেখানোর চেষ্টা করা যাতে আপনি বইয়ের বাইরেও অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আর আপনি যখন চিন্তাশীল মানুষ হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝবেন এই দেশকে আলাদা করতে আমাদের কী করতে হবে, কতদূর যেতে হবে।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১.নির্বাচন কাকে বলে?
উত্তর : প্রতিনিধি বাছাইয়ের প্রক্রিয়াকে নির্বাচন বলে।
২.পরোক্ষ নির্বাচন কী?
উত্তর : যে পদ্ধতিতে নির্বাচকমণ্ডলী চূড়ান্ত জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ভোট প্রদানের মাধ্যমে একটি মধ্যবর্তী শ্রেণিকে নির্বাচন করে তাকে পরোক্ষ নির্বাচন বলা হয়।
৩. প্রত্যক্ষ নির্বাচন কাকে বলে?
উত্তর ; জনগণ যখন সরাসরি ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করে তখন তাকে প্রত্যক্ষ নির্বাচন বলা হয়।
৪.নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে বর্তমানে সর্বত্র গৃহীত নীতি কী?
উত্তর : নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে বর্তমানে সর্বত্র গৃহীত নীতি হলো- 'এক ব্যক্তি, এক ভোট।”
৫.নির্বাচন কমিশনারদের কে নিয়োগ করেন?
উত্তর : নির্বাচন কমিশনারদের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেন ।
৬. সংবিধানের কত নং অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর : সংবিধানের ১১৮ নং অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
৭. গণতান্ত্রিক সরকার কী?
উত্তর : জনগণের ভোটের মাধ্যমে পঠিত সরকারই হচ্ছে গণতান্ত্রিক
৮. রাজনৈতিক দল কাকে বলে?
উত্তর : রাজনৈতিক দল হচ্ছে একটি দেশের জনগোষ্ঠীর সেই অংশ যারা একটি আদর্শ বা কিছু নীতি বা কর্মসূচির ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমাধ সংগঠিত হয়।
৯. নির্বাচন কত প্রকার?
উত্তর : নির্বাচন দুই প্রকার।
১০. ভোটদান পদ্ধতি কত প্রকার?
উত্তর : ভোটদান পদ্ধতি দুই প্রকার।
১১. রাজনৈতিক দলের প্রধান কাজ কী?
উত্তর : রাজনৈতিক দলের প্রধান কাজ হচ্ছে সরকার গঠন করা পর উন্নয়ন একাডেমী পাব।
১২. বর্তমানে বাংলাদেশে কোন ধরনের সরকারব্যবস্থা বিদ্যমান?
উত্তর : : বর্তমানে বাংলাদেশে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা বিদ্যমান।
১৩. কোন ধরনের শাসনব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল অপরিহার্য?
উত্তর : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল অপরিহার্য।
১৪. আওয়ামী লীগ সর্বপ্রথম কী নামে আত্মপ্রকাশ করে?
উত্তর : আওয়ামী লীগ সর্বপ্রথম 'আওয়ামী মুসলিম লীগ' নামে আত্মপ্রকাশ করে।
১৫. কীভাবে নির্বাচনি এলাকা নির্ধারিত হয়?
উত্তর : ভৌগোলিক আয়তন ও ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে নির্বাচনি এলাকা নির্ধারিত হয়।
১৬. ভোটার বা নির্বাচক কাকে বলে?
উত্তর : নির্বাচনে যারা ভোট দেয় তাদেরকে ভোটার বা নির্বাচক বলে।
১৭. নির্বাচকমণ্ডলী কাকে বলা হয়?
উত্তর : নির্বাচকের সমষ্টিকে নির্বাচকমণ্ডলী বলা হয়।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. এক ব্যক্তি, এক ভোট পদ্ধতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে বর্তমানে সর্বত্র গৃহীত নীতি হলো এক ব্যক্তি, এক ভোট। এক ব্যক্তি, এক ভোট পদ্ধতিতে একটি আসনের জন্য একজন / ভোটার কেবল তার পছন্দের একজনকে ভোট দিতে পারে। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সর্বাধিক ভোট প্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচিত হবেন। এ পদ্ধতি বর্তমানে সর্বত্র গৃহীত নীতি যাতে নির্বাচনের পূর্ণ উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়। তাই এক ব্যক্তি, এক ভোট একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন পদ্ধতি।
প্রশ্ন-২. সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থাকে গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ বলা হয় কেন?
অথবা,
সুষ্ঠু নির্বাচন গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পূর্বশর্ত- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : গণতন্ত্র হচ্ছে জনগণের শাসনব্যবস্থা যেখানে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালিত হলে সঠিক নেতৃত্বে গণতন্ত্র রক্ষিত হয়। এর বিপরীত অবস্থ জনগণের শাসন কায়েম হয় না এবং ভল জনমত গঠিত হয়, যা গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ বলা হয়।
প্রশ্ন-৩. গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচকমণ্ডলী গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : নির্বাচনের সমষ্টিকে নির্বাচকমণ্ডলী বলে। নির্বাচকমণ্ডলী সরকার জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় নির্বাচন সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে। একটি দল নির্বাচিত হয়ে সঠিকভাবে জনগণের জন্য কাজ না করলে পরবর্তী নির্বাচনে জনগণকে সাধারণত সেই দলকে আর নির্বাচিত করে না। তাই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচকমণ্ডলী অত্যন্ত গুৰুত্বপূৰ্ণ।
প্রশ্ন-৪. গোপন ভোটদান পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
অথবা,
গোপন ভোটদান পদ্ধতি কেন সর্বজন স্বীকৃত- ব্যাখ্যা কর ।
উত্তর : যে ভোটদান পদ্ধতিতে ভোটারগণ গোপনে ব্যালটপত্রে পছন্দকত ব্যক্তি নামের পাশে নির্ধারিত চিহ্ন দিয়ে বা সিল দিয়ে ভোট প্রদান করে প্রতিনিধি নির্বাচন। করেন তাকে গোপন ভোটদান পদ্ধতি বলে। প্রায় সকল রাষ্ট্রেই গোপন ব্যালটে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এ পদ্ধতি সর্বজনস্বীকৃত
প্রশ্ন-৫.পরোক্ষ নির্বাচন বলতে কী বোঝায়?
অথবা,
পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জনগণ ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি বা একটি মধ্যবর্তী সংস্থা নির্বাচিত করেন। এ জনপ্রতিনিধিগণ ভোট দিয়ে যখন রাষ্ট্রপতি বা সংসদের সংরক্ষিত | আসনের সদস্য নির্বাচন করেন, তাকে বলা হয় পরোক্ষ নির্বাচন। যেমন- বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন। আবার মার্কিন | যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি মধ্যবর্তী সংস্থা দ্বারা নির্বাচিত হন। অর্থাৎ পরোক্ষ নির্বাচন। বলতে সে নির্বাচন ব্যবস্থাকে বোঝায় সেখানে সাধারণ ভোটারগণ ভোট দিয়ে মধ্যবর্তী নির্বাচনি সংস্থা তৈরি করে। আর সে নির্বাচনি সংস্থা চূড়ান্তভাবে প্রতিনিধি অথবা রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান নির্বাচন করে।
প্রশ্ন-৬.একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচনের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের উপর গণতন্ত্র নির্ভর করে বলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। গণতন্ত্রের ভিত্তি হলো জনমত। আর নির্বাচনের মাধ্যমেই জনমত প্রকাশ পায়। নির্বাচনের মাধ্যমেই ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রর্থীকে নির্বাচিত করে। নির্বচিত দল সঠিকভাবে জনগণের জন্য কাজ না করলে পরবর্তী নির্বাচনে জনগণ সেই দলকে আর নির্বাচিত করে না। অর্থাৎ নির্বাচন সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিত করে। তাই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
প্রশ্ন-৭.জনমত গঠনে রাজনৈতিক দলের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জনমত গঠনে রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে তার আদর্শ ও কর্মসূচির পক্ষে জনমত গঠন করা। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সভা, মিছিল ও গণযোগাযোগের কর্মসূচি গ্রহণ করে। সরকারি দল নিজের সফলতাকে জনগণের সামনে প্রকাশ ও প্রচার করে জনমত গঠনের চেষ্টা করে। বিরোধী দল সরকারের বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি জনগণের সামনে তুলে ধরে নিজেদের পক্ষে জনমত গঠনের প্রচেষ্টা চালায়।
প্রশ্ন-৮. 'গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল কেন গুরুত্বপূর্ণ'- ব্যাখ্যা
অথবা,
'গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অপরিহার্য - না এক ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সাফল্যের জন্য রাজনৈতিক দল গুরুত্বপূর্ণ বেলা ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনে যে সকল দল বা দলসমূহ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে না তারাই বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে। বিরোধী দল পার্লামেন্টে বিতর্ক, সরকারের নীতির সমালোচনা, মূলতবি প্রস্তাব এবং বিভিন্ন বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করে 1. সংসদকে কার্যকর রাখে। সংসদের বাইরেও বক্তব্য, বিবৃতি ও সমালোচনার মাধ্যমে বিরোধী দল সরকারকে আইনের শাসন অনুশীলনে সহায়তা করে। গঠনমূ লক সমালোচনা এবং কার্যকর ভূমিকা রাখা বিরোধী দলের অন্যতম দায়িত্ব। জনগণের অভাব-অভিযোগ, দুঃখ-দুর্দশাকে চিহ্নিত করে তারা সার্বিক কর্মসূচিনীত এর প্রণয়ন করে। এছাড়া সংসদীয় ব্যবস্থায় বিরোধী দল হলো বিকল্প সরকার। তাই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন-৯. চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আধুনিক শাসনব্যবস্থা মূলত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা। এ শাসনব্যবস্থায় আমরা চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর উপস্থিতি লক্ষ করি। যারা রাষ্ট্রীয় আইন ও নীতিকে নিজের স্বার্থ প্রয়োগের জন্য আইনসত্তা কিংবা আমলাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে বা চাপ সৃষ্টি করে তাদেরকে চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বলা হয়। যেমন- শ্রমিক সংঘ, শিক্ষক সমিতি, প্রকাশক সমিতি ইত্যাদি চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর অন্তর্গত।
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url