পৌরনীতি ও নাগরিকতা

পৌরনীতি ও নাগরিকতা

Civics and Citizenship

আমাদের  ওয়েবসাইট “অর্ডিনেট আইটি.কম” ও  চ্যানেল ”অর্ডিনেট ক্লাসরুম  ”আপনাদের  স্বাগতম । 
আমরা একটি ভিন্ন প্রজন্মের স্বপ্ন দেখি। আমরা অধিক চিন্তাশীল প্রজন্ম গড়তে চাই, আলাদা মানুষ যাদের আগে চিন্তা করার অভ্যাস থাকবে। আমরা মানুষ কেন? কারণ আমরা চিন্তা করি, এবং সেই চিন্তাকে মুক্তচিন্তা হতে হবে। আর মুখস্থ করে আর যা ই হোক, বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে না। আর সেই প্রচেষ্টারই অংশ হল আমাদের কনটেন্ট ও ভিডিও লেকচার। এই কনটেন্ট ও  ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বিষয় এমনভাবে শেখানোর চেষ্টা করা যাতে আপনি বইয়ের বাইরেও অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আর আপনি যখন চিন্তাশীল মানুষ হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝবেন এই দেশকে আলাদা করতে আমাদের কী করতে হবে, কতদূর যেতে হবে।



প্রথম অধ্যায় : পৌরনীতি ও নাগরিকতা

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

১.পৌরনীতি কাকে বলে?

অথবা, 

পৌরনীতি বলতে কী বোঝ? 

উত্তর : পৌরনীতি বলতে সেই শাস্ত্রকে বোঝায়, যা নাগরিক ও নাগরিকতার সাথে সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ের ধারাবাহিক পর্যালোচনা করে।

২.রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ই. এম. হোয়াইট প্রদত্ত পৌরনীতির সংজ্ঞা দাও। 

উত্তর: রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ই. এম. হোয়াইট এর মতে-"পৌরনীতি হলো জ্ঞানের সেই মূল্যবান শাখা, যা নাগরিকতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এবং স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবতার সাথে জড়িত সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে। "

৩. ভূখণ্ড কাকে বলে?

নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমারেখা দ্বারা পরিবেষ্টিত স্থলভাগ, সমুদ্রসীমা ও আকাশসীমাকে ভূখণ্ড বলে।

8. সমাজ কী?

উত্তর : সমাজ বলতে সেই সংঘবদ্ধ জনগোষ্ঠীকে বোঝায়, যারা কোনো সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একত্রে বসবাস করে।

৫. পরিবার কী?

উত্তর : বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তিতে এক বা একাধিক পুরুষ ও মহিলা তাদের সন্তানাদি, পিতামাতা ও অন্যান্য পরিজন নিয়ে যে সংগঠন গড়ে ওঠে তাকে পরিবার বলে

৬.কর্তৃত্বের ভিত্তিতে পরিবার কত প্রকার ?

উত্তর : কর্তৃত্বের ভিত্তিতে পরিবার দুই প্রকার। যথা-পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবার ।

৭. পারিবারিক কাঠামো অনুযায়ী পরিবার কত প্রকার?

উত্তর : পারিবারিক কাঠামো অনুযায়ী পরিবার দুই প্রকার। যথা-একক ও যৌথ পরিবার।

৮. একক পরিবার কাকে বলে?

উত্তর : স্বামী-স্ত্রী ও তাদের অবিবাহিত সন্তান-সন্ততি নিয়ে গঠিত পরিবারকে একক পরিবার বলে।

৯. মাতৃতান্ত্রিক পরিবার কাকে বলে?

উত্তর : যে পরিবারে সন্তানেরা মায়ের পরিচয়ে পরিচিত হয় এবং মা পরিবারের নেতৃত্ব দেন তাকে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে।

১০. পিতৃতান্ত্রিক পরিবার কাকে বলে?

উত্তর : যে পরিবারে সন্তানেরা পিতার পরিচয়ে পরিচিত হয় তাকে পিতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে ।

১১. সামাজিক চুক্তি মতবাদের মূলকথা কী?

উত্তর : সামাজিক চুক্তি মতবাদের মূলকথা হলো- সমাজে বসবাসকারী জনগণের পারস্পরিক চুক্তির ফলে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। 

১২. পৌরনীতিকে কোন ধরনের বিজ্ঞান বলা হয়?

উত্তর : পৌরনীতিকে নাগরিকতাবিষয়ক বিজ্ঞান বলা হয়। 

১৩. রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা কী?

উত্তর : রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা হলো সার্বভৌমত্ব।

১৪. Civis শব্দের অর্থ কী?

 উত্তর : Civis শব্দের অর্থ নাগরিক।

১৫. পৌরনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ কী?

উত্তর : পৌরনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ Civics. 

১৬. রাষ্ট্রের উপাদান কয়টি?

উত্তর : রাষ্ট্রের উপাদান চারটি।

১৭. বিবাহের ভিত্তিতে পরিবার কয় প্রকার? 

উত্তর : বিবাহের ভিত্তিতে পরিবার তিন প্রকার ।

১৮. বহুপতি পরিবার কাকে বলে?

উত্তর : পরিবারে একজন স্ত্রীর একাধিক স্বামী থাকাকে বহুপতি পরিবার বলে।

১৯. রাষ্ট্র কী? 

উত্তর : যে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সংগঠিত সরকার, জনসমষ্টি এবং সার্বভৌম ক্ষমতা রয়েছে তাই হলো রাষ্ট্র।

২০. রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ কয়টি?

উত্তর : রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ ৪টি।

২১. পরিবার সম্পর্কে ম্যাকাইভার কী বলেছেন?

অথবা, 

ম্যাকাইভার প্রদত্ত পরিবারের সংজ্ঞা দাও ।

উত্তর : ম্যাকাইভার প্রদত্ত পরিবারের সংজ্ঞাটি হলো লালন-পারনের জন্য সংগঠিত ক্ষুদ্র বর্গকে পরিবার বলে।

২২. ঐশী মতবাদ অনুসারে রাষ্ট্র কী ধরনের?

উত্তর : ঐশী মতবাদ অনুসারে রাষ্ট্র বিপদজনক, অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক।

২৩. পরিবার কী ধরনের প্রতিষ্ঠান?

উত্তর : পরিবার একটি ক্ষুদ্র সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

২৪.কোন মতবাদে রাষ্ট্রের উৎপত্তির সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় ।

উত্তর : ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদে রাষ্ট্রের উৎপত্তির সঠিক

২৫. রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে সবচেয়ে পুরাতন মতবাদ কোনটি?

উত্তর : রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে সবচেয়ে পুরাতন মতবাদ হলো ঐশী মতবাদ।

২৬. নগররাষ্ট্রে কাদের নাগরিক বলা হতো?

উত্তর : নগররাষ্ট্রে যারা রাষ্ট্রীয় কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করত তাদের নাগরিক বলা হতো।


 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. পরিবারে শিশুর রাজনৈতিক শিক্ষা শুরু হয় কীভাবে? ব্যাখ্যা কর ।

অথবা,

 পরিবারে শিশুর রাজনৈতিক কাজ কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : যে সকল শিক্ষা একজন মানুষকে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সহায়তা করে সে সব শিক্ষা দেওয়া পরিবারের রাজনৈতিক কাজের অন্তর্ভুক্ত।পরিবারে সাধারণত মা-বাবা কিংবা বড় ভাই-বোন অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। ছোটরা তাদের আদেশ-নির্দেশ অনুসরণ বা মান্য করে চলে। বড়রাও ছোটদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেন। পরিবারের বড়রা ছোটদেরকে বুদ্ধি, বিবেক ও আত্মসংযমের শিক্ষা দেন, যা তাদেরকে সুনাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। আবার পরিবারের সদস্যরা অনেক সময় দেশ ও বিদেশের - রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। এর মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে রাজনীতি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে ওঠে। এভাবে পারিবারিক শিক্ষা ও নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে পরিবারেই একজন শিশুর রাজনৈতিক শিক্ষা শুরু হয়।

প্রশ্ন-২.রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত প্রাচীন মতবাদটি বর্ণনা কর। 

 উত্তর : রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কিত মতবাদসমূহের মধ্যে ঐশী মতবাদ সবচেয়ে পুরাতন মতবাদ। এ মতবাদের মৌলিক ধারণা এমন যে, বিধাতা বা স্রষ্টা রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছেন এবং রাষ্ট্রকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি শাসক প্রেরণ করেছেন। শাসক তাঁর প্রতিনিধি এবং তিনি তাঁর কাজের জন্য একমাত্র স্রষ্টা যা বিধাতার নিকট দায়ী; কিন্তু জনগণের নিকট নয়।

প্রশ্ন-৩. 'খুলনা' রাষ্ট্র নয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : রাষ্ট্র হলো একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। একটি রাষ্ট্রের চারটি উপাদান অপরিহার্য। যেমন-

  • ১.জনসমষ্টি;
  • ২. নির্দিষ্ট ভূখণ্ড; 
  • ৩. সরকার 
  • ৪. সার্বভৌমত্ব। 

এ উপাদানগুলোর কোনোটি যদি কোনো অঞ্চলের মধ্যে বিদ্যমান না থাকে,তবে তাকে রাষ্ট্র বলা যাবে না। সে অর্থে খুলনা রাষ্ট্র নয়। কারণ খুলনার জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ও সরকার ব্যবস্থা থাকলেও সার্বভৌমত্ব নেই। আর সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের সর্বাপেক্ষা অপরিহার্য উপাদান এবং প্রধান শর্ত। তাই খুলনা রাষ্ট্র নয়। 

প্রশ্ন-৪. "পরিবারকে চিরন্তন বিদ্যালয় বলা হয়”-ব্যাখ্যা কর।

অথবা, 

শাশ্বত বিদ্যালয় বলা হয় কাকে? ব্যাখ্যা কর।

অথবা, 

“শিশুর জীবনে প্রথম বিদ্যালয় হলো পরিবার”- ব্যাখ্যা কর। 

 উত্তর : শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার শুরু পরিবারে হয় বলে পরিবারকে চিরন্তন বা শাশ্বত বিদ্যালয় বলা হয়। শিশুরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার পূর্বেই পরিবারে বর্ণমালার সাথে পরিচিত হয়। তাছাড়া বাবা-মা, ভাই-বোন ও পরিবারের অন্য সদস্যদের পারস্পরিক সহায়তায় সততা, শিষ্টাচার, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলির শিক্ষালাভের সুযোগ পরিবারেই ঘটে থাকে। এভাবে পরিবারে শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বলে একে চিরন্তন বিদ্যালয় বলা হয়।

প্রশ্ন-৫. পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজ বলতে কী বোঝায়?

অথবা, 

পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : পরিবারের যে কাজগুলোর মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায় সেগুলোই পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজ। পরিবার তার সদস্যদের মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে মানসিক চাহিদা পূরণ করে। আবার নিজের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে ভাগাভাগি করে প্রশান্তি লাভ করা যায়। অন্যদিকে পরিবারের কোনো সদস্য সমস্যায় পড়লে বাবা-মা, ভাই-বোন ও অন্যান্য পরিজনের সাথে আলাপ- আলোচনা করে তার সমাধান করা যায়।এ ধরনের আলোচনা মানসিক ক্লান্তি মুছে দিতে সাহায্য করে। তাছাড়া পরিবার থেকে শিশু উদারতা, সহনশীলতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণগুলো শিক্ষা লাভ করে, যার ফলে তাদের মানসিক দিক সমৃদ্ধ হয়।

প্রশ্ন-৬. মানুষ সমাজে বাস করে কেন? ব্যাখ্যা কর । 

উত্তর : মানুষ সামাজিক জীব। নিজেদের প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে প্রাচীনকালে মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে সমাজ গড়ে তোলে। কারণ, একা কোনো প্রয়োজন পূরণ করা মানুষের সাধ্যে ছিল না। তাছাড়া সামাজিক পরিবেশ মানুষের মানবীয় গুণাবলি ও সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটায়। এসব কারণে মানুষ সমাজে বসবাস করে।

প্রশ্ন-৭. একটি রাষ্ট্র কীভাবে অন্য রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপযুক্ত থাকতে পারে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : একটি রাষ্ট্র তার সার্বভৌম ক্ষমতাবলে অন্য রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ মুক্ত থাকতে পারে। রাষ্ট্র গঠনের চারটি উপাদানের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সার্বভৌমত্ব । এটি রাষ্ট্রের চরম ও সর্বোচ্চ ক্ষমতা। এর দুটি দিকের মধ্যে একটি হলো বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব। রাষ্ট্র তার বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব দ্বারা সকল প্রকার বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে দেশকে মুক্ত রাখে। তাই চাইলেই অন্য কোনো রাষ্ট্র সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

প্রশ্ন-৮.সার্বভৌমত্বকে রাষ্ট্র গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

অথবা,

 সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন?

অথবা,

 রাষ্ট্র গঠনের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ উপাদান কোনটি? ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর : সার্বভৌম শক্তির ওপর রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নির্ভর করে বলে রাষ্ট্র গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলা হয়।  সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রের চরম, পরম ও সর্বোচ্চ ক্ষমতা। এর দুটি দিক রয়েছে, বা চেয়ে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব।অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের সাহায্যে - স্বয়ং দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন আদেশ-নির্দেশ জারির মাধ্যমে ব্যক্তি ও সংস্থার উপ প্ররণ কর্তৃত্ব করে। অন্যদিকে, বাহ্যিক সার্বভৌমত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্র বহিঃশক্তির নিে থেকে দেশকে মুক্ত রাখে।

প্রশ্ন-৯. সরকার বলতে কী বোঝায় ?

 উত্তর: সরকার বলতে সেই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে বোঝায় যার মাধ্যমে রাষ্ট্রে দান শাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যাবলি পরিচালিত হয়। সরকারের মাধ্যমেই একটি দেশের জনগণ তথা রাষ্ট্রের ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রকাশিত ও তবে বাস্তবায়িত হয়ে থাকে। সরকার শব্দটি সংকীর্ণ ও ব্যাপক দুটি অর্থে ব্যবহৃ ষ্টি হয়। সংকীর্ণ অর্থে সরকার বলতে আইন, শাসন ও বিচার বিভাগের সাথে সাহি সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বোঝায়। আর ব্যাপক অর্থে সরকার বলতে দেশের সব নাগরিককে বোঝায়। সব রাষ্ট্রে সরকারের মৌলিক গঠন একই রকম হলেও ১৮/ রাষ্ট্রভেদে এর রূপ ভিন্ন হয়। যেমন- বাংলাদেশে সংসনীয় সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার বিদ্যমান।

প্রশ্ন-১০.সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর। 

অথবা, 

সমাজের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য বুঝিয়ে লিখ ।

 উত্তর সমাজের সাতে মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। তায় । সমাজ মানুষের বহুমুখী প্রয়োজন মিটিয়ে তাকে উন্নত ও নিরাপদ জীবন দান ম্যাগ করে। সমাজের মধ্যেই মানুষের মানবীয় গুণাবলি ও সামাজিক মূল্যবোধের ভ্রলে বিকাশ ঘটে। সমাজকে সভ্য জীবনযাপনের আদর্শ স্থান মনে করা হয়। মানুষ নিজের প্রয়োজনেই সমাজ গড়ে তোলে। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল যথ বলেছেন, ‘মানুষ স্বভাবগত সামাজিক জীব, যে সমাজে বাস করে না, সে হয় পশু, না হয় দেবতা'। 

তাই বলা যায়, সমাজের সাথে সত্যিই মানুষের অবিচ্ছেদ্য যায় সম্পর্ক বিদ্যমান ।

প্রশ্ন-১১.সমাজ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : সমাজ বলতে একটি সংঘবদ্ধ জনগোষ্ঠীকে বোঝায়, যারা কোনো অভিন্ন প্যর উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একত্র হয়। সমাজের এ ধারণাটি বিশ্লেষণ করলে এর নো প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। 
এগুলো হচ্ছে-
  • ক.বহুলোকের সংঘবদ্ধভাবে বসবাস এবং 
  • খ. ঐ সংঘবদ্ধতার পেছনে থাকবে অভিন্ন উদ্দেশ্য। 
সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। সমাজকে সভ্য জীবনযাপনের আদর্শ স্থান মনে করে বলে মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে সমাজ গড়ে তোলে। আর সমাজজীবন থেকেই মানবীয় গুণাবলি ও সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে।

প্রশ্ন-১২. মানুষের জীবনে সমাজের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর: সমাজ বলতে সেই সংঘবদ্ধ জনগোষ্ঠীকে বোঝায়, যারা কোনো সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একত্রিত হয়। সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। মানুষকে নিয়ে সমাজ পড়ে আর সমাজ মানুষের বহুমুখী প্রয়োজন মিটিয়ে উন্নত ও নিরাপদ সামাজিক জীবন দান করে। সমাজের মধ্যেই মানুষের মানবীয় গুণাবলি ও সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। সমাজকে সভ্য জীবনযাপনের আদর্শ স্থান মনে করে বলে মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে সমাজ গড়ে তোলে। 

গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল যথার্থই বলেছেন, মানুষ স্বভাবগত সামাজিক জীব, যে সমাজে বাস করে না, সে হয় পশু, না হয় দেবতা। বস্তুত মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমাজে বসবাস করে এবং সামাজিক পরিবেশেই সে নিজেকে বিকশিত করে।

প্রশ্ন-১৩. মানুষ সামাজিক জীব – ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : মানুষকে নিয়েই সমাজ গড়ে ওঠে এবং মানুষ ও সমাজ ছাড়া বসবাস করতে পারে না, তাই মানুষ সামাজিক জীব।সমাজের মধ্যেই মানুষের মানবীয় গুণাবলি ও সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। সমাজকে সভ্য জীবনযাপনের  আদর্শ স্থান মনে করে বলে মানুষ তার নিজের প্রয়োজনেই সমাজ গড়ে তোলে। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল যথার্থই বলেছেন, মানুষ স্বভাবত সামাজিক জীব, যে সমাজে বাস করে না, সে হয় পশু না। হয় দেবতা। বস্তুত মানুষ জন্ম থেকে

 মৃত্যু পর্যন্ত সমাজে বসবাস করে এবং সামাজিক পরিবেশেই নিজেকে বিকশিত করে। আর এ জন্যই মানুষকে সামাজিক জীব বলা হয়।

প্রশ্ন-১৪.রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত ঐতিহাসিক মতবাদের মূল বক্তব্য ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর : রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কিত সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য মতবাদ হলো ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ। ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদের মূল বক্তব্য হলো রাষ্ট্র কোনো একটি বিশেষ কারণে হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়নি। বরং দীর্ঘদিনের বিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরে বিভিন্ন শক্তি ও উপাদান ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে হতে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে। যেসব উপাদানের কার্যকারিতার ফলে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে সেগুলো হলো – 

  • সংস্কৃতি, 
  • রক্ত ও ধর্মের বন্ধন, 
  • যুদ্ধবিগ্রহ, 
  • অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চেতনা এবং 
  • কার্যকলাপ ইত্যাদি।

প্রশ্ন-১৫. পরিবার একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান—ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : একটি শিশুকে উপযুক্ত শিক্ষাদানের মাধ্যমে ব্যক্তিত্ববান এবং সামাজিক মানুষে পরিণত করার ক্ষেত্রে পরিবার সর্বাধিক ভূমিকা পালন করে বলে এটি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান।মানুষের সংঘবদ্ধ জীবনযাপনের মূল ভিত্তি হচ্ছে পরিবার। পরিবারকে বাদ দিয়ে কোনো মানুষের পক্ষে সুস্থ ও সুন্দর সামাজিক জীবন গড়ে তোলা সম্ভব হয় না। সমাজে চলাফেরার নীতি, সামাজিক ধ্যান-ধারণা প্রভৃতির শিক্ষা শিশুরা পরিবার থেকেই পেয়ে থাকে। এমনকি রাজনৈতিক দীক্ষা গ্রহণও পরিবারের মধ্যে আরম্ভ হয়। আর উক্ত শিক্ষা সমাজে সঠিকভাবে চলতে একজন মানুষকে সাহায্য করে। তাই পরিবারকে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলা হয় ।

প্রশ্ন-১৬. ‘পৌরনীতি ও নাগরিকতা' বিষয়টি আমাদের পাঠ করা প্রয়োজন কেন?

উত্তর : পৌরনীতি ও নাগরিকতা নাগরিকের সাথে জড়িত সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করে এবং আদর্শ নাগরিক জীবনের দিক-নির্দেশনা দেয়। তাই পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়টি আমাদের পাঠ করা প্রয়োজন ।পৌরনীতি ও নাগরিকতা নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনা করে। তাছাড়া সুনাগরিকের বৈশিষ্ট্য, সুনাগরিকতা অর্জনের প্রতিবন্ধকতা এবং তা দূর করার উপায় এখানে আলোচনা করা হয়। তাই অধিকার ও কর্তব্য সচেতন সুনাগরিক হয়ে রাষ্ট্রীয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়টি পাঠ করা প্রয়োজন ।

প্রশ্ন-১৭. সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার বাস্তবায়নকারী উপাদান- ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর : সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার বাস্তবায়নকারী উপাদান, কারণ সরকার ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালিত হয় না । রাষ্ট্র গঠনের চারটি উপাদানের মধ্যে অন্যতম একটি উপাদান হলো সরকার, যার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যাবলি সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত ও বাস্তবায়িত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে সরকার তিন ধরনের কাজ সম্পাদন করে। যেমন- আইন প্রণয়ন, শাসন পরিচালনা ও বিচার সংক্রান্ত। এ তিন ধরনের কাজ সম্পাদনের জন্য সরকারের তিনটি বিভাগ রয়েছে। যথা-

  • আইন, 
  • শাসন ও 
  • বিচার বিভাগ।

 এ তিনটি বিভাগের মাধ্যমে সরকার রাষ্ট্রের কর্মসূচি ও নীতিমালা বাস্তবায়ন করে।






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url