জুনিয়র (৮ম শ্রেণি)বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ বিজ্ঞান সাজেশন



 সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন গুলোর উত্তর লিখ :

০১. তিমি মাছ নয় কেন?

উত্তর: তিমির দেহে মাছের বৈশিষ্ট্য থাকে না। এর দেহে স্তনগ্রন্থি থাকে এবং বাচ্চা প্রসব করে যা স্তন্যপায়ী প্রাণীর বৈশিষ্ট্য। এ কারণেই তিমি মাছ নয়। 

০২. উভচর ও সরীসৃপের দুটি প্রধান পার্থক্য উল্লেখ কর।

উত্তর: উভচর ও সরীসৃপের দুটি প্রধান পার্থক্য নিম্নরূপ:
  • উভচর-এর ত্বক ভেজা ও গ্রনিযুক্ত কিন্তু সরীসৃপের ত্বক শুষ্ক ও আঁইশযুক্ত।
  • উভচর পানিতে ডিম পাড়ে এবং ব্যাঙাচি দশা দেখা যায় কিন্তু সরীসৃপরা মাটিতে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফুটে।

০৩. বাদুড় যে পাখি নয় তার দুটি কারণ দাও ।

উত্তর: বাদুড় যে পাখি নয় এর দুটি কারণ নিম্নরূপ:
  • i. বাদুড়ের দেহ পাখির মতো পালকে আবৃত নয়। দেহ লোমে আবৃত। 
  • ii. বাদুড়ের চোয়াল পাখির মতো চঞ্চুতে রূপান্তরিত হয় না।

০৪. কনড্রিকথিস ও অসটিকথিস শ্রেণির দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর: কনড্রিকথিস ও অসটিকথিস শ্রেণির দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ:

কনড্রিকথিস

  • ১. কঙ্কাল তরুণাস্থিময়।
  • ২. দেহ প্ল্যাকয়েড আঁইশ দ্বারা 

অসটিকথিস

  • ১. কঙ্কাল অস্থিময়।
  • ২. দেহ সাইক্লোয়েড ও টিনয়েড আঁইশ আবৃত এবং ফুলকাছিদ্র থাকে। দ্বারা আবৃত এবং ফুলকা কানকো  থাকে না।

০৫. তারামাছ মাছ নয় কেন?

উত্তর: তারামাছের দেহে মাছের বৈশিষ্ট্য যেমন শ্বাসকার্যের জন্য ফুলকা থাকে না, কঙ্কাল অস্থিময় অথবা তরুণাস্থিময় নয় এবং হৃৎপিণ্ড থাকে না। তাই তারামাছ মাছ নয়।

০৬. কোনো প্রাণীর দ্বিপদ নামে কয়টি অংশ থাকে? এ অংশগুলো কী কী? মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম কী?

উত্তর:
  • Part:1 কোনো প্রাণীর দ্বিপদ নামে ২টি অংশ থাকে। 
  • Part:2 একটি অংশ 'গণ' অপরটি 'প্রজাতি'। 
  • Part:3 মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম- Homo sapiens.

০৭. চিংড়ি কোন পর্বের প্রাণী? এদের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?

উত্তর: চিংড়ি আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণী। এদের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো :
  • ক. দেহ খণ্ডায়িত ও সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ বিদ্যমান।
  • খ. মাথায় একজোড়া পুঞ্জাক্ষি ও একজোড়া অ্যান্টেনা থাকে।
  • গ. নরম দেহ শক্ত কাইটিনসমৃদ্ধ আবরণ দ্বারা আবৃত।
  • ঘ. দেহে রক্তপূর্ণ গহ্বর হিমোসিল থাকে।

০৮. স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ।

উত্তর: স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ :
  • ক. দেহ লোম দিয়ে আবৃত থাকে।
  • খ. কয়েকটি ছাড়া সকলেই সন্তান প্রসব করে।
  • গ. বাচ্চা মাতৃদুগ্ধ পান করে।
  • ঘ. উষ্ণ রক্তের প্রাণী।
  • ঙ. চোয়ালে বিভিন্ন প্রকারের দাঁত থাকে।

০৯. ইউরোকর্ডাটার বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?

উত্তর: ইউরোকর্ডাটার বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:
  • ক. প্রাথমিক অবস্থায় ফুলকা রন্ধ্র, পৃষ্ঠীয় ফাঁপা স্নায়ুরজ্জু থাকে।
  • খ. পরিণত প্রাণীতে নটোকর্ড থাকে না; কিন্তু লার্ভা অবস্থায় কেবল লেজে নটোকর্ড থাকে।

১০. প্রজাতি বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: প্রজাতি হলো শ্রেণিবিন্যাসের সবচেয়ে নিচের ধাপ বা একক। প্রকৃতি বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস সর্বপ্রথম প্রজাতির বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করেন। প্রতিটি প্রজাতি আপন বৈশিষ্ট্যে স্বতন্ত্র। 
যেমন- মানুষ, কুনোব্যাঙ, কবুতর ইত্যাদি এক একটি প্রজাতি।

১১. ফিতা কৃমির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ। 

উত্তর: ফিতা কৃমির দুটি বৈশিষ্ট্য হলো- 
  • ১. দেহ পুরু কিউটিকল দ্বারা আবৃত। 
  • ২. দেহে চোষক ও আংটা থাকে।

১২. ইউরোকর্ডাটা উপপর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: ইউরোকর্ডাটা উপপর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. প্রাথমিক অবস্থায় ফুলকা রন্দ্র, পৃষ্ঠীয় ফাঁপা স্নায়ুরজ্জু থাকে। 
  • ২. শুধুমাত্র লার্ভা দশায় এদের লেজে নটোকর্ড থাকে।

১৩. উভচরের দুটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।

উত্তর: উভচরের দুটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো- 
  • ১. দেহত্বক আঁইশবিহীন।
  • ২. ত্বক নরম, পাতলা, ভেজা ও গ্রন্থিযুক্ত।

১৪. কেঁচোকে অ্যানেলিডা পর্বের প্রাণী বলা হয় কেন?

উত্তর: কেঁচোর দেহ নলাকার ও খন্ডায়িত। দেহের প্রতিটি খণ্ডে সিটা থাকে যা চলাচলে সহায়তা করে। রেচন অঙ্গ হিসেবে নেফ্রিডিয়া থাকে। কেঁচোর এই সবগুলো বৈশিষ্ট্য অ্যানেলিডা পর্বের সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় কেঁচোকে অ্যানেলিডা পর্বের প্রাণী বলা হয়।

১৫. স্পঞ্জের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: স্পঞ্জের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো- 
  • ১. এরা সামুদ্রিক প্রাণী।
  • ২. দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করে।

১৬. নিডারিয়া পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: নিডারিয়া পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. দেহ দুটি ভূণীয় কোষস্তর দ্বারা গঠিত।
  • ২. এক্টোডার্মে নিডোসাইট নামক বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কোষ থাকে।

১৭. নেমাটোডা পর্বের দুটি উদাহরণ লেখ।

উত্তর: নেমাটোডা পর্বের দুটি উদাহরণ হচ্ছে-
  • ১. গোল কৃমি ও 
  • ২. ফাইলেরিয়া কৃমি।

১৮. অ্যানেলিডা পর্বভুক্ত দুটি প্রাণীর নাম লেখ।

উত্তর: অ্যানেলিডা পর্বভুক্ত দুটি প্রাণী হলো- 
  • ১. কেঁচো ও 
  • ২. জোঁক।

১৯. কর্ডাটা পর্বের উপপর্ব কতটি ও কী কী?

উত্তর: কর্ডাটা পর্বের উপপর্ব তিনটি। যথা-
  • ১. ইউরোকর্ডাটা,
  • ২. সেফালোকর্ডাটা ও
  • ৩. ভার্টিব্রাটা।

২০. মানুষকে কর্ডাটা পর্বের প্রাণী বলা হয় কেন?

উত্তর: মানুষকে কর্ডাটা পর্বের প্রাণী বলা হয়। কারণ, মানুষের জীবনচক্রে কোনো একসময় পৃষ্ঠীয়দেশ বরাবর নটোকর্ড ছিল যা পরবর্তীতে মেরুদণ্ডে পরিণত হয়। এদের পৃষ্ঠদেশে একক, ফাঁপা মেরুরজ্জু বিদ্যমান। অর্থাৎ মানুষের বৈশিষ্ট্যাবলি কর্ডাটা পর্বের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় মানুষকে কর্ডাটা পর্বের প্রাণী বলা হয়।

২১. মলাস্কা পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ। 

উত্তর: মলাস্কা পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. দেহ নরম এবং শক্ত খোলস দ্বারা আবৃত থাকে।
  • ২. পেশিবহুল পর্দা দিয়ে এরা চলাচল করে।

২২. কনড্রিকথিস ও অস্টিকথিস-এর মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর: কনড্রিকথিস ও অস্টিকথিস-এর মধ্যে দুটি পার্থক্য হলো-

কনড্রিকথিস

  • ১. কঙ্কাল তরুণাস্থিময়।
  • ২. লেজের দুটি অংশ ভিন্ন আকৃতির।

অস্টিকথিস

  • ১. কঙ্কাল অস্থিময়।
  • ২. লেজের দুটি অংশ একই রকম।

২৩. হাঙর ও ইলিশ মাছের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর: হাঙর ও ইলিশ মাছের মধ্যে দুটি পার্থক্য হলো-

হাঙর


  • ১. দেহে প্ল্যাকয়েড আঁইশ দ্বারা 
  • ২. লেজ হেটেরোসাকাল।

ইলিশ

  • ১. দেহ সাইক্লয়েড ও টিনয়েড আঁইশ আবৃত দ্বারা আবৃত।
  • ২. লেজ হোমোসাকাল।

২৪. সরীসৃপ শ্রেণির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: সরীসৃপ শ্রেণির দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. বুকে ভর করে চলে।
  • ২. ত্বক শুষ্ক ও আঁইশযুক্ত।

২৫. করাত মাছ সম্পর্কে ধারণা দাও।

উত্তর: করাত মাছ কনড্রিকথিস শ্রেণিভুক্ত। কনড্রিকথিস শ্রেণির মাছদের কঙ্কাল তরুণাস্থিময়। মুখছিদ্র দেহের অঙ্কীয় দেশে অবস্থিত। দেহ প্ল্যাকয়েড আঁইশ দ্বারা আবৃত, মাথার দুপাশে ৫-৭ জোড়া ফুলকাছিদ্র থাকে। কানকো থাকে না, লেজের দুটি অংশ ভিন্ন আকৃতির অর্থাৎ হেটেরোসার্কাল।

২৬. শ্রেণিবিন্যাসের ধাপ কতটি ও কী কী?

উত্তর: শ্রেণিবিন্যাসের ধাপ সাতটি। যথা- 
  • ১. জগৎ; 
  • ২. পর্ব; 
  • ৩. শ্রেণি; 
  • ৪. বর্গ; 
  • ৫. গোত্র; 
  • ৬. গণ ও 
  • ৭ প্রজাতি।

২৭. শ্রেণিবিন্যাসের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ কর।

উত্তর: শ্রেণিবিন্যাসের দুটি গুরুত্ব হলো-
  • ১. শ্রেণিবিন্যাসের সাহায্যে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সহজে, অল্প পরিশ্রমে ও অল্প সময়ে পৃথিবীর সকল উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্পর্কে ভীষ্টীজানা যায়।
  • ২. প্রাণিকূলের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত পাওয়া যায়। 

২৮. দ্বিপদ নামকরণ কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: একটি জীবের বৈজ্ঞানিক নাম দুই অংশ বা পদবিশিষ্ট হয়। এই নামকরণকে দ্বিপদ নামকরণ বা বৈজ্ঞানিক নামকরণ বলে। যেমন-মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens। বৈজ্ঞানিক নাম ল্যাটিন অথবা ইংরেজি ভাষায় লিখতে হয়।

২৯. সিলেন্টেরন বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: নিডারিয়া পর্বের প্রাণীদের দেহগহুরকে সিলেন্টেরন বলে। জেলিফিস, হাইড্রা ইত্যাদি প্রাণীদের শরীরে এটি পাওয়া যায়। এটির মাধ্যমে দেহে পানি, চলাচল করে। যা, কোষগুলোর জন্য পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করে। এটি একধারে পরিপাক ও সংবহনে অংশ নেয়।

৩০. প্লাটিহেলমিনথেস পর্বের দুটি প্রাণীর নাম লেখ।

উত্তর: প্লাটিহেলমিনথেস পর্বের দুটি প্রাণী হচ্ছে-
  • ১. যকৃৎ কৃমি এবং 
  • ২. ফিতা কৃমি।

৩১. প্রাণিজগতের সবচেয়ে বড় পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: প্রাণিজগতের সবচেয়ে বড় পর্বটি হচ্ছে আর্থ্রোপোডা। নিচে আর্থ্রোপোডা পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো-
  • ১. দেহ মস্তক, বক্ষ ও উদর এই তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত ও সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ বিদ্যমান।
  • ২. নরম দেহ কাইটিন সমৃদ্ধ শক্ত আবরণী দ্বারা গঠিত।

৩২. কর্ডাটা পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ। উত্তর: কর্ডাটা পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো- 

  • ১. পৃষ্ঠদেশে একক, ফাঁপা স্নায়ুরজ্জু থাকে।
  • ২. এই পর্বের প্রাণীরা সারাজীবন অথবা ভূণ অবস্থায় পৃষ্ঠীয়দেশ বরাবর নটোকর্ড অবস্থান করে।

৩৩. কর্ডাটা পর্বের দুটি প্রাণীর নাম লেখ।

উত্তর: কর্ডাটা পর্বের দুটি প্রাণীর নাম হলো-
  • ১. কুনোব্যাঙ ও
  • ২. মানুষ ।

৩৪. মেরুদন্ডী প্রাণীদের শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।

উত্তর: গঠন ও বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মেরুদণ্ডী প্রাণীদের ৭টি শ্রেণিতে
ভাগ করা হয়েছে। যথা-
  • ১. সাইক্লোস্টোমাটা, 
  • ২. কনড্রিকথিস,
  • ৩. অসটিকথিস,
  • ৪. উভচর,
  • ৫. সরীসৃপ,
  • ৬. পক্ষীকুল ও
  • ৭. স্তন্যপায়ী।

৩৫. সকল কর্ডাটা পর্বের প্রাণী মেরুদণ্ডী প্রাণী নয়- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: সকল মেরুদণ্ডী প্রাণীই কর্ডাটা পর্বভুক্ত। কারণ, কর্ডাটা পর্বের প্রাণীদের সারাজীবন অথবা ভূণ অবস্থায় দেহের পৃষ্ঠীয়দেশ বরাবর একটি নরম, দণ্ডাকার, দৃঢ় ও অখণ্ডায়িত নটোকর্ড থাকে। শুধু উন্নত কর্ডাটায় এটি মেরুদণ্ড দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। অর্থাৎ শুধু উন্নত কর্ডাটা প্রাণীদের মেরুদণ্ড থাকে, নটোকর্ড বিশিষ্ট অন্য কর্ডাটাদের মেরুদণ্ড থাকে না। এজন্য বলা হয়, সকল মেরুদণ্ডী প্রাণী কর্ডাটা পর্বের হলেও সকল কর্ডাটা পর্বের প্রাণী মেরুদণ্ডী নয়।

 ৩৬. পরিফেরা পর্বভুক্ত দুটি প্রাণীর নাম লেখ।

উত্তর: পরিফেরা পর্বভুক্ত দুটি প্রাণীর নাম হলো-
  • ১. Spongilla, ও 
  • ২. Scypha

৩৭. অ্যানেলিডা পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ। 

উত্তর: অ্যানেলিডা পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো- 
  • ১. দেহ নলাকার ও খণ্ডিত।
  • ২. নেফ্রিডিয়া নামক রেচন অঙ্গ থাকে। 

৩৮. অস্টিকথিস শ্রেণির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ। 

উত্তর: অস্টিকথিস শ্রেণির দুটি বৈশিষ্ট্য হলো- 
  • ১. মুখছিদ্র দেহের সম্মুখ প্রান্তে অবস্থিত।
  • ২. লেজের দুটি অংশ একই রকম অর্থাৎ হোমোসাকাল।

৩৯. তিমিকে স্তন্যপায়ী প্রাণী বলা হয় কেন?

উত্তর: তিমি একটি জলজ প্রাণী অর্থাৎ জলে বাস করে। কিন্তু এরা বাচ্চা প্রসব করে এবং বাচ্চা মাতৃস্তন্য দুগ্ধে লালিত হয়। এ কারণেই তিমিকে স্তন্যপায়ী প্রাণী বলা হয় ।

৪০. ইলিশ মাছ ও সি-হর্স একই শ্রেণিভুক্ত মাছ- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ইলিশ মাছ ও সি-হর্স একই শ্রেণিভুক্ত মাছ। কারণ দুটি মাছের মুখছিদ্র দেহের সম্মুখপ্রান্তে অবস্থিত। উভয় মাছেরই মাথার দুইপাশে চারজোড়া ফুলকা থাকে এবং ফুলকাগুলো কানকো দিয়ে ঢাকা থাকে। এছাড়াও উভয় মাছের লেজ হোমোসার্কাল ধরনের।

৪১. ক্রোমোজোম ও ক্রোমাটিড এর পার্থক্য কী?

উত্তর: কোষ বিভাজনের সময় নিউক্লিয়ার জালিকা ভেঙে যে সুতার মতো বস্তু সৃষ্টি হয় তাকে ক্রোমোজোম বলে। কোষ বিভাজনের প্রোফেজ ধাপে প্রতিটি ক্রোমোজোম লম্বালম্বি বিভক্ত হয়ে ক্রোমাটিড তৈরি হয়। সুতরাং ক্রোমোজোম নিউক্লিয়ার জালিকার অংশ আর ক্রোমাটিড ক্রোমোজোমের অংশ। 

৪২. জীবে মিয়োসিস কোষ বিভাজনের ফলে কী ঘটে?

উত্তর: মিয়োসিস কোষ বিভাজনে জননকোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে যায়। ফলে ভ্রূণ বা জাইগোটে ক্রোমোজোম সংখ্যা প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যার সমান থাকে। ফলে নির্দিষ্ট প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যার ধ্রুবতা বজায় থাকে।

৪৩. ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিসের দুটি পার্থক্য লেখ। 

উত্তর: নিজে করো

৪৪. অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন ঘটে এমন দুটি জীবের নাম লেখ। 

উত্তর: অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন ঘটে এমন দুটি জীব হচ্ছে-
  • ১. ইস্ট ও 
  • ২. অ্যামিবা।

৪৫. মিয়োসিস কোষ বিভাজন কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: যে কোষ বিভাজনে নিউক্লিয়াস দুবার এবং ক্রোমোজোম একবার বিভক্ত হয় এবং অপত্যকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের অর্ধেক হয় তাকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন বলে। এ বিভাজনে ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস পায় বলে এ ধরনের বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজনও বলা হয়। জনন মাতৃকোষ থেকে পুং ও স্ত্রী গ্যামেট উৎপন্ন হওয়ার সময় এ ধরনের কোষ বিভাজন হয়। 

৪৬. মাইটোসিস বিভাজনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: মাইটোসিস বিভাজনের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. এ প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি একবার মাত্র বিভাজিত হয়।
  • ২. মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা ও অপত্যকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান থাকে।

৪৭. বিষুবীয় অঞ্চল বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: কোষ বিভাজনে বিষুবীয় অঞ্চল বলতে কোষের অভ্যন্তরে মাইটোসিস বা মিয়োসিস বিভাজনের সময় কোষের কেন্দ্রস্থলের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলকে বুঝানো হয়। এই অঞ্চলেই ক্রোমোজোমগুলো বিভাজনের মধ্যবর্তী ধাপে সারিবদ্ধভাবে অবস্থান করে।

৪৮. মাইটোসিস কোষ বিভাজনের কোন ধাপে ক্রোমোজোমগুলো মেরুপ্রান্তে অবস্থান করে?

উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজনের অ্যানাফেজ পর্যায়ের কোষের দিকে অপত্য ক্রোমোজোমগুলো স্পিন্ডল যন্ত্রের মেরুপ্রান্তে অবস্থান নেয় এবং ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।

৪৯. মিয়োসিস কোথায় ঘটে?

উত্তর: মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রধানত ডিপ্লয়েড (2n) জীবের জনন কোষ বা গ্যামেট সৃষ্টির সময় জনন মাতৃকোষে ঘটে। সপুষ্পক উদ্ভিদের পরাগধানী ও ডিম্বকের মধ্যে এবং উন্নত প্রাণিদেহে শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয় এর মধ্যে মিয়োসিস ঘটে। এমনকি হ্যাপ্লয়েড (n) জীবের জাইগোটেও মিয়োসিস ঘটে। 

৫০. মিয়োসিস-২ কে মাইটোসিস বিভাজনের অনুরূপ বলা হয় কেন? 

উত্তর: মিয়োসিস কোষ বিভাজনের সময় একটি জনন মাতৃকোষ পরপর দুই ধাপে বিভাজিত হয়। প্রথম বিভাজনকে মিয়োসিস-১ এবং দ্বিতীয় বিভাজনকে মিয়োসিস-২ বলা হয়। প্রথম বিভাজনের সময় সৃষ্ট দুইটি অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক, যা পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিভাজনে প্রতিটি কোষ পুনরায় বিভাজিত হয়ে দুইটি অপত্যকোষের সৃষ্টি করে। অন্যদিকে মাইটোসিস কোষ বিভাজনেও মাতৃকোষ বিভাজিত হয়ে সমগুণসম্পন্ন দুটি অপত্যকোষ সৃষ্টি করে। এ কারণেই মিয়োসিস- ২ কে মাইটোসিস বিভাজনের অনুরূপ বলা হয়।

৫১. মানুষের দেহে অ্যামাইটোসিস ঘটে না কেন?

উত্তর: আদিকোষী ও এককোষী জীবদেহে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না। তাই এসব জীবের ক্ষেত্রে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন সম্পন্ন হয়। কিন্তু মানুষ হলো বহুকোষী এবং এদের দেহে সুগঠিত নিউক্লিয়াস বিদ্যমান। একারণেই মানুষের দেহে অ্যামাইটোসিস ঘটে না। 

৫২. মাইটোসিস বিভাজন কোথায় ঘটে?

উত্তর: মাইটোসিস বিভাজন প্রকৃত নিউক্লিয়াসযুক্ত জীবের দেহকোষে ঘটে। উদ্ভিদের বর্ধনশীল অংশের ভাজক টিস্যু যেমন- কাণ্ড, মূলের অগ্রভাগ, ভূণমুকুল ও ভূণমূল, বর্ধনশীল পাতা, মুকুল ইত্যাদিতে এ রকম বিভাজন দেখা যায়। প্রাণিদেহের দেহকোষে, ভূণের পরিবর্ধনের সময়, নিম্নশ্রেণির প্রাণীর ও উদ্ভিদের অযৌন জননের সময় এ ধরনের বিভাজন হয়।

৫৩. কোন কোন কোষে মাইটোসিস বিভাজন ঘটে না?

উত্তর: প্রাণীর স্নায়ুটিস্যুর স্নায়ুকোষ, স্তন্যপায়ী প্রাণীর পরিণত লোহিত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা এবং উদ্ভিদের স্থায়ী টিস্যুর কোষে মাইটোসিস বিভাজন ঘটে না।

৫৪. টেলোফেজ ধাপের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ। 

উত্তর: টেলোফেজ ধাপের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. এ ধাপে অপত্য ক্রোমোজোমগুলো বিপরীত মেরুতে এসে পৌছায়। 
  • ২. উভয় মেরুর ক্রোমোজোমকে ঘিরে নিউক্রিয়ার পর্দা এবং নিউক্লিওলাসের পুনঃআবির্ভাব ঘটে।

৫৫. মেটাফেজ ধাপের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: মেটাফেজ ধাপের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. এ ধাপে ক্রোমোজোমগুলো সবচেয়ে খাটো ও মোটা হয়।
  • 2.ক্রোমোজোমগুলো স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে আসে এবং সেন্ট্রোমিয়ারের সাথে তন্তু দিয়ে আটকে থাকে।

৫৬. কোষপ্রাচীর কীভাবে গঠিত হয়?

উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজনের টেলোফেজ ধাপের শেষে বিষুবীয় তলে এন্ডোপ্লাজমিক জালিকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলো জমা হয় এবং পরে এরা মিলিত হয়ে কোষপ্লেট গঠন করে। কোষপ্লেট পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয়ে কোষপ্রাচীর গঠন করে।

৫৭. DNA ও RNA-এর মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর: DNA ও RNA-এর মধ্যে দুটি পার্থক্য হলো-
DNA
  • ১. DNA দ্বি-সূত্রক।
  • ২. DNA তে অনুলিপনের মাধ্যমে নতুন হয় না।
RNA
  • ১. RNA একসূত্রক।
  • ২. RNA তে কোনো অনুলিপন DNA সৃষ্টি হয়।

৫৮. মাইটোসিস ও মিয়োসিস কোষ বিভাজনের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।

 উত্তর: নিজে করো

৫৯. প্রো-মেটাফেজ ধাপের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।

উত্তর: প্রো-মেটাফেজ ধাপের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো- 
  • ১. নিউক্লিয়ার পর্দা ও নিউক্লিওলাস প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়।
  • ২. এ ধাপে স্পিন্ডল যন্ত্রের আবির্ভাব ঘটে।

৬০. মেন্ডেলকে বংশগতির জনক বলা হয় কেন?

উত্তর: বংশগতি সম্বন্ধে এক সময় মানুষের ধারণা ছিল কাল্পনিক। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা দিয়েছেন কীভাবে পিতামাতার বৈশিষ্ট্য তার সন্তানসন্ততিতে সঞ্চারিত হয়। উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে গ্রেগর জোহান মেন্ডেল প্রথম বংশগতির ধারা সম্বন্ধে সঠিক ধারণা দেন। বর্তমানে বংশগতি সম্বন্ধে আধুনিক যে তত্ত্ব প্রচলিত আছে, তা মেন্ডেলের আবিষ্কৃত তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ জন্য মেন্ডেলকে বংশগতির জনক বলা হয়।

৬১. কোষ বিভাজন কত প্রকার ও কী কী?

উত্তর: জীবদেহে তিন ধরনের কোষ বিভাজন দেখা যায়, যথা-
  • ১. অ্যামাইটোসিস, 
  • ২. মাইটোসিস ও 
  • ৩. মিয়োসিস।

৬২. কোষ বিভাজন কী? বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় জীবের বৃদ্ধি ও প্রজননের উদ্দেশ্যে কোষের সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটে তাই কোষ বিভাজন। এককোষী জীবগুলো কোষ বিভাজনের দ্বারা একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি কোষে বিভক্ত হয় এবং এভাবে বংশবৃদ্ধি করে। বহুকোষী জীবের দেহকোষের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়ে জীবের সামগ্রিক বৃদ্ধি ঘটে। 

৬৩.অ্যামাইটোসিস ও মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ। 

উত্তর: অ্যামাইটোসিস ও মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মধ্য দুটি পার্থক্য হলো-
অ্যামাইটোসিস
  • ১. জটিল মাধ্যমিক পর্যায় ছাড়াই ঘটে।
  • ২. এ প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস ডাম্বেল 
মাইটোসিস
  • ১. জটিল ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে।
  • ২. নিউক্লিয়াস ডাম্বেল আকৃতির আকার ধারণ করে। গঠন তৈরি করে না।

৬৪. আকর্ষণ তন্তু সম্পর্কে ধারণা দাও।

উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজনের প্রো-মেটাফেজ ধাপে ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার স্পিন্ডল যন্ত্রের যেসব তন্তুর সাথে সংযুক্ত হয় সেগুলোই হলো আকর্ষণ তন্তু।

৬৫. প্রোফেজ ধাপের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।

উত্তর: প্রোফেজ ধাপের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয়।
  • ২. নিউক্লিয়ার জালিকা ভেঙে গিয়ে ক্রোমোজোম সৃষ্টি হয়। 

৬৬. অ্যাস্টার রশ্মি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজনের প্রো-মেটাফেজ ধাপে প্রাণিকোষে স্পিন্ডল যন্ত্র সৃষ্টি ছাড়াও পূর্বে বিভক্ত সেন্ট্রিওল দুটি দুই মেরুতে অবস্থান করে। এ সময়ে সেন্ট্রিওল দুটির চারদিক থেকে রশ্মি বিচ্ছুরিত হয়। একে অ্যাস্টার রশ্মি বলা হয়।

৬৭. প্রস্বেদন উদ্ভিদের কোন কোন স্থানে সংঘটিত হয়?

উত্তর: প্রস্বেদন প্রধানত পত্ররন্দ্রের মাধ্যমে হয়। এছাড়া কান্ড ও পাতার কিউটিকল এবং কাণ্ডের ত্বকে অবস্থিত লেন্টিসেল নামক এক বিশেষ ধরনের অঙ্গের মাধ্যমেও অল্প পরিমাণ প্রস্বেদন হয়।

৬৮. পানি শোষণ ও খনিজ লবণ শোষণের সম্পর্ক কেমন?

উত্তর: খনিজ লবণগুলো মাটিস্থ পানিতে দ্রবীভূত থাকলেও পানি শোষণের সঙ্গে উদ্ভিদের লবণ শোষণের কোনো সম্পর্ক নেই, দুটি প্রক্রিয়াই ভিন্নধর্মী। উদ্ভিদ কখনো লবণের সম্পূর্ণ অণুকে শোষণ করতে পারে না। লবণগুলো কেবল আয়ন হিসেবে শোষিত হয়। উদ্ভিদ মাটির রস থেকে খনিজ লবণ শোষণ দুইভাবে সম্পন্ন করে। 
যথা:
  • (১) নিষ্ক্রিয় শোষণ; 
  • (২) সক্রিয় শোষণ। 

৬৯. অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: বিভিন্ন প্রয়োজনীয় লবণ দ্রবীভূত অবস্থায় জীবকোষে প্রবেশ করে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায়। প্লাজমা পর্দা দিয়ে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় পানিতে দ্রবীভূত বিভিন্ন খনিজ লবণ কোষের মধ্যে প্রবেশ করে বা বাইরে আসে। সুতরাং কোষের মধ্যে বিভিন্ন জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলোকে সচল রাখার জন্য অভিস্রবণের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

৭০. উদ্ভিদ দেহে পানি শোষণের প্রয়োজনীয়তা কী?

উত্তর: উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি ও পানিতে দ্রবীভূত খনিজ লবণ শোষণ করে জাইলেমে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে পাতায় যায়। সেই পানি কাজে লাগিয়ে পাতায় সালোকসংশ্লেষণ হয়। সুতরাং পাতায় পানি সরবরাহের জন্য উদ্ভিদের পানিশোষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৭১. আতর ছড়ালে সুবাস ছড়িয়ে পড়ে কেন?

উত্তর: ব্যাপন প্রক্রিয়ার কারণে আতর ছড়ালে তার সুবাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপন হলো একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে বেশি ঘনত্বের স্থান থেকে কম ঘনত্বের স্থানের অণুগুলো ছড়িয়ে পড়া। আতরের নিকটবর্তী স্থানে আতরের অণুগুলো অধিক ঘনত্ব সম্পন্ন হওয়ায় ব্যাপন প্রক্রিয়ায় আশেপাশেরকম ঘনত্বের স্থানের দিকে ধাবিত হয়। এর ফলে আতরের সুবাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

৭২. ব্যাপনের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ কর।

উত্তর: ব্যাপনের দুটি গুরুত্ব হলো-
  • ১. ব্যাপন ক্রিয়ার দ্বারা কোষে অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড বের হয়ে যায়।
  • ২. উদ্ভিদদেহে শোষিত পানি বাষ্পাকারে প্রস্বেদনের মাধ্যমে দেহ থেকে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় বের করে দেয়।

৭৩. পর্দা কত প্রকার ও কী কী?

উত্তর: পর্দাকে সাধারণত তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
  • ১. অভেদ্য পর্দা, 
  • ২. ভেদ্য পর্দা ও 
  • ৩. অর্ধভেদ্য পর্দা।

৭৪. সেলুলোজকে পানিগ্রাহী পদার্থ বলা হয় কেন?

উত্তর: সেলুলোজকে পানিগ্রাহী পদার্থ বলা হয়। কারণ, সেলুলোজ তরল পদার্থের সংস্পর্শে এলে তা সহজেই তরল পদার্থ অথবা পানি শুষে নেয়, আবার তরল পদার্থের অভাবে সংকুচিত হয়ে যায়।

৭৫. সক্রিয় শোষণ ও নিষ্ক্রিয় শোষণের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর: সক্রিয় শোষণ ও নিষ্ক্রিয় শোষণের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ-
সক্রিয় শোষণ
  • ১. বিপাকীয় শক্তির প্রয়োজন হয়।
  • ২. রাসায়নিক প্রক্রিয়া।
নিষ্ক্রিয় শোষণ
  • ১. বিপাকীয় শক্তির প্রয়োজন হয় না।
  • ২. ভৌত প্রক্রিয়া।

৭৬. প্রস্বেদনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা উল্লেখ কর । 

উত্তর: প্রস্বেদনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিম্নরূপ-
  • ১. প্রস্বেদনের ফলে কোষরষের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।
  • ২. প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদ তার দেহ থেকে পানিকে বের করে অতিরিক্ত পানির চাপ থেকে মুক্ত থাকে।

৭৭. ব্যাপনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: ব্যাপনের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. ব্যাপন প্রক্রিয়ায় পদার্থের অণু উচ্চ ঘনত্বের স্থান থেকে নিম্ন ঘনত্বের স্থানের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
  • ২. ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি চোষক শক্তির সৃষ্টি হয় যার মাধ্যমে উদ্ভিদ সহজেই মাটি থেকে পাতায় পানি পরিবহন করতে পারে।

৭৮. প্রস্বেদন কীভাবে আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে?

উত্তর: প্রস্বেদনের ফলে প্রতিনিয়ত উদ্ভিদদেহ থেকে পানি তথা জলীয়বাষ্প পরিবেশে নিষ্কাশিত হচ্ছে। এ জলীয়বাষ্প আবহাওয়াকে আর্দ্র রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ প্রস্বেদন পরিবেশকে আর্দ্র ও ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ঘটায়। এভাবে উদ্ভিদের প্রস্বেদন আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে।

৭৯. প্রাণীদের শ্বসনে ব্যাপন কী ভূমিকা পালন করে?

উত্তর: প্রাণীদের শ্বসনের সময় অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের আদান- প্রদান, রক্ত থেকে পুষ্টি উপাদান, অক্সিজেন প্রভৃতি লসিকায় বহন এবং লসিকা থেকে কোষে পরিবহন করা ব্যাপন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়।

৮০. উদ্ভিদের পানি ও লবণ শোষণ প্রক্রিয়া ভিন্ন কেন?

উত্তর: উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য পানি ও খনিজ লবণের প্রয়োজন। উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ লবণের উৎস হচ্ছে মাটিস্থ পানি। মাটিস্থ পানিতে খনিজ লবণগুলো দ্রবীভূত থাকলেও পানি শোষণের সঙ্গে উদ্ভিদের লবণ শোষণের কোনো সম্পর্ক নেই, দুটো প্রক্রিয়াই ভিন্ন। কারণ, উদ্ভিদ কখনো লবণের সম্পূর্ণ অণুকে শোষণ করতে পারে না। লবণগুলো কেবল আয়ন হিসেবে শোষিত হয়। কিন্তু উদ্ভিদ পানির সম্পূর্ণ অণুকে শোষণ করে।

৮১. প্রস্বেদন কীভাবে উদ্ভিদদেহকে ঠান্ডা রাখে?

উত্তর: প্রস্বেদনের মাধ্যমে উদ্ভিদ তার প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত পানি পাতায় অবস্থিত রন্ধ্র অর্থাৎ পত্ররন্দ্রের মাধ্যমে বের করে দেয়। ফলে পাতা অধিক তাপমাত্রা থেকে রক্ষা পায় এবং উদ্ভিদদেহকে ঠান্ডা রাখে।

৮২. অভিস্রবণ ও প্রস্বেদনের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ। 

উত্তর: অভিস্রবণ ও প্রস্বেদনের মধ্যে দুটি পার্থক্য হলো-
অভিস্রবণ

  • ১. অভিস্রবণের মাধ্যমে উদ্ভিদ 
  • ২. প্রস্বেদন তিনভাবে ঘটে।
প্রস্বেদন
  • ১. প্রস্বেদনের মাধ্যমে উদ্ভিদ অতিরিক্ত খনিজ লবণ ও পানি শোষণ করে। পানি বাষ্পাকারে বায়ুমণ্ডল ত্যাগ করে।
  • ২. অভিস্রবণ দুইভাবে ঘটে।
৮৩. প্রস্বেদনের প্রকারভেদ উল্লেখ কর।
উত্তর: প্রস্বেদন কোথায় সংঘটিত হচ্ছে তার ভিত্তিতে প্রস্বেদন তিন প্রকার। 
যথা- 
  • ১. পত্ররন্দ্রীয় প্রস্বেদন,
  • ২. ত্বকীয় বা কিউটিকুলার প্রস্বেদন ও 
  • ৩. লেন্টিকুলার প্রস্বেদন।

৮৪. পানি পরিবহনে প্রস্বেদন গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তর: উদ্ভিদের পানি পরিবহনে প্রস্বেদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রস্বেদনের ফলে খাদ্য তৈরির জন্য পাতায় অবিরাম পানি সরবরাহ সম্ভব হয়। প্রস্বেদনের ফলে জাইলেম বাহিকায় পানির যে টান সৃষ্টি হয়, তা মূলরোম কর্তৃক পানি শোষণ ও উদ্ভিদের শীর্ষে পরিবহনে সাহায্য করে।

৮৫. কোষপ্রাচীরকে ভেদ্য পর্দা বলা হয় কেন?

উত্তর: ভেদ্য পর্দা হলো ঐসব পর্দা যার মধ্য দিয়ে দ্রাবক ও দ্রব উভয়েরই অণু সহজে চলাচল করতে পারে। কোষপ্রাচীরের মধ্য দিয়েও দ্রাবক ও দ্রব উভয়ের অণুই সহজে চলাচল করতে পারে বিধায় কোষপ্রাচীরকে ভেদ্য পর্দা বলা হয়। 

৮৬. ডিমের খোসার ভিতরের পর্দাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলা হয় কেন?

উত্তর: যে পর্দা দিয়ে কেবল দ্রবণের দ্রাবক অণু চলাচল করতে পারে কিন্তু দ্রব অণু চলাচল করতে পারে না তাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে। ডিমের খোসার ভিতরের পর্দার মধ্য দিয়েও দ্রাবক অণু চলাচল করতে পারে কিন্তু দ্রব অণু চলাচল করতে পারে না। এ কারণেই ডিমের এ পর্দাকে অর্ধভেদ্য বলা হয়।

 ৮৭. প্রস্বেদন কীভাবে বৃষ্টিপাত ঘটাতে সাহায্য করে?

উত্তর: উদ্ভিদ মূলরোমের সাহায্যে মাটি থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি শোষণ করে। শোষিত পানির কিছু অংশ তার বিভিন্ন বিপাকীয় কাজে ব্যবহার করে এবং বাকি অংশ পত্ররন্দ্রের মাধ্যমে বাষ্পাকারে বায়ুমণ্ডলে ত্যাগ করে। পরবর্তীতে এই বাষ্প ঘনীভূত হয়ে প্রথমে মেঘ এবং মেঘ থেকে বৃষ্টি আকারে পৃথিবীতে ফিরে আসে। এভাবে প্রস্বেদন বৃষ্টিপাত ঘটাতে সাহায্য করে। 

৮৮. দুটি কলয়েডধর্মী পদার্থের নাম লেখ।

উত্তর: দুটি কলয়েডধর্মী পদার্থ হলো- 
১. স্টার্চ ও ২. জিলেটিন। 

৮৯. অভিস্রবণের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: অভিস্রবণের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. অভিস্রবণ কেবলমাত্র তরলের ক্ষেত্রে ঘটে।
  • ২. দ্রাবক পদার্থের অণুগুলো কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে অধিক ঘনত্বের দিকে যায়।

৯০. জাইলেম ও ফ্লোয়েমকে উদ্ভিদের পরিবহনের পথ বলা হয় কেন?

উত্তর: উদ্ভিদের মূলরোম দ্বারা শোষিত পানি ও খনিজ লবণ মূল থেকে পাতায় পৌঁছানো এবং পাতায় তৈরি খাদ্যবস্তু সারাদেহে ছড়িয়ে পড়াকে পরিবহন বলে। জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে উদ্ভিদে পরিবহন ঘটে। জাইলেমের মাধ্যমে মূল দ্বারা শোষিত পানি পাতায় যায় এবং ফ্লোয়েম দ্বারা পাতায় উৎপন্ন তরল খাদ্য সারাদেহে পরিবাহিত হয়। এ কারণে জাইলেম ও ফ্লোয়েমকে উদ্ভিদের পরিবহনের পথ বলা হয়।

৯১. হাইড্রোফিলিক পদার্থ কী? উদাহরণ দাও।

উত্তর: যেসব পদার্থ পানি শোষণ করে স্ফীত হয় তাদেরকে হাইড্রোফিলিক পদার্থ বলে। যেমন- সেলুলোজ, স্টার্চ, আঠা, প্রোটিন, জেলাটিন ইত্যাদি।

৯২. অভিস্রবণের দুটি গুরুত্ব লেখ।

উত্তর: অভিস্রবণের দুটি গুরুত্ব হলো-
  • ১. অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার দ্বারা উদ্ভিদ কোষের রসস্ফীতি ঘটে।
  • ২. অভিস্রবণের মাধ্যমে প্রাণীর অস্ত্রে খাদ্য শোষিত হতে পারে। 

৯৩. বীজের প্রধান তাৎপর্য কী?

উত্তর: বীজের প্রধান তাৎপর্য হলো বীজ প্রতিটি উদ্ভিদের পরবর্তী বংশধরকে তার ভেতরে ভূণমুকুল হিসেবে রক্ষা করে এবং অনুকূল পরিবেশে অঙ্কুরিত হয়ে আবার নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি করে।

৯৪. আতা ও আনারস ফলের সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: আতা একটি গুচ্ছ ফল। এটি একাধিক পৃথক পৃথক গর্ভাশয় থেকে উৎপন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একগুচ্ছ ফল। এ ফলগুলো একটি বোঁটার উপর গুচ্ছাকার অবস্থায় থাকে।
আনারস একটি যৌগিক ফল। এখানে পুষ্পমঞ্জরীর সম্পূর্ণ অংশটি ফলে পরিণত হয়।

৯৫. যৌন প্রজনন ও অযৌন প্রজননের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: যৌন প্রজনন ও অযৌন প্রজননের মধ্যে পার্থক্য হলো:
যৌন প্রজনন
  • ক. জনন কোষ বা গ্যামেট সৃষ্টি হয়।
  • খ. উচ্চ শ্রেণির জীবের মধ্যে ঘটে।
অযৌন প্রজনন
  • ক. গ্যামেট উৎপন্ন হয় না।
  • খ. নিম্নশ্রেণির জীবের মধ্যে ঘটে।

৯৬. বীজকে আগে পানিতে না ভিজিয়ে মাটিতে পুঁতলে কী হবে?

উত্তর: বীজকে পানিতে না ভিজিয়ে মাটিতে পুঁতলে বীজ অঙ্কুরিত হবে না। বীজ পানি শোষণের ফলে বীজে সঞ্চিত খাদ্যের বিপাক শুরু হয় এবং ভ্রুণ জাগ্রত হয়ে অঙ্কুরিত হয়।

৯৭. পতঙ্গ পরাগায়ন কীভাবে ঘটে?

উত্তর: বর্ণ ও গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে মধু সংগ্রহের জন্য ফুলে পতঙ্গের আগমন ঘটে এবং এতে তাদের দেহে পরাগরেণু লেগে যায় এবং পরাগায়ন ঘটায়। এই পতঙ্গ যখন একই প্রজাতির অন্য গাছের ফুলে যায়, তখন তাদের গায়ে লেগে থাকা পরাগরেণু ওই ফুলের গর্ভমুণ্ডে লেগে গিয়ে পরাগায়ন ঘটায়।

৯৮. মৌমাছি কীভাবে পরপরাগায়নে সহায়তা করে?

উত্তর: মৌমাছি মধু সংগ্রহের জন্য ফুলের মধ্যে প্রবেশ করার সময় তার দেহে পরাগরেণু লেগে যায়। ওই মৌমাছি মধু সংগ্রহের জন্য যখন একই প্রজাতির অন্য ফুলে যায় তখন তার গায়ে লেগে থাকা পরাগরেণুগুলো ওই ফুলের গর্ভমুণ্ডে লেগে পরপরাগায়ন ঘটায়। এভাবে মৌমাছি পরপরাগায়নে সাহায্য করে।

৯৯. অঙ্গজ জনন সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর: কোনো ধরনের অযৌন রেণু বা জননকোষ সৃষ্টি না করে দেহের অংশ খণ্ডিত হয়ে বা কোনো অঙ্গ রূপান্তরিত হয়ে যে জনন ঘটে, তাকে অঙ্গজ জনন বলে। এ ধরনের জনন প্রাকৃতিক নিয়মে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটলে তাকে প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন বলে। আবার যখন কৃত্রিমভাবে অঙ্গজ জনন ঘটানো হয় তখন তাকে কৃত্রিম অঙ্গজ জনন বলে।

১০০. প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন ও কৃত্রিম অঙ্গজ জননের দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর: প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন ও কৃত্রিম অঙ্গজ জননের দুটি পার্থক্য হলো: কৃত্রিম অঙ্গজ জনন
প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন
  • ১. উৎপন্ন উদ্ভিদ হুবহু মাতৃউদ্ভিদের গুণসম্পন্ন হয়।
  • ২. নতুন কোনো বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ 
কৃত্রিম অঙ্গজ জনন
  • ১. উৎপন্ন উদ্ভিদ হুবহু মাতৃউদ্ভিদের মতো হয় না।
  • ২. নতুন বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ ঘটানো ঘটে না।

১০১. বাহকের মাধ্যমে কীভাবে পরাগায়ন ঘটে?

উত্তর: বায়ু, পানি, কীট-পতঙ্গ, পাখি, বাদুড়, শামুক এমনকি মানুষ পরাগায়নের বাহক বা মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে। মধু খেতে অথবা সুন্দর রঙের আকর্ষণে পতঙ্গ বা পাখি ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। এ সময়ে পরাগরেণু বাহকের গায়ে লেগে যায়। এই বাহকটি যখন একই প্রজাতির অন্য
ফুলে গিয়ে বসে তখন পরাগরেণু ঐ ফুলের গর্ভমুণ্ডে লেগে যায়। এভাবে তাদের অজান্তেই পরাগায়নের কাজটি হয়ে যায়।

১০২. পর-পরাগায়নের মাধ্যমে কীভাবে উদ্ভিদে বৈচিত্র্যতার সৃষ্টি হয়?

উত্তর: পর-পরাগায়নে একই প্রজাতির দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে পরাগায়ন ঘটে। তাই এর ফলে যে বীজ উৎপন্ন হয় তা নতুন গুণসম্পন্ন এবং এ বীজ থেকে যে গাছ জন্মায় তাও নতুন গুণসম্পন্ন হয়। এভাবে পর পরাগায়নের মাধ্যমে উদ্ভিদে বৈচিত্র্যতার সৃষ্টি হয়।

১০৩. বৃতির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: বৃতির দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. বৃতি ফুলের সবচেয়ে বাইরের স্তবক।
  • ২. এরা সবুজ রঙের হয়।

১০৪. অঙ্গজ জনন কত প্রকার ও কী কী?

উত্তর: অঙ্গজ জননকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। 
যথা- 
  • ১. প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন এবং 
  • ২. কৃত্রিম অঙ্গজ জনন । 

১০৫. অযৌন জনন কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় দুটি ভিন্নধর্মী জনন কোষের মিলন ছাড়াই জনন সম্পন্ন হয় তাকে অযৌন জনন বলে। এটি সাধারণত এককোষী জীব ও কিছু বহুকোষী জীবের মধ্যে ঘটে। তবে নিম্নশ্রেণির জীবে অযৌন জননের প্রবণতা বেশি। এটি স্পোর উৎপাদন ও অঙ্গজ জনন এ ধরনের হয়।

১০৬. রূপান্তরিত কান্ড কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: উদ্ভিদের সাধারণ কাজ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পন্ন করার জন্য কাণ্ডের আকৃতিগত ও অবস্থাগত পরিবর্তন ঘটে। এই ধরনের পরিবর্তিত কাণ্ডকে বলা হয় রূপান্তরিত কাণ্ড। যেমন- টিউবার, রাইজোম, বাল্ব, স্টোলন ইত্যাদি।

১০৭. ফুল সম্পর্কে ধারণা দাও।

উত্তর: প্রজননের জন্য রূপান্তরিত বিশেষ ধরনের বিটপই হচ্ছে ফুল। একটি আদর্শ ফুলে ৫টি অংশ থাকে। যে ফুলে ৫টি অংশ থাকবে তাকে সম্পূর্ণ ফুল বলে। আর যে ফুলে ৫টি অংশের মধ্যে একটি বা দুটি অংশ না থাকে সে ফুলকে অসম্পূর্ণ ফুল বলে। ফুল থেকে ফল এবং ফল থেকে বীজ হয়। আর বীজ থেকে নতুন গাছের জন্ম হয়।

১০৮. সবৃন্তক ফুল ও অবৃন্তক ফুলের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর: সবৃন্তক ফুল ও অবৃন্তক ফুলের মধ্যে দুটি পার্থক্য হলো-
সবৃন্তক ফুল
  • ১. ফুলে বৃত্ত থাকে।
  • ২. ধুতুরা, জবা।
অবৃন্তক ফুল
  • ১. ফুলে বৃন্ত থাকে না।
  • ২. কচু।

১০৯. পরাগায়নের মাধ্যম বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: পরাগরেণু স্থানান্তরের কাজটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাধ্যমের দ্বারা হয়ে থাকে। যে বাহক পরাগরেণু বহন করে গর্তমুণ্ড পর্যন্ত নিয়ে যায় তাকে পরাগায়নের মাধ্যম বলে। যেমন- বায়ু, পানি, কীট-পতঙ্গ, পাখি, বাদুড়, শামুক এমনকি মানুষ এ ধরনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে।

 ১১০. উদ্ভিদে পর-পরাগায়ন গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তর: পর-পরাগায়নের সময় একই প্রজাতির দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে পরাগায়ন বা পরাগ সংযোগ ঘটে। এর ফলে উদ্ভিদের নতুন চরিত্রের সৃষ্টি হয়, বীজের অঙ্কুরোদগম হার বৃদ্ধি পায়, বীজ অধিক জীবনী শক্তিসম্পন্ন হয় ও নতুন প্রজাতির সৃষ্টি হয়। এ কারণেই উদ্ভিদে পর-পরাগায়ন গুরুত্বপূর্ণ।

১১১. প্রকৃত ফল ও অপ্রকৃত ফলের দুটি পার্থক্য লেখ। 

উত্তর: প্রকৃত ফল ও অপ্রকৃত ফলের দুটি পার্থক্য হলো-
প্রকৃত ফল
  • ১. শুধু গর্ভাশয় ফলে পরিণতহলে তাকে প্রকৃত ফল বলে।
  • ২. উদাহরণ: আম, কাঁঠাল।
অপ্রকৃত ফল
  • ১.গর্ভাশয় ছাড়া ফুলের অন্যান্য অংশ পুষ্ট হয়ে যখন ফলে পরিণত হয় তখন তাকে অপ্রকৃত ফল বলে।
  •  ২.উদাহরণ: আপেল, চালতা।

১২৫. মৃদগত অঙ্কুরোদগম সম্পর্কে ধারণা দাও।

উত্তর: যখন ভূণকাণ্ড মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসে কিন্তু বীজপত্রটি মাটির ভিতরে থেকে যায়, তখন তাকে মৃদগত অঙ্কুরোদগম বলে। যেমন- ছোলা, ধান ইত্যাদি।

১২৬. হরমোনের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।

উত্তর: বহুকোষী প্রাণীদের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সমন্বয় সাধক হিসেবে স্নায়ুতন্ত্র
ও বিবিধ হরমোন কাজ করে। বহুকোষী উদ্ভিদদেহে স্নায়ুতন্ত্র অনুপস্থিত থাকায় হরমোনই একমাত্র সমন্বয় সাধক হিসেবে কাজ করে। জীবের বৃদ্ধি, প্রজনন, বংশবিস্তার, অনুভূতি গ্রহণ ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য আছে। এ কাজগুলো করার জন্য হরমোনের গুরুত্ব অপরিসীম। হরমোন বহুকোষী জীবদেহের বিভিন্ন অংশের কার্যের সমন্বয় সাধনের ভূমিকা গ্রহণ করায় হরমোনকে রাসায়নিক সমন্বয়কও বলে। জীবের জীবন চক্রের প্রতিটি ধাপে হরমোনের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকে বলে হরমোনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। 

১২৭. অক্সিন ও জিব্বেরেলিনের কাজ উল্লেখ কর।

উত্তর: অক্সিনের কাজ- 
(i) আলোর দিকে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ঘটায়
 (ii) শাখা কলমে মূল গজায় 
(iii) অকালে ফলঝরা রোধ করে।

জিব্বেরেলিনের কাজ- 
(i) উদ্ভিদের পর্বমধ্যগুলোর দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি ঘটিয়ে খর্বাকার 
 (ii)উদ্ভিদের দৈর্ঘ্যবৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। 
(iii) বীজের সুপ্তাবস্থা কাটাতে সাহায্য করে।

১২৮. সিন্যাপস বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: একটি স্নায়ুকোষের অ্যাক্সন অন্য একটি স্নায়ুকোষের ডেনড্রনের সাথে মিলিত হওয়ার স্থানকে সিন্যাপস বলে। সিন্যাপসের মধ্য দিয়েই একটি নিউরন থেকে স্নায়ু উদ্দীপনা পরবর্তী নিউরনে প্রবাহিত হয়।

১২৯. অ্যাক্সন ও ডেনড্রনের মধ্যে দুটি পার্থক্য উল্লেখ কর। 

উত্তর: অ্যাক্সন ও ডেনড্রন এর মধ্যে পার্থক্য:
অ্যাক্সন
  • ১. কোষদেহ থেকে উৎপন্ন একটি 
  • ২. একটি নিউরনে একটি অ্যাক্সন 
ডেনড্রন
  • ১. কোষদেহ থেকে উৎপন্ন একাধিক লম্বা প্রলম্বিত অংশ। 
  • ২. একটি নিউরনের অসংখ্য ডেনড্রন থাকে।

১৩০. উদ্ভিদে ইথিলিনের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: উদ্ভিদে ইথিলিনের ভূমিকা অপরিসীম। ইথিলিন হরমোনটি গ্যাসীয় পদার্থ। এটি ফল পাকাতে সাহায্য করে। এ হরমোন ফল, ফুল, বীজ, পাতা ও মূলে পাওয়া যায়। এর প্রভাবে চারাগাছে বিকৃত বৃদ্ধি লক্ষ করা যায়।

 ১৩১. গ্রে ম্যাটার এবং হোয়াইট ম্যাটার বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের যে অংশে কেবল নিউরনের কোষদেহ থাকে তাকে গ্রে ম্যাটার এবং যে অংশে কেবল স্নায়ুতন্তু থাকে তাকে হোয়াইট ম্যাটার বলে। ১৩২. মস্তিষ্কের মাধ্যমে কীভাবে বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রম পরিচালিত হয়? অথবা, মস্তিষ্ককে স্নায়ুতন্ত্রের কেন্দ্র বলা হয় কেন?
উত্তর: মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ সারাদেহ থেকে অনুভূতি স্নায়ু, মেরুরজ্জুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে এসে পৌঁছায় এবং মস্তিষ্কের প্রেরিত আদেশের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রম চালিত হয়। একারণেই, মস্তিষ্ককে স্নায়ুতন্ত্রের কেন্দ্র বলা হয়। ১৩৩. স্নায়ুতন্ত্রের শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।
উত্তর: স্নায়ুতন্ত্রকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
১. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র,
২. প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র ও
৩. স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র।

১৩৪. প্রতিবর্ত ক্রিয়াকে সমন্বিত কার্যক্রম বলা হয় কেন?

উত্তর: প্রতিটি প্রতিবর্ত ক্রিয়ার পাঁচটি অংশ থাকে। 
যথা-
  •  ১. গ্রাহক যন্ত্র; 
  • ২. অনুভূতিবাহী স্নায়ু, 
  • ৩. প্রতিবর্ত কেন্দ্র, 
  • ৪. আজ্ঞাবাহী স্নায়ু এবং 
  • ৫. সাড়া প্রদানকারী অঙ্গ। 
এই পাঁচটি অংশের যেকোনো একটির অভাবে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার কাজ সঠিকভাবে হতে পারে না। এজন্য প্রতিবর্ত ক্রিয়াকে সমন্বিত কার্যক্রম বলা হয়।

১৩৫. পশ্চাৎ মস্তিষ্কের কতটি অংশ ও কী কী? 

উত্তর: পশ্চাৎ মস্তিষ্কের অংশ তিনটি। যথা-
  • ১. সেরিবেলাম, 
  • ২. পনস ও
  •  ৩. মেডুলা বা সুষুম্নাশীর্ষ। 
১৩৬. অক্সিনের দুটি কাজ উল্লেখ কর। উত্তর: অক্সিনের দুটি কাজ হলো-
  • ১. অক্সিন প্রয়োগে শাখা কলমে মূল গজায়।
  • ২. ফলের অকালে ঝরে পড়া রোধ হয়।

১৩৭. উদ্ভিদে জিব্বেরেলিন হরমোনের দুটি গুরুত্ব লেখ।

উত্তর: উদ্ভিদে জিব্বেরেলিন হরমোনের দুটি গুরুত্ব হলো-
  • ১. জিব্বেরেলিন এর প্রভাবে উদ্ভিদের পর্বমধ্যগুলো দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়।
  •  ২. বীজের সুপ্তাবস্থা কাটাতে সাহায্য করে।

১৩৮. সিন্যাপস বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: একটি স্নায়ুকোষের অ্যাক্সন অন্য একটি স্নায়ুকোষের ডেনড্রাইটের সাথে মিলিত হওয়ার স্থানকে সিন্যাপস বলে। সিন্যাপসের মাধ্যমেই স্নায়ু তাড়না এক স্নায়ুকোষ থেকে অন্য স্নায়ুকোষে পরিবাহিত হয়।

১৩৯. অ্যাক্সন কী? বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর: কোষদেহ থেকে উৎপন্ন লম্বা সুতার মতো অংশকে অ্যাক্সন বলে। অ্যাক্সনের যে প্রান্তে কোষদেহ থাকে তার বিপরীত প্রান্ত থেকে শাখা বের হয়। সাধারণত একটি নিউরনে একটিমাত্র অ্যাক্সন থাকে।

১৪০. পনসকে মস্তিষ্কের যোজক বলা হয় কেন?

উত্তর: পনস মানবদেহে লঘু মস্তিষ্কের সামনে ও নিচে অবস্থিত। এটি গুরুমস্তিষ্ক, লঘুমস্তিষ্ক ও মধ্যমস্তিষ্ককে সুষুম্মা শীর্ষকের সাথে সংযোজিত করে। এ কারণে পনসকে মস্তিষ্কের যোজক বলা হয়।

১৪১. হাতে পিন ফোটামাত্র আমরা হাত টেনে নিই কেন?

উত্তর: হাতে পিন ফোটামাত্র আমাদের হাত টেনে নেওয়ার কারণ হলো প্রতিবর্ত ক্রিয়া। আমাদের হাতের চামড়ায় পিন ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু অনুভূতিবাহী স্নায়ু উদ্দীপনা গ্রহণ করে। এ উদ্দীপনা অনেকগুলো পরস্পর সংযুক্ত স্নায়ুকোষের মাধ্যমে অনেকগুলো আজ্ঞাবাহী কোষে প্রবাহিত হয়। এসব আজ্ঞাবাহী স্নায়ু পেশিতে উদ্দীপনা বহন করে হাত সরিয়ে আনে। 

১৪২. রেচন কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: রেচন বলতে দেহের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে বোঝায়। জীবদেহে বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ার ফলে কিছু বর্জ্য সৃষ্টি হয়, যেমন- কার্বন ডাইঅক্সাইড, ইউরিয়া ও ইউরিক এসিড, অতিরিক্ত পানি ও লবণ। এসব পদার্থ দেহে জমে থাকলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এগুলো রেচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়।

১৪৩. উদ্ভিদের জীবনচক্রের পর্যায়গুলো উল্লেখ কর।

উত্তর: উদ্ভিদের জীবনচক্রের পর্যায়গুলো হলো- 
  • ১. অঙ্কুরোদগম,
  • ২. পুষ্পায়ন,
  • ৩. ফল সৃষ্টি,
  • ৪. বার্ধক্য প্রাপ্তি ও
  • ৫. সুপ্তাবস্থা।

১৪৪. স্নায়ুতন্ত্র কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: প্রাণিদেহের যে তন্ত্র দেহের বিভিন্ন অঙ্গের সংযোগ রক্ষা করে, বিভিন্ন জৈবিক কার্যাবলির সমন্বয় সাধন করে এবং উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করার মাধ্যমে পরিবেশের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে তাকে স্নায়ুতন্ত্র বলে।

১৪৫. নিউরনের কতটি অংশ ও কী কী?

উত্তর: নিউরন দুটি অংশ নিয়ে গঠিত। 
যথা- 
  • ১. কোষদেহ ও 
  • ২. প্রলম্বিত অংশ। 
প্রলম্বিত অংশ আবার দুই প্রকার-
  •  (i) অ্যাক্সন ও
  •  (ii) ডেনড্রন।

১৪৬. নিউরনের দুটি কাজ উল্লেখ কর।

উত্তর: নিউরনের দুটি কাজ হলো-
  • ১. প্রাণিদেহের ভিতরের ও বাইরের পরিবেশের সাথে সংযোগ রক্ষা করা। 
  • ২. মস্তিষ্কে স্মৃতিধারণ করা।

১৪৭. কোষদেহের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: কোষদেহের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. কোষদেহ কোষ আবরণী, সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস দ্বারা গঠিত।
  •  ২. কোষে সেন্ট্রিওল থাকে না।

১৪৮. মস্তিষ্কের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: মস্তিষ্কের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
  • ১. মস্তিষ্ক হলো সমগ্র স্নায়ুতন্ত্রের চালক,
  • ২. মস্তিষ্ক মেনিনজেস নামক পর্দা দ্বারা আবৃত।

১৪৯. সেরিব্রাম ও সেরিবেলাম এর মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ। 

উত্তর: সেরিব্রাম ও সেরিবেলাম এর মধ্যে দুটি পার্থক্য হলো-
সেরিব্রাম
  • ১. অগ্রমস্তিষ্কের অংশ।
  • ২. মস্তিষ্কের অধিকাংশ জুড়ে 
সেরিবেলাম
  • ১. পশ্চাৎ মস্তিষ্কের অংশ।
  • ২. সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের নিচে অবস্থান অবস্থিত।

১৫০. দেহ থেকে রেচন পদার্থ অপসারণ করা জরুরি কেন?

উত্তর: রেচন পদার্থ হলো সেসব পদার্থ যেগুলো দেহের জন্য ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয়। বিপাকের ফলে পানি, কার্বন ডাইঅক্সাইড, ইউরিয়া প্রভৃতি দূষিত পদার্থ দেহে প্রস্তুত হয়। এগুলো নিয়মিত ত্যাগ না করলে স্বাস্থ্যহানি ঘটে। এইসব দূষিত পদার্থ দেহের মধ্যে জমে বিষক্রিয়া দেখা দেয় এবং এর ফলে মৃত্যুও হতে পারে। এজন্য দেই থেকে রেচন পদার্থ অপসারণ করা জরুরি।

১৫১. শীতের সকালে স্বচ্ছ আয়নার উপর নিঃশ্বাস ছাড়লে তা অস্বচ্ছ দেখায় কেন?

উত্তর: শীতের সকালে স্বচ্ছ আয়নার উপর নিঃশ্বাস ছাড়লে তা অস্বচ্ছ দেখায়। কারণ, আমাদের নিঃশ্বাসের বায়ুর সাথে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয় বাষ্প বের হয়। জলীয় বাষ্প ঠাণ্ডা কাচে জলীয় কণার সৃষ্টি করে ফলে আয়নাটি ঘোলাটে ও অস্বচ্ছ দেখায়। কিছুক্ষণ পর আয়না থেকে জলীয় কণা উবে গেলে আয়নাটি আবার স্বচ্ছ দেখায়।

১৫২. গ্যাসীয় ফাইটোহরমোন বলতে কী বুঝায় ?

উত্তর: গ্যাসীয় ফাইটোহরমোন বলতে সেসব পদার্থকে বোঝায় যেগুলো উদ্ভিদদেহে অল্পমাত্রায় উৎপন্ন হয় এবং উৎপত্তিস্থল থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়ে উদ্ভিদের বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন- অক্সিন, জিব্বেরেলিন, ইথিলিন, অ্যাবসিসিক এসিড ইত্যাদি।

১৫৩. স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: যে তন্ত্রের কার্যকারিতার উপর মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জুর কোনো প্রভাব না থাকায় এরা স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে আপন কর্তব্য সম্পাদন করে তাদেরকে স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র বলে। যেমন- হৃৎপিণ্ড, পাকস্থলী, ফুসফুস, ক্ষরণকারী গ্রন্থি ইত্যাদি।

১৫৪. অক্সিন ও ইথিলিনের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তর: অক্সিন ও ইথিলিনের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।
অক্সিজেন
  • ১. বৃদ্ধি সহায়ক ফাইটোহরমোন।
  • ২. ফলের অকালে ঝরে পড়া রোধ
ইথিলিন
  • ১. বৃদ্ধিরোধক ফাইটোহরমোন।
  •  ২. ফলের ঝরে পড়া ত্বরান্বিত করে।

১৫৫. লঘু মস্তিষ্কের দুটি কাজ লেখ।

উত্তর: লঘু মস্তিষ্কের দুটি কাজ হলো-
  • ১. দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে।
  • ২. কথা বলা ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে।

১৫৬. ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন কীভাবে তৈরি হয় তা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর: আধানযুক্ত পরমাণুকে আয়ন বলে। যে আয়নে ধনাত্মক আধান থাকে তাকে ক্যাটায়ন আর যে আয়নে ঋণাত্মক আধান থাকে তাকে অ্যানায়ন বলে। একটি পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন করলে বা হারালে ক্যাটায়নে পরিণত হয়। আর ইলেকট্রন কারো কাছ থেকে গ্রহণ করলে বা নিলে অ্যানায়নে পরিণত হয়। যেমন: সোডিয়াম পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস ২, ৮ ও ১। এটি স্থিতিশীল অবস্থা অর্জনের লক্ষ্যে একটি ইলেকট্রন বর্জন করতে চায়। একটি ইলেকট্রন বর্জনের পর সোডিয়াম পরমাণু ধনাত্মক আধানযুক্ত পরমাণুতে পরিণত হয়। এতে সোডিয়াম পরমাণু ক্যাটায়নে পরিণত হয়। ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন তৈরি হয় ফ্লোরিন পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস ২, ৭। এটি স্থিতিশীল অবস্থা অর্জনের লক্ষ্যে একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করতে চায়। একটি ইলেকট্রন গ্রহণের পর ফ্লোরিন পরমাণু ঋণাত্মক আধানযুক্ত পরমাণুতে পরিণত হয়। এতে ফ্লোরিন পরমাণু অ্যানায়নে পরিণত হয়। এভাবে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন তৈরি
হয়।

১৫৭. পরমাণুর নিউক্লিয়াস বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: পরমাণুর কেন্দ্রে যে অবস্থানে মৌলিক কণিকা প্রোটন ও নিউট্রন একত্রে আবদ্ধ থাকে তাকে পরমাণুর নিউক্লিয়াস বলে।

১৫৮. একটি পরমাণুতে কোথায় কোথায় ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন থাকে তা চিত্র এঁকে দেখাও ও বর্ণনা কর।

উত্তর: একটি পরমাণুতে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন যেভাবে বিন্যস্ত থাকে তা নিচে দেখানো হলো:



প্রত্যেক পদার্থই পরমাণু দ্বারা গঠিত। আর পরমাণুতে রয়েছে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন। ইলেকট্রনগুলো বিভিন্ন কক্ষপথে ঘুরতে থাকে এবং নিউট্রন ও প্রোটনগুলো পরমাণুর নিউক্লিয়াসে কেন্দ্রীভূত থাকে। ইলেকট্রন নেগেটিভ চার্জ, প্রোটন পজেটিভ চার্জ আর নিউট্রন চার্জ নিরপেক্ষ অবস্থায় থাকে। যেহেতু প্রত্যেক পরমাণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটনের সংখ্যা সমান সেহেতু স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিটি পরমাণু চার্জ নিরপেক্ষ থাকে।

১৫৯. পারমাণবিক সংখ্যাকে মৌলের স্বাতন্ত্র্য্য ধর্ম বলা হয় কেন?

উত্তর: দুটি ভিন্ন মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা কখনই এক হয় না বলে একে মৌলের স্বতন্ত্র ধর্ম বলা হয়। নির্দিষ্ট মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা নির্দিষ্ট থাকায় ঐ মৌলের ধর্মও নির্দিষ্ট থাকে। তাই এটি মৌলের একটি স্বাতন্ত্র্য ধর্ম।


 ১৬০. ইলেকট্রন বিন্যাস বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: ইলেকট্রন বিন্যাস বলতে পরমাণুতে ইলেকট্রনের সজ্জাকে বোঝায়। প্রত্যেক পরমাণুর নির্দিষ্ট সংখ্যক ইলেকট্রন থাকে। পরমাণুতে তার ইলেকট্রনগুলো বিভিন্ন শক্তিস্তরে বা কক্ষপথে নিয়মমাফিক বিতরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সজ্জিত থাকে।

১৬১. পরমাণু কেন আয়নে পরিণত হয় তা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর: কোনো পরমাণুর ইলেকট্রন ত্যাগ বা গ্রহণের মাধ্যমে আয়ন সৃষ্টি হয়। সাধারণত একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ভেতরের ধনাত্মক আধান বিশিষ্ট প্রোটনের সমান সংখ্যক ঋণাত্মক আধান বিশিষ্ট ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের বাইরে কক্ষপথে থাকে। ফলে সার্বিকভাবে একটি পরমাণু আধান নিরপেক্ষ থাকে। কিন্তু যদি কখনো উত্তেজিত অবস্থায়, নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য বা বন্ধন গঠনের জন্য পরমাণু কোনো ইলেকট্রন দান বা গ্রহণ
করে তখন আর তা আধাননিরপেক্ষ থাকে না। আয়নে পরিণত হয়। এভাবে আয়ন সৃষ্টি হয়।

১৬২. পরমাণুর কোন কোন অংশে প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রন থাকে?

উত্তর: পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রন থাকে।
ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের বাইরে চারদিকে ঘুরতে থাকে। ইলেকট্রন ঋণাত্মক চার্জযুক্ত, প্রোটন ধনাত্মক ও নিউট্রন চার্জ নিরপেক্ষ কণা। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যেক পরমাণুতে সমান সংখ্যক ইলেকট্রন ও প্রোটন থাকায় পরমাণু চার্জ নিরপেক্ষ হয়।

১৬৩. সোডিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা ১১ বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: সোডিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা ১১ বলতে বুঝায় যে, সোডিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ১১টি প্রোটন আছে।

১৬৪. আইসোটোপগুলোর রাসায়নিক ধর্ম অভিন্ন থাকার কারণ ব্যাখ্যা কর।

 উত্তর: আইসোটোপগুলোর রাসায়নিক ধর্ম অভিন্ন থাকার কারণ তাদের পারমাণবিক সংখ্যা একই। মৌলের রাসায়নিক ধর্ম ঐ মৌলের পারমাণবিক সংখ্যার ওপর নির্ভর করে। আইসোটোপগুলোর পারমাণবিক সংখ্যা একই হওয়ার জন্য এদের নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা একই থাকে। নিউক্লিয়াসের বাইরে বিভিন্ন কক্ষে ইলেকট্রন বিন্যাসও এক রকম হয় । তাই আইসোটোপগুলোর রাসায়নিক ধর্ম অভিন্ন হয়।

১৬৫. অক্সিজেনের ভর সংখ্যা ১৬ বলতে কী বুঝায়?

উত্তর: অক্সিজেনের ভর সংখ্যা ১৬ বলতে বুঝায় যে, অক্সিজেন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ৮টি প্রোটন ও ৮টি নিউট্রন আছে। যার সমষ্টি ১৬।

১৬৬. বিজ্ঞানী রাদারফোর্ডের পরীক্ষালব্ধ ফলাফল ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: পরীক্ষালব্ধ ফলাফল থেকে রাদারফোর্ড বলেন যে, পরমাণুতে ধনাত্মক আধান ও ভর একটি ক্ষুদ্র জায়গায় আবদ্ধ। এই জায়গাটি পরমাণুর কেন্দ্রে অবস্থিত। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন যে, পরমাণুর বেশিরভাগ জায়গা ফাঁকা, আর ঋণাত্মক আধানযুক্ত কণার তেমন কোনো ভর নেই এবং তারা নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। কিন্তু রাদারফোর্ড নির্দিষ্ট কোনো কক্ষপথের কথা বলেননি।

১৬৭. হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের পারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন কেন?

উত্তর: কোনো মৌলের একটি পরমাণুতে প্রোটনের সংখ্যাকে পারমাণবিক সংখ্যা (Atomic Number) বলা হয়। হাইড্রোজেনের একটি পরমাণুতে একটি প্রোটন আছে। তাই হাইড্রোজেনের পারমাণবিক সংখ্যা ১। অক্সিজেনের একটি পরমাণুতে ৮টি প্রোটন আছে। তাই অক্সিজেনের পারমাণবিক সংখ্যা ৮। অর্থাৎ প্রোটন সংখ্যার ভিন্নতার কারণে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের পারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন।

১৬৮. 8° A মৌলটির ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যা নির্ণয় কর।

উত্তর: A মৌলটির পারমাণবিক সংখ্যা ১৯ । তাই মৌলটির প্রোটন আছে ১৯টি। আবার কোনো পরমাণুতে প্রোটন আর ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান। অর্থাৎ, মৌলটির ইলেকট্রন সংখ্যা ১৯টি।
আবার মৌলটির ভরসংখ্যা = প্রোটনের সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা
অর্থাৎ A মৌলের নিউট্রন সংখ্যা = ভরসংখ্যা প্রোটন সংখ্যা
সুতরাং, A মৌলের নিউট্রন সংখ্যা = ৪০ - ১৯ = ২১ । 

১৬৯. চিকিৎসা ক্ষেত্রে আইসোটোপ কীভাবে ব্যবহৃত হয়?

উত্তর: বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে ও নিরাময়ে আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়। কোনো ক্ষুদ্র রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তের মাধ্যমে নির্দিষ্ট, কতগুলো মৌলের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ পাঠিয়ে তা শনাক্ত করা যায়। একইভাবে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর কোন কোষ ক্যান্সার আক্রান্ত, তা আইসোটোপ দিয়ে নির্ণয় করা যায়। আবার ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ ধ্বংস করা যায় আইসোটোপের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ব্যবহার করে। এছাড়াও তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করে ডাক্তারি যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করা হয়।

১৭০. পরমাণুসমূহ কীভাবে স্থিতিশীলতা অর্জন করে?

উত্তর: পরমাণুগুলো স্থিতিশীলতা অর্জন করে তাদের বহিঃস্থ শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা পূর্ণ করে। সাধারণত, একটি পরমাণু স্থিতিশীল হয় যখন তারবহিঃস্থ শক্তিস্তরে ৮টি ইলেকট্রন থাকে (অষ্টক নিয়ম)। এই স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য পরমাণুগুলো ইলেকট্রন দান, গ্রহণ বা শেয়ার করে। উদাহরণস্বরূপ, সোডিয়াম পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস ২, ৮,১। স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য সোডিয়াম পরমাণু একটি ইলেকট্রন দান করে।

১৭১. পরমাণু অবিভাজ্য নয় কেন?

উত্তর: পরমাণু অবিভাজ্য নয় বা ক্ষুদ্রতম কণিকাও নয়। পরমাণু বিভাজ্য। এরা ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন দ্বারা গঠিত। যেহেতু পরমাণুকে ভাঙা হলে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের মত ক্ষুদ্রতর কণিকা পাওয়া যায়, তাই পরমাণুকে অবিভাজ্য বলা যায় না।

১৭২. পরমাণুর নিউট্রন সংখ্যা কীভাবে হিসাব করা যায়?

উত্তর: পরমাণুর প্রায় সবটুকু ভর তার নিউক্লিয়াসে থাকে। অর্থাৎ কোনো পরমাণুর ভর তার-প্রোটন ও নিউট্রনের ভর। আবার নিউট্রন ও প্রোটনের ভর প্রায় সমান। কোনো মৌলের পরমাণুতে প্রোটন ও নিউট্রনের সমষ্টিকে ভরসংখ্যা হিসাবে প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ কোনো মৌলের ভরসংখ্যা = (প্রোটনের সংখ্যা + নিউট্রনের সংখ্যা)। সুতরাং মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা ও ভরসংখ্যা জানা থাকলে উক্ত সূত্র ব্যবহার করে পরমাণুর নিউট্রন সংখ্যা হিসাব
করা যায়।

১৭৩. কার্বনের আইসোটোপ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: কার্বনের বেশিরভাগ পরমাণুতে ৬টি প্রোটন ও ৬টি নিউট্রন রয়েছে। কিন্তু কার্বনের কিছু পরমাণুতে ৭টি বা ৮টি নিউট্রনও থাকতে পারে। অর্থাৎ কার্বনের আরো দুইটি ভিন্ন রকমের পরমাণু বিদ্যমান যাদের প্রত্যেকের প্রোটন সংখ্যা একই কিন্তু নিউট্রন বা ভরসংখ্যা ভিন্ন থাকে। এ কারণে প্রকৃতিতে কার্বনের প্রধানত তিনটি আইসোটোপ রয়েছে।

১৭৪. আইসোটোপসমূহে রাসায়নিক ধর্ম একই কেন?

উত্তর: কোন মৌলের রাসায়নিক ধর্ম তার প্রোটন সংখ্যা দ্বারা প্রভাবিত হয়। একই মৌলের বিভিন্ন আইসোটোপের প্রোটন ও ইলেকট্রন সংখ্যা অভিন্ন থাকে। তাই একই মৌলের আইসোটোপসমূহের মধ্যে রাসায়নিক ধর্মে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায় না।

১৭৫. আইসোটোপ তেজস্ক্রিয় হয় কেন?

উত্তর: সাধারণত আইসোটোপসমূহ অস্থায়ী। অস্থায়ী আইসোটোপ বিভিন্ন রকমের তেজস্ক্রিয় রশ্মি ও কণা বিকিরণ করে। এরকম তেজস্ক্রিয় রশ্মি বিকিরণ করার ঘটনাকে তেজস্ক্রিয়তা বলা হয়। তেজস্ক্রিয় ধর্মযুক্ত এরকম আইসোটোপকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বলা হয়। অর্থাৎ অস্থায়িত্বের কারণে আইসোটোপ তেজস্ক্রিয় হয়।

১৭৬. খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে আইসোটোপ ব্যবহার করা হয় কেন?

উত্তর: ব্যাকটেরিয়াসহ অনেক জীবাণু তেজস্ক্রিয় রশ্মিতে মারা যায়। তাই তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করে খাদ্যদ্রব্য বা ফলমূলকে জীবাণুমুক্ত করা যায়। এ কারণে খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়।

১৭৭. ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যালুমিনিয়াম মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস উল্লেখ কর। 

উত্তর: ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যালুমিনিয়াম মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস নিচে উল্লেখ
করা হলো-
মৌল ইলেকট্রন বিন্যাস
প্রতীক
ম্যাগনেসিয়ামMg
২৮, ২
অ্যালুমিনিয়াম Al
২,৮,৩

১৭৮. NaF যৌগ গঠন প্রক্রিয়া বিক্রিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করো।

উত্তর: NaF যৌগ গঠন প্রক্রিয়া বিক্রিয়ার মাধ্যমে নিচে উপস্থাপন করা হলো-
Na
F+e
Na+ F
Na*+e F→ Na' F বা Nar (আয়নিক যৌগ) 

১৭৯. পদার্থের গঠন সম্পর্কে প্লেটো এবং অ্যারিস্টটলের মতবাদ ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর: পরমাণুর গঠন সম্পর্কে দার্শনিক প্লেটো (Plato) এবং অ্যারিস্টটল (Aristotle ) ডেমোক্রিটাসের মতবাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url