অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ধারণাসমূহ সাজেশন
অধ্যায় ২ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ধারণাসমূহ
অর্থনীতি আপডেট সাজেশন
আমাদের ওয়েবসাইট “অর্ডিনেট আইটি.কম” ও চ্যানেল ”অর্ডিনেট ক্লাসরুম ”আপনাদের স্বাগতম ।
আমরা একটি ভিন্ন প্রজন্মের স্বপ্ন দেখি। আমরা অধিক চিন্তাশীল প্রজন্ম গড়তে চাই, আলাদা মানুষ যাদের আগে চিন্তা করার অভ্যাস থাকবে। আমরা মানুষ কেন? কারণ আমরা চিন্তা করি, এবং সেই চিন্তাকে মুক্তচিন্তা হতে হবে। আর মুখস্থ করে আর যা ই হোক, বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে না। আর সেই প্রচেষ্টারই অংশ হল আমাদের কনটেন্ট ও ভিডিও লেকচার। এই কনটেন্ট ও ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বিষয় এমনভাবে শেখানোর চেষ্টা করা যাতে আপনি বইয়ের বাইরেও অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আর আপনি যখন চিন্তাশীল মানুষ হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝবেন এই দেশকে আলাদা করতে আমাদের কী করতে হবে, কতদূর যেতে হবে।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১.উপযোগ কী?
উত্তর: উপযোগ হলো দ্রব্য বা সেবার মাধ্যমে মানুষের অভাব পূরণের ক্ষমতা
প্রশ্ন-২. অর্থনীতিতে হস্তান্তরযোগ্যতা অর্থ কী?
উত্তর: অর্থনীতিতে হস্তান্তরযোগ্যতা অর্থ দ্রব্যের মালিকানার পরিবর্তনকে বোঝায়।
প্রশ্ন-৩.সম্পদ কাকে বলে?
উত্তর: যেসব দ্রব্যের উপযোগ আছে, জোগান সীমাবদ্ধ এবং বিক্রয়যোগ্য সেসব দ্রব্যকে অর্থনীতিতে সম্পদ বলে ।
প্রশ্ন-৪. অবস্তুগত সম্পদ কাকে বলে?
উত্তর: যে দ্রব্য বা বিষয়গুলো আমাদের অভাব মেটায়, যা পেতে আমাদের অর্থ ব্যয় করতে হয় এবং যা দৃশ্যমান নয় তাকে অবস্তুগত সম্পদ বলে। যেমন: ডাক্তারের সেবা।
প্রশ্ন-৫.সম্পদের বৈশিষ্ট্য কয়টি?
উত্তর: সম্পদের বৈশিষ্ট্য চারটি।
প্রশ্ন-৬. উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ কয় প্রকার?
উত্তর: উৎপত্তির দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পদকে তিন ভাগে ভাগ করা হয় ।
প্রশ্ন-৭. উৎপাদিত সম্পদ কী?
উত্তর: প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি হয় তাকে উৎপাদিত সম্পদ বলা হয়।
প্রশ্ন-৮. মানবিক সম্পদ কাকে বলে?
উত্তর: মানুষের মানবীয় গুণাবলিকে মানবিক সম্পদ বলা হয় ।বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদের বিবরণ
প্রশ্ন-৯. ২০১৯-২০ অর্থবছরে কত মে. টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছিল?
উত্তর: ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৫৪.০৪ লাখ মে.টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছিল
প্রশ্ন-১০.কৃষিসম্পদ কী?
উত্তর: কৃষিখাতে চাষাবাদের মাধ্যমে যেসব দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকর্ম উৎপাদিত হয় তাদের সমষ্টিকে কৃষিসম্পদ বলে ।
প্রশ্ন-১১.খনিজসম্পদ কী?
উত্তর: প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, খনিজ তেল ইত্যাদির মতো প্রকৃতির যেসব দান ভূগর্ভ থেকে আহরণ করা হয় তাই খনিজসম্পদ।
প্রশ্ন-১২.বাংলাদেশে চুনাপাথর মজুদ রয়েছে কোথায়?
উত্তর: বাংলাদেশে চুনাপাথর মজুদ রয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে
প্রশ্ন-১৩. কোথায় তামার সন্ধান পাওয়া গেছে?
উত্তর: দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়ায় তামার সন্ধান পাওয়া গেছে।
প্রশ্ন-১৪. বাংলাদেশে মোট ভূখণ্ডের কতভাগ বনভূমি থাকা প্রয়োজন?
উত্তর: বাংলাদেশে মোট ভূখণ্ডের কমপক্ষে শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা প্রয়োজন।
প্রশ্ন-১৫.বনজসম্পদ কী?
উত্তর: কোনো দেশের গাছপালা, সেগুলো থেকে প্রাপ্ত কাঠ, উপকরণ এবং সেখানে বাসরত জীবজন্তু ইত্যাদির সমষ্টিই হলো বনজসম্পদ। ওষুধ, জ্বালানি
প্রশ্ন-১৬. বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের শতকরা কতভাগ বনভূমি আছে?
উত্তর: বাংলাদেশের মোট ভূ-খণ্ডের শতকরা ১৭.৬২ ভাগ বনভূমি আছে ।
প্রশ্ন-১৭.পাহাড়ি বনভূমির আয়তন কত?
উত্তর: পাহাড়ি বনভূমির আয়তন ১৩ লাখ ৭৭ হাজার হেক্টর ।
প্রশ্ন-১৮. প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনভূমির আয়তন কত?
উত্তর: প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনভূমির আয়তন ৬ লাখ ১০ হাজার হেক্টর।
প্রশ্ন-১৯. সৃজিত ম্যানগ্রোভ বনভূমির আয়তন কত?
উত্তর: সৃজিত ম্যানগ্রোভ বনভূমির আয়তন ২ লাখ হেক্টর ।
প্রশ্ন-২০. কুইক রেন্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে সরকার কী সরবরাহ করছে?
উত্তর: কুইক রেন্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।
প্রশ্ন-২১. তাপ বিদ্যুৎ কী?
উত্তর: গ্যাস, তেল, কয়লার সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় তাকে তাপ বিদ্যুৎ বলে ।
প্রশ্ন-২২. বাংলাদেশে পানির প্রধান উৎস কয়টি?
উত্তর: বাংলাদেশে পানির প্রধান উৎস তিনটি ।
প্রশ্ন-২৩.অর্থনৈতিক দ্রব্য কাকে বলে?
উত্তর: যেসব দ্রব্য পাওয়ার জন্য মানুষকে মূল্য প্রদান করতে হয় তাকে অর্থনৈতিক দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন-২৪.অবাধলভ্য দ্রব্য কী?
উত্তর: যেসব দ্রব্য বিনা পরিশ্রম ও বিনামূল্যে পাওয়া যায় সেগুলোকে অবাধলভ্য দ্রব্য বলা হয়
প্রশ্ন-২৫.দ্ৰব্য কাকে বলে?
উত্তর: মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতাসম্পন্ন বস্তুগত ও অবস্তুগত সব জিনিসকে অর্থনীতিতে দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন-২৬.অস্থায়ী দ্রব্য কী?
উত্তর: যেসব ভোগ্য দ্রব্য স্থায়ীভাবে কোথাও অবস্থান করে না তাকে অস্থায়ী ভোগ্য দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন-২৭.মধ্যবর্তী দ্রব্য কোন উৎপাদনের উপকরণ?
উত্তর: মধ্যবর্তী দ্রব্য চূড়ান্ত উৎপাদনের উপকরণ।
প্রশ্ন-২৮.মধ্যবর্তী দ্রব্য কাকে বলে?
উত্তর: যেসব দ্রব্য সরাসরি ভোগের জন্যে ব্যবহার না করে উৎপাদনে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয় তাকে মধ্যবর্তী দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন-২৯. স্থায়ী ভোগা দ্রব্য কী?
উত্তর: যেসব ভোগ্য দ্রব্য স্থায়ীভাবে কোথাও অবস্থান করে তাকে স্থায়ী ভোগ্য দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন-৩০. ভোগ্য দ্রব্য কাকে বলে?
উত্তর: ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে যে সমস্ত দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা যায় তাদেরকে ভোগ্য দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন-৩১.বাতাস কী ধরনের দ্রব্য?
উত্তর: বাতাস অবাধলভ্য দ্রব্য।
প্রশ্ন-৩২.চূড়ান্ত দ্রব্য কী?
উত্তর: চূড়ান্ত দ্রব্য বলতে এমন দ্রব্যকে বোঝায় যা উৎপাদনের পর সরাসরি ভোগে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন-৩৩. মূলধনি দ্রব্য 'কী?
উত্তর: যেসব দ্রব্য প্রত্যক্ষভাবে ভোগ করা হয় না কিন্তু তা ভোগ্য দ্রব্য উৎপাদনে সাহায্য করে, তাকে মূলধনি দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন-৩৪.পণ্য কী?
উত্তর: যেসব দ্রব্য ও অবস্তুগত সেবা উপযোগসম্পন্ন এবং বিক্রয়যোগ্য, তাদেরকে পণ্য বলে।
প্রশ্ন-৩৫.সুযোগ ব্যয় কাকে বলে?
উত্তর: কোনো একটি দ্রব্য পাওয়ার জন্য অন্য দ্রব্যটির উৎপাদন যে পরিমাণ ত্যাগ করতে হয়, সেই ত্যাগকৃত পরিমাণই হলো প্রথম দ্রব্যটির সুযোগ ব্যয় ।
প্রশ্ন-৩৬. চয়ন বা নির্বাচন কী?
উত্তর: চয়ন বা নির্বাচন (Choice) বলতে বোঝায় মানুষের অসীম অভাবের মধ্যে অপেক্ষাকৃত গুৰুত্বপূৰ্ণ অভাবগুলো বাছাই করা।
প্রশ্ন-৩৭. সঞ্চয়ের গাণিতিক সূত্রটি লেখো।
উত্তর: সঞ্চয়ের গাণিতিক সূত্রসঞ্চয় (S) = আয় (Y) - ভোগ ব্যয় (C)
প্রশ্ন-৩৮.আয় কী?
উত্তর: কোন ব্যক্তি তার মালিকানাধীন উৎপাদনের উপকরণকে উৎপাদন কাজে নিয়োজিত করে তার বিনিময়ে যা অর্জন করে তাই আয়।
প্রশ্ন-৩৯.সঞ্চয় কাকে বলে?
উত্তর: আয়ের যে অংশ বর্তমানে ভোগ না করে ভবিষ্যতের জন্য রাখা হয় তাকে সঞ্চয় বলে।
প্রশ্ন-৪০.বিনিয়োগ কী?
উত্তর: সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে।
প্রশ্ন-৪১.আর্থিক আয় কাকে বলে?
উত্তর: একটি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করার বিনিময়ে যে পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায় তাকে আর্থিক আয় বলে।
প্রশ্ন-৪২.আয় ও ভোগ ব্যয়ের পার্থক্যকে কী বলে?
উত্তর: আয় ও ভোগ ব্যয়ের পার্থক্যকে সঞ্চয় বলে।
প্রশ্ন-৪৩.মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা কী?
উত্তর: মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা হলো দ্রব্যসামগ্রীর অভাব পূরণ করা।
প্রশ্ন-৪৪.অর্থনৈতিক কার্যাবলি কাকে বলে?
উত্তর: মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনে অর্থ উপার্জন ও অর্থ ব্যয়সংক্রান্ত যেসব কাজকর্ম করে সেগুলোকে অর্থনীতিতে অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলে।
প্রশ্ন-৪৫. অ-অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কী?
উত্তর: যে সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জিত হয় না এবং তা জীবনধারণের জন্যে ব্যয় করা যায় না তাকে অ-অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলা হয়।
প্রশ্ন-৪৬.বাংলাদেশের জাতীয় আয়ে কোন খাতের অবদান ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে?
উত্তর: সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের জাতীয় আয়ে শিল্প খাতের অবদান ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রশ্ন-৪৭. বাংলাদেশের অর্থনীতি কয়টি খাতের ওপর নির্ভরশীল?
যথা-
- কৃষি,
- শিল্প এবং
- সেবা খাত।
প্রশ্ন-৪৮. বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির কত শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত?
উত্তর: বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির ৪০.৬২ শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. কোনো দ্রব্যের শুধু উপযোগ থাকলে তাকে সম্পদ বলা যায় না কেন? ব্যাখ্যা করো ।
উত্তর: কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। অর্থনীতিতে সম্পদের চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। এগুলো হলো উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা এবং বাহ্যিকতা। এই চারটি বৈশিষ্ট্যের যেকোনো একটি অনুপস্থিত হলে অর্থনীতিতে তা সম্পদ হবে না। তাই কোনো দ্রব্যের যদি শুধু উপযোগ থাকে তাহলে তাকে সম্পদ বলা যাবে না।
প্রশ্ন-২.কেবল অপ্রচুর দ্রব্যকেই সম্পদ বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রকৃতিতে জোগান ও পরিমাণ সীমিত থাকার জন্যই অপ্রচুর দ্রব্যকেই সম্পদ বলা হয়। কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার পরিমাণ ও জোগান সীমিত থাকবে যেমন— নদীর পানি, বাতাস প্রভৃতির জোগান প্রচুর। এগুলো সম্পদ নয়। । তবে শ্রম ব্যবহার করে পানিকে বোতলবন্দি করলে পানিসম্পদে পরিণত হয়। অন্যদিকে জমি, গ্যাস, যন্ত্রপাতি- এগুলো চাইলেই প্রচুর পাওয়া সম্ভব নয় ।
অর্থাৎ, এগুলো আমাদের কাছে অপর্যাপ্ত দ্রব্য। এগুলোও সম্পদ। এ কারণে কেবল অপ্রচুর দ্রব্যকেই অর্থনীতিতে সম্পদ বলা হয়।
প্রশ্ন-৩. 'সূর্যের আলো সম্পদ নয় – অর্থনীতির ভাষায় ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: সূর্যের আলো সম্পদ নয়, কারণ এর অপ্রাচুর্যতা ও হস্তান্তরযাগ্যতা নেই। কোনো জিনিসকে অর্থনীতিতে সম্পদ হতে হলে তার উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা এ চারটি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। এগুলোর কোনো একটি ছাড়া কোনো দ্রব্য বা সেবাকে সম্পদ বলা যাবে না। সূর্যের আলোর উপযোগ ও বাহ্যিকতা রয়েছে। কিন্তু অপ্রাচুর্যতা ও হস্তান্তরযোগ্যতা নেই। তাই সূর্যের আলো অর্থনীতিতে সম্পদ নয়।
প্রশ্ন-৪. সাগরের পানিকে অর্থনৈতিক সম্পদ বলা যায় না কেন?
উত্তর: সাগরের পানি অর্থনৈতিক সম্পদ নয়, কারণ এর অপ্রাচুর্যতা এবং হস্তান্তরযোগ্যতা নেই।কোনো দ্রব্য বা সেবা অর্থনীতিতে সম্পদ হতে হলে তার চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো— উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা এবং বাহ্যিকতা। এই চারটি বৈশিষ্ট্যের যে কোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে তাকে অর্থনীতিতে সম্পদ বলা যাবে না। সাগরের পানির উপযোগ, বাহ্যিকতা থাকলে অপ্রাচুর্যতা এবং হস্তান্তরযোগ্যতা নেই । তাই সাগরের পানিকে অর্থনৈতিক সম্পদ বলা যায় না।
প্রশ্ন-৫. একজন কবির প্রতিভা সম্পদ নয় কেন?
উত্তর: একজন কবির প্রতিভায় হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা নেই বলে অর্থনীতিতে তা সম্পদ নয়।হস্তান্তরযোগ্যতা হলো হাত বদল বা মালিকানা পরিবর্তনের সুযোগ এবং বাহ্যিকতা হচ্ছে বাহ্যিক অস্তিত্ব থাকা মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণকে সম্পদ বলা যায় না। কারণ সম্পদ হতে হলে উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা থাকতে হয়। যা কেবল বস্তুগত দ্রব্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। মানবীয় গুণাবলি অবস্তুগত বিষয়। এটি ধরা বা ছোঁয়া বা হস্তান্তর করা যায় না। এজন্য কবির প্রতিভাকে অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ বলা যাবে না।
প্রশ্ন-৬. ব্যবসায়ের সুনামকে সম্পদ বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ব্যবসায়ের সুনামকে সম্পদ বলার কারণ হলো এর উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা রয়েছে।সাধারণত অর্থনীতিতে যেসব দ্রব্যসামগ্রীর উপযোগ আছে, যার জোগান সীমাবদ্ধ এবং যার বিনিময় মূল্য আছে তাকেই সম্পদ বলে। ব্যবসায়ের সুনামে এই বৈশিষ্ট্যগুলো থাকায় তা সম্পদ বলে বিবেচনা করা হয়।
প্রশ্ন-৭.মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণকে সম্পদ বলা যায় না কেন? ব্যাখ্যা করো ।
উত্তর: মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণের হস্তান্তযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা নেই বলে এটিকে সম্পদ বলা যায় না।কোনো দ্রব্য অর্থনীতিতে সম্পদ হতে হলে তার উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা থাকতে হবে। এগুলোর কোনো একটি ছাড়া দ্রব্য বা সেবাকে সম্পদ বলা যাবে না। যেমন: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্য প্রতিভা মানবিক সম্পদ। আর তা অর্থনীতিতে সম্পদ নয়। কারণ কাব্য প্রতিভার মালিকানা বদল করা যায় না।
প্রশ্ন-৮.অর্থনীতিতে হস্তান্তরযোগ্যতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: সম্পদের হস্তান্তরযোগ্যতা বলতে হাত বদল বা মালিকানা পরিবর্তন হওয়াকে বোঝায়।হস্তান্তরযোগ্যতা হলো সম্পদের এমন একটি বৈশিষ্ট্য যার দ্বারা সম্পদের মালিকানা বদল হওয়া বোঝায়। যেমন: টিভির মালিকানা বদল করা যায়। অর্থাৎ, একজন ক্রেতা টিভি বিক্রেতার কাছ থেকে টিভি ক্রয় করলে বলা যায়, টিভির হস্তান্তরযোগ্যতা আছে।
প্রশ্ন-৯.'কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার উপযোগ থাকতে হবে' ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কোনো দ্রব্যের অভাব মোচনের ক্ষমতাকে উপযোগ বলে । যেসব দ্রব্যের উপযোগ আছে, জোগান সীমাবদ্ধ এবং বিক্রয়যোগ্য সেসব দ্রব্যকে অর্থনীতিতে সম্পদ বলে। যেমন: বাড়িঘর, আসবাবপত্র, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদি । এজন্যই বলা হয়, কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার উপযোগ থাকতে হবে।
প্রশ্ন-১০. সম্পদের বাহ্যিকতার বৈশিষ্ট্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: অর্থনীতিতে বাহ্যিকতা বলতে কোনো একটি দ্রব্যের বাহ্যিক অস্তিত্বকে বোঝায়।সম্পদ হতে হলে তার বাহ্যিক অবস্থান থাকতে হবে। যেসব বিষয়কে মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণ বোঝায় তা অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ নয়। কেননা, এর কোনো বাহ্যিক অস্তিত্ব আমরা উপলব্ধি করতে পারি না। যেমন; কোনো ব্যক্তির কম্পিউটারের ওপর বিশেষ অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান কিংবা কারো চারিত্রিক গুণাবলিকে সম্পদ বলা যাবে না। কারণ এগুলোর বাহ্যিকতা নেই।
প্রশ্ন-১১. 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠান' কোন ধরনের সম্পদ? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উৎপাদিত সম্পদ। | প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি হয় তা উৎপাদিত সম্পদ। যেমন: যন্ত্রপাতি, কলকারখানা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদি। মানুষ তার জ্ঞান- বুদ্ধি এবং প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সম্পদ ব্যবহার করে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে । তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উৎপাদিত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ।
প্রশ্ন-১২. উৎপাদিত সম্পদ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি করা হয় তাই উৎপাদিত সম্পদ।মানুষ নতুন কোনো কিছু সৃষ্টি বা ধ্বংস করতে পারে না। প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে রূপগত, গঠনগত পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে নতুন উপযোগ বা সম্পদ সৃষ্টি করে। এ ধরনের সম্পদকে উৎপাদিত সম্পদ বলে। যেমন: যন্ত্রপাতি, কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি মানুষ তৈরি করে বলে এগুলো উৎপাদিত সম্পদ ।
প্রশ্ন-১৩.বাংলাদেশের প্রাণিজসম্পদ সম্পর্কে বর্ণনা দাও।
উত্তর: বাংলাদেশে বৈচিত্র্যময় প্রাণিজসম্পদ লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি বাংলাদেশের সর্বত্র দেখা যায়। গৃহপালিত পশু- পাখির মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে রয়েছে বাঘ, হাতি, হরিণ প্রভৃতি মূল্যবান জীবজন্তু ও অসংখ্য প্রজাতির পাখি। এছাড়াও নদী, বিল ও বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে। এ ধরনের সম্পদ আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এবং পশু থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ চামড়ার জোগান পাওয়া যায়।
প্রশ্ন-১৪.শক্তিসম্পদ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: প্রকৃতিতে প্রাপ্ত যেসব সম্পদ ব্যবহার বা প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের শক্তি (বিদ্যুৎ, তাপ) উৎপাদন করা হয়, সেগুলোকে শক্তিসম্পদ বলে। নদীর স্রোত ব্যবহার করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি ব্যবহার করে তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সূর্যের তাপ কাজে লাগিয়ে উৎপন্ন করা হয় সৌরবিদ্যুৎ। এক্ষেত্রে কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, নদীর স্রোত, সূর্যের তাপ এগুলো হচ্ছে শক্তিসম্পদের বিভিন্ন উৎস।
প্রশ্ন-১৫. ভোগ্য দ্রব্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে যেসব দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা হয় তাদেরকে ভোগ্য দ্রব্য বলে।বিভক্তগাড়ি, বস্ত্র ইত্যাদি ভোগ্য দ্রব্যের উদাহরণ। ভোগ্য দ্রব্য দুইভাবে যেসব ভোগ্য দ্রব্য দীর্ঘকাল ধরে ভোগ করা যায় সেসব স্থায়ী ভোগ্য দ্রব্য। আর যেসব ভোগ্য দ্রব্য স্বল্পকালে ভোগ করা যায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে একবার মাত্র ব্যবহার করা যায় সেগুলো অস্থায়ী ভোগ্য দ্রব্য ।
প্রশ্ন-১৬. টেবিলকে চূড়ান্ত দ্রব্য বলা হয় কেন?
উত্তর: টেবিলের উপযোগ ভোগের মাধ্যমে শেষ হয় বলে টেবিল চূড়ান্ত দ্রব্য। উৎপাদনের পর যেসব দ্রব্য ভোগ করা হয়, তাদেরকে চূড়ান্ত দ্রব্য বলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গাছ থেকে কাঠ, কাঠ থেকে তক্তা, তক্তা থেকে টেবিল তৈরি হয় । টেবিল উৎপাদনের পর সরাসরি ভোগে ব্যবহার করা হয়। এজন্য টেবিলকে চূড়ান্ত দ্রব্য বলা হয়।
প্রশ্ন-১৭.মধ্যবর্তী দ্রব্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যেসব উৎপাদিত দ্রব্য সরাসরি ভোগের জন্য ব্যবহার না করে উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাকে মধ্যবর্তী দ্রব্য বলে। মধ্যবর্তী দ্রব্য চূড়ান্ত দ্রব্যের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মধ্যবর্তী দ্রব্য চূড়ান্ত দ্রব্য উৎপাদনে নিঃশেষ হয়ে যায়। যেমন- আটা, রুটি তৈরির উপাদান হিসেবে একটি মধ্যবর্তী দ্রব্য।
প্রশ্ন-১৮.মধ্যবর্তী দ্রব্য চূড়ান্ত উৎপাদনে নিঃশেষ হয়ে যায়” —ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: যেসব উৎপাদিত দ্রব্য সরাসরি ভোগের জন্য ব্যবহার না করে উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাকে মধ্যবর্তী দ্রব্য বলে । মধ্যবর্তী দ্রব্য চূড়ান্ত দ্রব্যের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মধ্যবর্তী দ্রব্য চূড়ান্ত দ্রব্য উৎপাদনে নিঃশেষ হয়ে যায়। যেমন: আটা, রুটি তৈরির উপাদান হিসেবে একটি মধ্যবর্তী দ্রব্য।
প্রশ্ন-১৯. সুযোগ ব্যয় বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোনো একটি জিনিস পাওয়ার জন্য অন্যটিকে ত্যাগ করতে হয়, এই ত্যাগকৃত পরিমাণই হলো অন্য দ্রব্যটির সুযোগ ব্যয়।পণ্য নির্বাচন সমস্যা থেকেই সুযোগ ব্যয় ধারণার উদ্ভব। সুযোগ ব্যয়কে দুটি দ্রব্যের পারস্পরিক বিনিময়ও বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করলে দশ কুইন্টাল ধান উৎপাদন করা যায় । আবার পাট চাষ করলে পাঁচ কুইন্টাল পাট উৎপাদন করা যায়। এক্ষেত্রে দশ কুইন্টাল ধানের সুযোগ ব্যয় হলো পাঁচ কুইন্টাল পাট।
প্রশ্ন-২০. অভাব নির্বাচন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: অভাব নির্বাচন বলতে অসীম অভাব থেকে গুরুত্ব অনুসারে তথা অধিক প্রয়োজনীয় অভাব নির্বাচন করাকে বোঝায়।বাস্তবে মানুষের অভাব অসীম হলেও তা পূরণে প্রয়োজনীয় সম্পদ পর্যাপ্ত নয়। যার কারণে মানুষকে অভাব নির্বাচন করতে হয়। অর্থাৎ, সীমিত সম্পদ দিয়ে মানুষের সব অভাব পূরণ হয় না। তাই মানুষ অনেক অভাবের মধ্য থেকে কয়েকটি অভাব পূরণ করে। অভাবের গুরুত্ব বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতি প্রয়োজনীয় অভাবগুলো পূরণ করাই হলো অভাব নির্বাচন।
প্রশ্ন-২১. সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: সায়ের হ্রাস-বৃদ্ধির ওপর বিনিয়োগের হ্রাস-বৃদ্ধি নির্ভরশীল বলে উভয়ের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান।মানুষ তার আয়ের যে অংশ ভোগ না করে ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখে তাই সঞ্চয়। আবার, সঞ্চিত অর্থ উৎপাদনে খাটিয়ে নতুন মূলধন সৃষ্টি করা হলে তাকে বিনিয়োগ বলে। সময় বিনিয়োগের ভিত্তি। সঞ্চয় বাড়লেই বিনিয়োগ বাড়ে । এজন্যই বলা হয়, সঞ্জয় ও বিনিয়োগের মধ্যে সম্পর্ক সমমুখী ।
প্রশ্ন-২২.সঞ্ঝয় বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: আয়ের যে অংশ বর্তমানে ভোগ না করে ভবিষ্যতের জন্য রাখা হয় তাকে সঞ্চয় বলে।ধরি, একজন ব্যক্তি এক মাসে দশ হাজার টাকা বেতন পান। নয় হাজার টাকা তিনি পরিবারের জন্য ব্যয় করেন। এখানে তিনি এক হাজার টাকা সঞ্চয় করেন। সঞ্চয়ের এ ধারণাটি সমীকরণ দিয়ে বোঝানো যায়। যেমন: S = Y-C [ এখানে, S = সঞ্চয়, Y = আয়, C = ভোগ ব্যয়]
প্রশ্ন-২৩.মানুষ আয়ের একটি অংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রেখে দেয় কে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মানুষ সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে আয়ের একটা অংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রেখে দেয়। মানুষ যা আয় করে তার সবটুকু ভোগ করে না। সে ভবিষ্যতের জন্য আয়ের একটা অংশ ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রাখে। মূলত আয়ের পরিমাণ, সামাজিক নিরাপত্তা এবং সুদের হারের ওপর মানুষের সায় নির্ভর করে ।
২৪. S+C- সমীকরণটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: S+CY = SC য়ের সমীকরণ মানুষ তার আয়ের যে অংশ বর্তমান ভোগের জন্য ব্যয় না করে ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখে তাই সন্ধ্যা (S) / আয় (Y) থেকে ভোগ ব্যয় (C) বাদ দিলে যা থাকে, তা হলো সঞ্চয়।
অর্থাৎ SY - CI এখানে, S = সন্ধ্যায়, Y = জাতীয় আয়, C = ভোগ।
প্রশ্ন-২৫.বিনিয়োগ সম্পর্কে বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: মানুষের সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। তখন তাকে বিনিয়োগ বলে।ধরি, একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি কারখানায় এক লক্ষ টাকার মূলধন সামগ্রী আছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা ঐ কারখানায় ব্যবহৃত হলো। অতিরিক্ত এ পঞ্চাশ হাজার টাকা হলো বিনিয়োগ। বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হয়।
প্রশ্ন-২৬.অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বিনিয়োগ বাড়লে উৎপাদন বাড়ে, বলেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হয়। মানুষের সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে । ধরি, একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি কারখানায় ২ লক্ষ টাকার মূলধন সামগ্রী আছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও ১ লক্ষ টাকার মূলধন | সামগ্রী ক্রয় করা হলো। এই অতিরিক্ত ১ লক্ষ টাকাই বিনিয়োগ। বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও উৎপাদন বাড়ে। ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নও বাড়ে। . তাই বলা যায়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন-২৭.পিতামাতা কর্তৃক সন্তান লালন-পালন কেন অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি ?
উত্তর: পিতামাতা কর্তৃক সন্তান লালন-পালন করে অর্থ উপার্জন হয় না বলে একে অ-অর্থনৈতিক কাজ বলে ।যেসব কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন হয় না তাকে অ-অর্থনৈতিক কাজ বলা হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের অভাব পূরণ করলেও অর্থ উপার্জনে ভূমিকা রাখতে পারে না। যেমন: পিতামাতার সন্তান লালন-পালন, শখেরবশে বাগান করা, খেলাধুলা করা ইত্যাদি অ-অর্থনৈতিক কাজ। তাই পিতামাতা কর্তৃক সন্তান লালন-পালন অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি।
প্রশ্ন-২৮.অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য অর্থের বিনিময়ে যে কাজ করে তাকে অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলে।অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবনধারণের জন্য তা ব্যয় করে। যেমন- শ্রমিকরা কলকারখানায় কাজ করে, কৃষকরা জমিতে কাজ করে, ডাক্তার রোগীদের চিকিৎসা করে, শিল্পপতিরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। এগুলো হলো অর্থনৈতিক কাজ, যার বিনিময়ে অর্থ উপার্জিত হয়।
প্রশ্ন-২৯. “অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষির ভূমিকা অপরিসীম”- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কৃষির ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে কৃষি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। দেশের শতকরা ৬৩ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কৃষি জনগণের উদ্ভিদ ও প্রাণিজ আমিষের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ ও শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ করছে। এছাড়া কৃষি শিল্পজাত দ্রব্যাদির বাজার সৃষ্টি করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষির ভূমিকা অপরিসীম।
প্রশ্ন-৩০.বাংলাদেশের শিল্পসংক্রান্ত কয়েকটি অর্থনৈতিক কাজের নাম লেখো।
উত্তর: কৃষির পর শিল্পই হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় খাত। প্রধান শিল্পগুলো হচ্ছে- তৈরি পোশাক, বস, পাট, তুলা, চা প্রক্রিয়াকরণ, কাগজী • নিউজ, সিমেন্ট গানিক সার, হিমায়িত সদস্য প্রকৌশ ইত্যাদি। শিল্পখাতে নিযুক্ত শ্রমশক্তির বড় অংশ তৈরি পোশাক খাতে নিয়োজিত ।

অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url