জীবনীশক্তি

অধ্যায়:৪ জীবনীশক্তি

অনেক কমন আসবে ইনশাআল্লাহ্…..

আমাদের  ওয়েবসাইট “অর্ডিনেট আইটি.কম” ও  চ্যানেল ”অর্ডিনেট ক্লাসরুম  ”আপনাদের  স্বাগতম । 
আমরা একটি ভিন্ন প্রজন্মের স্বপ্ন দেখি। আমরা অধিক চিন্তাশীল প্রজন্ম গড়তে চাই, আলাদা মানুষ যাদের আগে চিন্তা করার অভ্যাস থাকবে। আমরা মানুষ কেন? কারণ আমরা চিন্তা করি, এবং সেই চিন্তাকে মুক্তচিন্তা হতে হবে। আর মুখস্থ করে আর যা ই হোক, বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে না। আর সেই প্রচেষ্টারই অংশ হল আমাদের কনটেন্ট ও ভিডিও লেকচার। এই কনটেন্ট ও  ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বিষয় এমনভাবে শেখানোর চেষ্টা করা যাতে আপনি বইয়ের বাইরেও অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আর আপনি যখন চিন্তাশীল মানুষ হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝবেন এই দেশকে আলাদা করতে আমাদের কী করতে হবে, কতদূর যেতে হবে।



সালোকসংশ্লেষণ : 

সালোকসংশ্লেষণকে ইংরেজিতে ফটোসিনথেসিস (Photosynthesis) বলা হয়। 
ফটোসিনথেসিস শব্দটি ‘ফোটোস’ (Photos) অর্থাৎ আলো এবং ‘সিনথেসিস (synthesis
অর্থাৎ সংশ্লেষ নিয়ে গঠিত। যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় সবুজ উদ্ভিদ সূর্যালোকের উপস্থিতিতে এবং ক্লোরোফিলের সাহায্যে পরিবেশ থেকে শোষিত পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সরল শর্করা (গ্লুকোজ) প্রস্তুত করে তাকে ফটোসিনথেসিস বা সালোকসংশ্লেষণ বলে। 
এটি একটি জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সালোকসংশ্লেষণ একটি জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া যা নিম্নরূপ :
সালোকসংশ্লেষণের উপজাত দ্রব্য হলো অক্সিজেন ও পানি। 

  • এটি একটি জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া।
  • এ প্রক্রিয়ায় H2O জারিত হয় এবং CO2  বিজারিত হয়।
  • ১৯০৫ সালে ইংরেজ শারীরতত্ত্ববিদ ব্ল্যাকম্যান (Blakman) সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করেন। 
যথা : আলোকনির্ভর পর্যায় ও আলোক নিরপেক্ষ বা অন্ধকার পর্যায়। 

আলোকনির্ভর পর্যায় (Light dependent phase) :

এ পর্যায়ে ATP ও NADPH + H+ উৎপন্ন হয়। ক্লোরোফিল অণু আলোকরশ্মির ফোটন হতে শক্তি সঞ্চয় করে অউচ ও অজৈব ফসফেট (Pi = inorganic phosphate) থেকে ATP  তৈরি করে। 
এ প্রক্রিয়াকে ফটোফসফোরাইলেশন বলে। 

এই বিক্রিয়াটি হলো : 



সূর্যালোক অসংখ্য উচ্চ শক্তিসম্পন্ন কণিকা বা ফোটন নিয়ে গঠিত। ফোটনে আবদ্ধ শক্তি হলো কোয়ান্টাম।
  • সূর্যালোক ও ক্লোরোফিলের সহায়তায় পানির ফটোলাইসিস ঘটে।  এ বিক্রিয়াটি ক্লোরোপ্লাস্টে ঘটে।
  • পানির ফটোলাইসিসে উৎপন্ন ইলেকট্রন NADPকে বিজারিত করে NADPH + H+ উৎপন্ন করে। 
  • ATP ও NADPH + H+ কে আত্মীকরণ শক্তি বলে। 

আলোক নিরপেক্ষ পর্যায় বা অন্ধকার পর্যায় (Light independent phase) :

  • আলোক পর্যায়ে উৎপন্ন ATP  ও NADPH + H+এর সহায়তায় CO2বিজারিত হয়ে কার্বোহাইড্রেট উৎপন্ন হয়। 
  • এ পর্যায়ে CO2 বিজারণের ৩টি গতিপথ শনাক্ত করা হয়েছে। 
  1. ক্যালভিন চক্র 
  2. হ্যাচ ও স্ল্যাকচক্র ও 
  3. ক্রেসু লেসিয়ান এসিড বিপাক। 
এদের মধ্যে দুটি আলোচনা করা হলো : 

C3 গতিপথ বা ক্যালভিন চক্র :

  • এই চক্রের প্রথম স্থায়ী পদার্থ ৩-ফসফোগ্লিসারিক এসিড। 
  • এই চক্রে আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানী ক্যালভিন ১৯৬১ সালে  নোবেল পুরস্কার পান।
  • C3 গতিপথ বিশিষ্ট উদ্ভিদকে C3 উদ্ভিদ বলে। 

C4 গতিপথ বা হ্যাচ ও স্ল্যাক চক্র :

  • এই চক্রের প্রথম স্থায়ী পদার্থ হলো ৪- কার্বনবিশিষ্ট অক্সালো এসিটিক এসিড। 
  • C4 গতিপথ বিশিষ্ট উদ্ভিদকে C4 উদ্ভিদ বলে। 
  • C4  উদ্ভিদকে একই সাথে হ্যাচ ও স্ল্যাক চক্র এবং ক্যালভিন চক্র পরিচালিত হতে দেখা যায়। 

সালোকসংশ্লেষণের প্রভাবকসমূহ :

প্রভাবকগুলো হলো :

  • i)বাহ্যিক প্রভাবক : আলো, পানি, কার্বন ডাইঅক্সাইড, তাপমাত্রা, অক্সিজেন, খনিজ পদার্থ, রাসায়নিক পদার্থ।
  • ii) অভ্যন্তরীণ প্রভাবকসমূহ : ক্লোরোফিল, পাতার বয়স ও সংখ্যা, শর্করার পরিমাণ, পটাসিয়াম, এনজাইম।

শ্বসন :

 যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় কোষস্থ খাদ্য জারিত হয়ে (অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে) খাদ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি রাসায়নিক  তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত ও মুক্ত হয় তাকে শ্বসন বলে।

শ্বসনের সামগ্রিক রাসায়নিক সমীকরণটি হলো :



শ্বসন কোথায় এবং কখন হয় :

জীবদেহের প্রতিটি সজীব কোষে শ্বসন দিনরাত ঘটে। শ্বসনের প্রথম পর্যায় কোষের সাইটোপ্লাজমে ঘটে এবং দ্বিতীয় পর্যায় কোষের কোষ অঙ্গাণু মাইটোকন্ড্রিয়ায় ঘটে। 
শ্বসন দুই প্রকার। একটি হলো সবাত শ্বসন যা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে ঘটে অপরটি অবাত শ্বসন বা অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে ঘটে। 
  • সবাত শ্বসন চারটি এবং অবাত শ্বসন দুটি ধাপে সম্পন্ন হয়। 
  • সবাত শ্বসন প্রক্রিয়ায় চারটি পর্যায়ক্রমিক ধাপে এক অণু গ্লুকোজ সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে সর্বমোট ছয় অণু (CO2), ছয় অণু পানি এবং ৩৮ টি ATP  উৎপন্ন করে। বিক্রিয়াটি হলো : 

অবাত শ্বসনের দুটি ধাপে গ্লুকোজ আংশিক জারিত হয়ে ইথাইল অ্যালকোহল ও ঈঙ২ অথবা শুধু ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন করে।
গ্লুকোজ ইথাইল অ্যালকোহল

শ্বসনের গুরুত্ব :

  • শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন  শক্তি দিয়ে জীবের সব ধরনের ক্রিয়া-বিক্রিয়া ও কাজকর্ম পরিচালিত হয়। 
  • অ্যালকোহল, রুটি, দই, পনির ইত্যাদি অবাত শ্বসন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। 

শ্বসনের প্রভাবকসমূহ 

বাহ্যিক প্রভাবক : 

বাহ্যিক প্রভাবকসমূহ হলো-তাপমাত্রা, অক্সিজেন, পানি, আলো, কার্বন ডাইঅক্সাইড ইত্যাদি শ্বসনের বাহ্যিক প্রভাবক। 

অভ্যন্তরীণ প্রভাবক : 

অভ্যন্তরীণ প্রভাবকসমূহ হলো-খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণ ও ধরন, উৎসেচক, কোষের বয়স, অজৈব লবণ, কোষমধ্যস্থ পানি ইত্যাদি শ্বসনের অভ্যন্তরীণ প্রভাবক।

সালোকসংশ্লেষণ এবং শ্বসন পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল :

 সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় CO2গ্যাসের প্রয়োজন হয়। বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের প্রধান উৎস জীবের শ্বসন প্রক্রিয়া। সুতরাং সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াটি CO2  এর জন্য শ্বসনের ওপর নির্ভরশীল। শ্বসনের সময় জীবের প্রয়োজন খাদ্য এবং অক্সিজেন। জীবের খাদ্য এবং অক্সিজেনের প্রধান উৎস সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া। সুতরাং শ্বসন প্রক্রিয়াটি খাদ্য ও অক্সিজেনের জন্য সালোকসংশ্লেষণের ওপর নির্ভরশীল।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন : ১ সালোকসংশ্লেষণ কাকে বলে? বিক্রিয়ার মাধ্যমে দেখাও।

উত্তর : যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ তার ক্লোরোফিলযুক্ত কোষে সূর্যালোকের উপস্থিতিতে পরিবেশ থেকে গৃহীত পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সরল শর্করা (গ্লুকোজ) সংশ্লেষণ করে এবং উপজাত হিসেবে পানি ও অক্সিজেন উৎপন্ন করে তাকে সালোকসংশ্লেষণ বলে।
 


প্রশ্ন :২  সালোকসংশ্লেষণের কাঁচামাল কী কী?

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণের কাঁচামালগুলো হলো : 
  • ১. পাতার ক্লোরোফিল, 
  • ২. আলো, 
  • ৩. পানি এবং
  • ৪. কার্বন ডাইঅক্সাইড।

প্রশ্ন : ৩ শ্বসন কাকে বলে? বিক্রিয়ার মাধ্যমে দেখাও।

উত্তর : যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীব কোষস্থ খাদ্যবস্তু অক্সিজেনের উপস্থিতিতে অথবা অনুপস্থিতিতে জারিত হয়ে খাদ্যস্থ শক্তি গতিশক্তি ও তাপশক্তিতে রূপান্তরিত ও মুক্ত হয় এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড ও পানি উৎপন্ন হয় তাকে শ্বসন বলে।

প্রশ্ন : ৪  সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসনের মধ্যে সম্পর্ক কী?

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া উৎপন্ন করে গ্লুকোজ এবং অক্সিজেন। আলোকশক্তিকে রূপান্তরিত করে গ্লুকোজের মধ্যে রাসায়নিক শক্তি হিসেবে আবদ্ধ করে। শ্বসন প্রক্রিয়া নির্গত অক্সিজেনকে গ্রহণ করে কোষস্থ গ্লুকোজের মধ্যে আবদ্ধশক্তিকে গতিশক্তিতে রূপান্তরিত করে এবং বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত করে। এভাবে সবুজ উদ্ভিদে দিনের বেলায় সূর্যালোকের উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসন ক্রিয়া এক সঙ্গে চলতে থাকে। সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসনের এই সম্পর্কের ফলে বায়ুমণ্ডলে O2এবংCO2 এর ভারসাম্য রক্ষা হয়।

নিজে করো

প্রশ্ন : ৫  অবাত ও সবাত শ্বসনের পার্থক্য লেখ।

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 

প্রশ্ন : ১ গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় কয় অণু NADH2উৎপন্ন হয়?

উত্তর : গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় দুই অণু NADH2 উৎপন্ন হয়।

প্রশ্ন : ২ ATP এর পূর্ণরূপ কী?

উত্তর : ATP এর পূর্ণরূপ হলো-Adenosine Triphosphate

প্রশ্ন : ৩ পাতার কোন কলায় সালোকসংশ্লেষণ ঘটে? 

উত্তর : পাতার মেসোফিল কলার ক্লোরোফিল যুক্ত কোষে সালোকসংশ্লেষণ সংঘটিত হয়।

প্রশ্ন : ৪ ক্যালভিন ও ব্যাশাম চক্র কাকে বলে?

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণের অন্ধকার পর্যায়ে বায়ুমণ্ডলের CO2গ্যাস পাতার কোষে প্রবেশ করে কোষে অবস্থিত ৫ কার্বন বিশিষ্ট রাইবুলোজ ১, ৫ ডাইফসফেটের সাথে যুক্ত হয়ে প্রথমে ফসফোগ্লিসারিক এসিড পরে ফসফোগ্লিসারালডিহাইডে পরিণত হয়। এরপর আবার রাইবুলোজ ডাইফসফেট উৎপন্ন করে। ঘটনাটি অন্ধকার দশায় চক্রাকারে ঘটে। এ চক্রটি অধ্যাপক ক্যালভিন ও ব্যাশাম আবিষ্কার করেছিলেন বলে এই চক্রটিকে ক্যালভিন ও ব্যাশাম চক্রও বলা হয়।

প্রশ্ন :৫সালোকসংশ্লেষণে অন্ধকার পর্যায়ের প্রথম স্থায়ী যৌগ কী?

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণে প্রথম স্থায়ী জৈব যৌগ ৩ কার্বনবিশিষ্ট ফসফোগ্লিসারিক এসিড (চএঅ)।

প্রশ্ন :৬ সালোকসংশ্লেষণের আলোক পর্যায়ে উৎপন্ন  যৌগগুলো কী কী? 

উত্তর : আলোক পর্যায়ে উৎপন্ন যোগগুলো- ঘঅউচঐ২, অঞচ ও অক্সিজেন।

প্রশ্ন : ৭  আত্মীকরণ শক্তি কাকে বলে? 

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার আলোক পর্যায়ে আলোকশক্তি ও রাসায়নিক শক্তি হিসেবে সঞ্চারিত  ATP  ও NADPH2 কে আত্মীকরণ শক্তি বলে।

প্রশ্ন :৮ শ্বসন কোথায় সংঘটিত হয়?

উত্তর : প্রতিটি সজীব কোষে শ্বসন সংঘটিত হয়।

প্রশ্ন : ৯ গ্লাইকোলাইসিস কাকে বলে?

উত্তর :শ্বসনের যে পর্যায়ে কয়েক রকম উৎসেচকের প্রভাবে ১-অণু গ্লুকোজ কোষের সাইটোপ্লাজমে আংশিকভাবে জারিত হয়ে ২-অণু পাইরুভিক এসিড উৎপন্ন করে, তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে।

প্রশ্ন : ১০ গ্লাইকোলাইসিস কোথায় হয়?

উত্তর : গ্লাইকোলাইসিস কোষের সাইটোপ্লাজমে হয়।

প্রশ্ন : ১১ ক্রেবস চক্রে এক অণু গ্লুকোজ থেকে কত অণু অঞচ উৎপন্ন হয়?

উত্তর : ক্রেবস চক্রে এক অণু গ্লুকোজ থেকে ২৪ অণু ATP উৎপন্ন হয়।

প্রশ্ন : ১২ গ্লাইকোলাইসিসে কত অণু ATP  উৎপন্ন হয়?

উত্তর : গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় মোট ১০ অণু ATP উৎপন্ন হয় এবং  ২ অণু ব্যয় হয়। ফলে প্রকৃত লাভ হয় ৮ অণু ATP

প্রশ্ন :১৩  এক অণু NADH2 থেকে কত অণু ATP উৎপন্ন হয়?

উত্তর : এক অণু NADH2 থেকে ৩ অণু ATP উৎপন্ন হয়।

প্রশ্ন :১৪  সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার পার্শ্ব উৎপন্ন দ্রব্য কী?

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার পার্শ্ব উৎপন্ন দ্রব্য হচ্ছে অক্সিজেন ও পানি।

প্রশ্ন : ১৫ কোন অবস্থায় সালোকসংশ্লেষণ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে?

উত্তর : অক্সিজেনবিহীন পরিবেশে সালোকসংশ্লেষণ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।

প্রশ্ন:১৬ ক্রেবস চক্র নামটি কার নাম অনুসারে হয়েছে?

উত্তর : ক্রেবস চক্র নামটি হয়েছে ইংরেজ প্রাণ রসায়নবিদ স্যার হ্যানস অ্যাডলফ ক্রেবস এর নামানুসারে।

প্রশ্ন : ১৭  সালোকসংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো কী কী?

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো হলো- 
  • ক্লোরোফিল, 
  • আলো, 
  • পানি ও 
  • কার্বন ডাইঅক্সাইড।

প্রশ্ন : ১৮  বায়ুমণ্ডলে CO2 এর পরিমাণ কত?

উত্তর : বায়ুমণ্ডলে CO2 এর পরিমাণ শতকরা ০.০৩ ভাগ।

প্রশ্ন :১৯  সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অবশেষে শক্তি কিসে আবদ্ধ হয়ে উদ্ভিদ দেহে সঞ্চিত হয়?

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে গ্লুকোজে আবদ্ধ হয়ে উদ্ভিদের দেহে সঞ্চিত হয়।

প্রশ্ন :৫ দিনের বেলায় সবুজ উদ্ভিদে শুধু সালোকসংশ্লেষণ ঘটে, শ্বসন ঘটে না- কথাটা কি সঠিক? উত্তরের সপক্ষে ব্যাখ্যা দাও।  

উত্তর : ‘‘দিনের বেলায় সবুজ উদ্ভিদে শুধু সালোকসংশ্লেষণ ঘটে শ্বসন ঘটে না’’ কথাটি সঠিক নয়। কারণ, প্রতিটি সজীব কোষে দিনরাত শ্বসন ক্রিয়া চলে এবংCO2 গ্যাস উৎপন্ন হয়। 
দিনের বেলায় সবুজ উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসন একই সঙ্গে সংঘটিত হয়। সালোকসংশ্লেষণে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয় শ্বসনে নির্গত  CO2  ব্যবহার করে এবং শ্বসনে গ্লুকোজ জারিত হয় সালোকসংশ্লেষণে উৎপন্ন O2 দ্বারা।

প্রশ্ন :৬ সবাত শ্বসনের পর্যায় দুটি কী কী এবং পর্যায়গুলো কোথায় ঘটে?

উত্তর : সবাত শ্বসনের বিক্রিয়াগুলো দুটি পর্যায়ে ঘটে-
একটিকে বলে গ্লাইকোলাইসিস অপরটিকে বলে ক্রেবস চক্র। গ্লাইকোলাইসিস কোষের সাইটোপ্লাজমে এবং ক্রেবস চক্র কোষের মাইটোকন্ড্রিয়ায় ঘটে।

প্রশ্ন :৭ পাতার যে কলায় সালোকসংশ্লেষণ ঘটে সংক্ষেপে তার গঠন ও ভূমিকার বর্ণনা দাও।

উত্তর : পাতার উপরের ত্বক ও নিচের ত্বকের মাঝখানে অবস্থান করে মেসোফিল টিস্যু। মেসোফিল টিস্যু স্পঞ্জি ও প্যালিসেড প্যারেনকাইমা নিয়ে গঠিত। প্যালিসেড প্যারেনকাইমা কোষে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে। ক্লোরোপ্লাস্টে গ্রানা ও স্ট্রোমা নামে দুটি অংশ থাকে। সালোকসংশ্লেষণের আলোক অধ্যায় গ্রানাতে ও অন্ধকার অধ্যায় স্ট্রোমাতে ঘটে। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় পাতার মেসোফিল টিস্যুর গুরুত্ব সর্বাধিক। এ টিস্যুর ক্লোরোফিল-ই সূর্যালোক শোষণ করে। সালোকসংশ্লেষণের সময় পত্ররন্ধ্রের মধ্য দিয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড পাতায় প্রবেশ করে এবং অক্সিজেন বের হয়ে যায়। মেসোফিল টিস্যুর স্পঞ্জি প্যারেনকাইমার কোষ অবকাশগুলো কার্বন ডাইঅক্সাইডকে সালোকসংশ্লেষণের স্থানে পৌঁছিয়ে দিয়ে সালোকসংশ্লেষণে উৎপন্ন অক্সিজেনকে বাইরে নির্গত করতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন: ৮শ্বসন সমস্ত জীবের জন্য অপরিহার্য কেন? 

উত্তর : শ্বসনে খাদ্যবস্তুর জারণ হয় এবং খাদ্যে আবদ্ধ সৌরশক্তি তথা স্থৈতিক শক্তি গতীয় শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। শ্বসনে উৎপন্ন কিছু শক্তি অঞচ-তে সঞ্চিত থাকে। এ শক্তির সাহায্যেই জীবদেহে চলন, গমন, বৃদ্ধি, জনন প্রভৃতি শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াগুলো সংঘটিত হয়। শক্তির বাকি অংশ তাপশক্তি, রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে প্রকাশ ঘটে। এ সমস্ত কারণে সমস্ত সজীব জীবের জন্য শ্বসন একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া।

প্রশ্ন : ৯ প্রাণিদেহে গ্লাইকোজেন এবং উদ্ভিদদেহে শর্করা সংশ্লেষকে শক্তি সঞ্চিত করার প্রক্রিয়া বলা যেতে পারে- ব্যাখ্যা দাও।

উত্তর : উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তিকে বিভিন্ন জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্লুকোজে আবদ্ধ করে, যা খাদ্য হিসেবে প্রাণী গ্রহণ করে। অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রাণীর শরীরে গ্লাইকোজেন হিসেবে এবং উদ্ভিদ দেহে শর্করা হিসেবে সঞ্চিত থাকে। সুতরাং উদ্ভিদ ও প্রাণীর শক্তির উৎস হলো সালোকসংশ্লেষণ। এজন্য প্রাণিদেহে গ্লাইকোজেন এবং উদ্ভিদদেহে শর্করা সংশ্লেষকে শক্তি সঞ্চিত করার প্রক্রিয়া বলা যেতে পারে।

নিজে করো:

প্রশ্ন : ১০ সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে CO2 উৎপাদনকে ফটোফসফোরাইলেশন বলা হয় কেন?

MCQ

১।ATP এর পূর্ণরূপ কোনটি ? 

(ক) অ্যাডিনোসিন মনোফসফেট 
(খ) অ্যাডিনোসিন ডাইফসফেট  
(গ) অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট
(ঘ) অ্যাডিনোসিন পেন্টফসফেট
উত্তর : গ

২।কোনটি অ্যাডিনোসিন ডাই-ফসফেট ?

(ক) AMP   
(খ) ADP  
(গ) AD2P  
(ঘ) ADP2
উত্তর : খ

৩।কোন শক্তিটি সালোকসংশ্লেষণের সময় ADP গ্রহণ করে ?

[ চ. বো. ‘১৬]  
(ক) সৌর 
 (খ) বিদ্যুৎ
 (গ) আলোক  
 (ঘ) তাপ
উত্তর : ক

৪। ATP ভেঙে নিচের কোনটি উৎপন্ন হয় ?

(ক) GTP  
(খ) CTP  
 (গ) UTP  
(ঘ) ADP
উত্তর : ঘ

৫। আত্তিকরণ শক্তি হলো-

i. NADP
ii. ATP
iii. NADPH2
নিচের কোনটি সঠিক ?
(ক) i ও ii  
(খ) i ও iii  
(গ) ii ও iii  
(ঘ) i , ii ও iii
উত্তর: গ

৬। কোন উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণের হার বেশি ?

(ক) ফণিমনসা 
 (খ) সুন্দির  
 (গ) মরিচ  
(ঘ) হাইড্রিলা 
উত্তর : ঘ

৭। পানিতে শতকরা কত ভাগ CO2 থাকে ?

(ক) ০.০০৩%  
(খ) ০.০৩% 
(গ) ০.৩%  
(ঘ)৩.০%
উত্তর : গ

৮। নিচের কোন উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণ হার বেশি ?

(ক) বট গাছ  
(খ) কাঠাঁল  
(গ) পেয়ারা 
 (ঘ) কচুরিপানা 
উত্তর : ঘ

৯। ইংরেজ শরীর তত্ত্ববিদ ব্ল্যাকম্যান কর্তৃক আবিস্কৃত প্রক্রিয়া কোনটি ?


(ক) প্রস্বেদন  
(খ) ইমবাইবিশন  
(গ) সালোকসংশ্লেষণ 
 (ঘ) ব্যাপন 
উত্তর : গ

১০। দূর্বাঘাসের শর্করা তৈরির প্রধান স্থান কোনটি ? 

(ক) ফুল  
(খ) মেসোফিল টিস্যু
(গ) মূল  
(ঘ) জাইলেম টিস্যু 
উত্তর : খ

১১। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াল প্রধান স্থান কোনটি ?

 (ক) পত্ররন্ধ্র  
(খ) সঙ্গীকোষ 
(গ) মেসোফিল টিস্যু 
(ঘ) মেসোফিল কোষ
উত্তর : গ

১২। কোন উদ্ভিদের প্রথম স্থায়ী পদার্থ ৪-কার্বনবিশিষ্ট অক্সালো এসিটিক এসিড ?

(ক) আখ
  (খ) আম
  (গ) জাম 
 (ঘ) কাঁঠাল 
উত্তর : ক

১৩। কোন উপাদান গুলোর সংযুক্তির কারণে ATP উৎপন্ন হয় ?

i. ADP
ii. Pi 
iii. সৌরশক্তি
নিচের কোনটি সঠিক ?
(ক) i ও ii  
(খ) ii ও iii  
(গ) i ও iii 
(ঘ) i , ii ও iii
উত্তর: ঘ

১৪। কোন উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণে প্রথম স্থায়ী পদার্থ অক্সলো এসিটিক এসিড ?

(ক) আম  
(খ) আখ  
(গ) জাম  
(ঘ) কাঁঠাল 
উত্তর : খ

১৫। C3- উদ্ভিদে প্রথম স্থায়ী পদার্থ ফসফোগ্লিসারিক এসিড ? 

(ক) ল্যাকটিক এসিড   
 (খ) পাইরুভিক এসিড  
(গ) ফসফোগ্লিসারিক এসিড  
  (ঘ) অক্সালোএসেটিক এসিড
উত্তর : গ

১৬। কোন উদ্ভিদে প্রথম স্থায়ী পদার্থ ফসফোগ্লিসারিক এসিড ?

(ক) আখ  
(খ) ভুট্টা  
(গ) কাঁঠাল  
(ঘ) মুথা ঘাস
উত্তর : গ

১৭। কোনটি ‘‘C4`` উদ্ভিদ ?  

(ক) আম গাছ 
 (খ) কাঁঠাল  
(গ) পিঁয়াজ 
 (ঘ) আখ 
উত্তর : ঘ

১৮। নিচের কোনটি C3 উদ্ভিদ ?

(ক) আখ 
 (খ) ভুট্টা  
(গ) মুথাঘাস 
 (ঘ) ধান 
উত্তর : ঘ 

১৯। কোনটি `C3` উদ্ভিদ ?

(ক) আখ 
(খ) ভুট্টা 
(গ) পাট
 (ঘ) মুথাঘাস
উত্তর : গ

২০। পাইরুভিক এসিডের রাসায়নিক সংকেত কোনটি ?

(ক) C6H12O6  
(খ) C3H4O3
 (গ) C2H5OH  
(ঘ) C12H22O11
উত্তর : খ

২১। কোন আলোতে সালোকসংশ্লেষণ ভালো হয় ?

(ক) সবুজ  
(খ) হলুদ 
(গ) লাল  
(ঘ) নীল 
উত্তর : গ

২২। ক্লোরোফিলের প্রধান উপকরণ হচ্ছে -

(ক) Ca ও Fe  
(খ) Na ও Mg  
(গ) Fe ও N  
(ঘ) Mg ও N
উত্তর : ঘ

২৩। সালোকসংশ্লেষণের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা কোনটি ?


(ক) 12૦C - 25૦C 
 (খ) 17૦C - 30૦C  
(গ) 22૦C - 35૦C  
(ঘ) 27૦C - 40૦C
উত্তর : গ

২৪। সালোকসংশ্লেষণের বাহ্যিক প্রভাবক কোনটি ?

(ক) পানি 
 (খ) ক্লোরোফিল  
(গ) পটাশিয়াম 
 (ঘ) এনজাইম
উত্তর : ক

২৫। বায়ুতে অক্সিজেনের পরিমাণ কত ?

 (ক) ২০.৯৯% 
 (খ) ২০% 
 (গ) ২০.৯৫%  
(ঘ) ২০.১০%
উত্তর : গ

অধ্যায় ৪: জীবনীশক্তি
  • ১।জীবনীশক্তি কী?
  • ২।জৈব মুদ্রা কী?
  • ৩। ফসফোরাইলেশন কী?
  • ৪। জীবের বৈজ্ঞানিক নামের অংশ দুটি কী কী?
  • ৫। সালোকসংশ্লেষণ কী?
  • ৬। ফটোলাইসিস কী?
  • ৭। C,উদ্ভিদ কাকে বলে? 
  • ৮। C4 উদ্ভিদ কী? 
  • ৯। ফটোফসফোরাইলেশন কী? 
  • ১০। জবা ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম কী?
  • ১১। জাতীয় ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম কী?

অনুধাবনমূলক সাজেশন:(খ নং প্রশ্ন)

অধ্যায় ৪ : জীবনীশক্তি
  • ১। ATP রিচার্জেবল ব্যাটারির সঙ্গে তুলনীয় কেন? 
  • ২। ফসফোরাইলেশন বলতে কী বোঝ? 
  • ৩। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় জারণ-বিজারণ ঘটে— ব্যাখ্যা কর ।
  • ৪। C, উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণের হার বেশি হয় কেন? ব্যাখ্যা কর ।
  • ৫। ফটোলাইসিস প্রক্রিয়া কী ব্যাখ্যা কর।
  • ৬। CBC, উদ্ভিদ বলতে কী বোঝায়? 
  • ৭। মধ্যবয়সী পাতার তুলনায় কম বয়সী পাতায় সালোকসংশ্লেষণের হার কম কেন?
  • ৮। উত্তর অঞ্চলের লোকদের গলগন্ড বেশি হওয়ার কারণ কী?
  • ৯। পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যালোক না পেলে দেহে কী সমস্যা দেখা দিতে পারে? ব্যাখ্যা কর। 
  • ১০। রক্তশূন্যতা কেন হয়? 
  • ১১। BMR বা বেসিক মেটাবলিক রেট বলতে কী বুঝ? ব্যাখ্যা কর। 
  • ১২। পরিশ্রমের পাশাপাশি বিশ্রামও প্রয়োজন কেন? ব্যাখ্যা কর। 
  • ১৩। মুখগহ্বরে কোন খাদ্য উপাদানটি পরিপাক হয় ব্যাখ্যা কর।









এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url