এইচ এস সি বাংলা ১ম পত্র আমি কিংবদন্তির কথা বলছি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
কবি-পরিচিতি
সূচপিত্র
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ১৯৩৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জের বহেরচর-ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আব্দুল জব্বার খান ছিলেন প্রথমে হাইকোর্টের বিচারপতি ও পরে পাকিস্তান জাতীয়
পরিষদের স্পিকার এবং মা সালেহা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স), এমএ পাশ করে একই
বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরে সিএসপি কর্মকর্তা হয়ে ১৯৮২ সালে সচিব হিসেবে অবসর নেন এবং বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ও মন্ত্রী হন। ১৯৮৪ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পঞ্চাশ দশকের অন্যতম কবি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। ভাষা-আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে তাঁর কবিতার বিকাশ এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের আশা-নিরাশা ও স্বপ্ন-বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে তাঁর কবিতার পরিণতি। এছাড়া লোকজ ঐতিহ্যের ব্যবহার করে ছড়ার আঙ্গিকে তিনি কবিতা লিখেছেন। প্রকৃতির রূপ
ও রঙের বিচিত্র ছবি তাঁর কবিতাকে সমৃদ্ধ করেছে। ইংরেজি ভাষায়ও তিনি একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ১৯৮৫ সালে একুশে পদক প্রাপ্ত হন। ২০০১ সালের ১৯ মার্চ তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ
কাব্যগ্রন্থ : সাত নরী হার (১৯৫৫), কখনো রং কখনো সুর (১৯৭০), কমলের চোখ (১৯৭৪) আমি কিংবদন্তির
কথা বলছি (১৯৮১), বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা (১৯৮৩), আমার সময় (১৯৮৭), আমার
সকল কথা (১৯৯৩), মসৃণ কৃষ্ণ গোলাপ (২০০২)
ভূমিকা
কবিতাটি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর আমি কিংবদন্তির কথা বলছি কাব্যগ্রন্থের নামকবিতা। কবিতাটি গদ্যছন্দে রচিত। কবিতাটিতে বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস, সংগ্রাম, বিজয় এবং মানবিক উদ্ভাসনের অনিন্দ্য অনুষঙ্গসমূহ ফুটে উঠেছে। এই কবিতায় কবি মানবমুক্তির আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেছে।
সাধারণ উদ্দেশ্য
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতাটি পড়ার পর তুমি--
- আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কবিতার বিষয় ও আঙ্গিক সম্পর্কে জানতে পারবে।
- বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের সংগ্রাম ও বিজয়ের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে।
- ‘কবিতা’ কীভাবে কবির প্রত্যাশিত মুক্তির প্রতীক হয়ে উঠলো, তা বুঝতে পারবে।
- ‘কিংবদন্তি’ শব্দটি কীভাবে আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে উঠলো, তা বুঝতে পারবে।
- বাংলার ভূমিজীবী অনার্য ক্রীতদাসের লড়াই করে টিকে থাকার কথা ব্যক্ত করতে পারবে।
পাঠভিত্তিক উদ্দেশ্য
এ পাঠটি পড়ার পর তুমি---
- ‘কিংবদন্তি’ শব্দটির অর্থ জানাসহ বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আলোচনা করতে পারবে।
- কবিতা আমাদের সংগ্রামী জবিনকে কীভাবে প্রভাবিত করে তা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
- কবি কীভাবে কবিতা ও সত্যের অভেদ কল্পনায় সচেষ্ট ছিলেন তা বর্ণনা করতে পারবে।
- বিভিন্ন চিত্রকল্পের মাধ্যমে কবি কীভাবে ইন্দ্রিয় থেকে ইন্দ্রিয়াতীতের দ্যোতনা সৃষ্টি করেছেন তা ব্যাখ্যা করতে পারবে ।
- ‘সশস্ত্র সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান’ ঘটাতে কবিতার সচেতন প্রয়াস সম্পর্কে বিশ্লেষণ করতে পারবে ।
মূলপাঠ
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
তাঁর করতলে পলিমাটির সৌরভ ছিল
তাঁর পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল।
তিনি অতিক্রান্ত পাহাড়ের কথা বলতেন
অরণ্য এবং শ্বাপদের কথা বলতেন
পতিত জমি আবাদের কথা বলতেন
তিনি কবি এবং কবিতার কথা বলতেন।
জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা
কর্ষিত জমির প্রতিটি শস্যদানা কবিতা।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে ঝড়ের আর্তনাদ শুনবে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে দিগন্তের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে আজন্ম ক্রীতদাস থেকে যাবে।
আমি উচ্চারিত সত্যের মতো
স্বপ্নের কথা বলছি।
উনোনের আগুনে আলোকিত
একটি উজ্জ্বল জানালার কথা বলছি।
আমি আমার মায়ের কথা বলছি,
তিনি বলতেন প্রবহমাণ নদী
যে সাঁতার জানে না তাকেও ভাসিয়ে রাখে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে নদীতে ভাসতে পারে না।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে মাছের সঙ্গে খেলা করতে পারে না।
যে কবিতা শুনতে জানে না
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
তাঁর করতলে পলিমাটির সৌরভ ছিল
তাঁর পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল।
তিনি অতিক্রান্ত পাহাড়ের কথা বলতেন
অরণ্য এবং শ্বাপদের কথা বলতেন
পতিত জমি আবাদের কথা বলতেন
তিনি কবি এবং কবিতার কথা বলতেন।
জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা
কর্ষিত জমির প্রতিটি শস্যদানা কবিতা।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে ঝড়ের আর্তনাদ শুনবে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে দিগন্তের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে আজন্ম ক্রীতদাস থেকে যাবে।
আমি উচ্চারিত সত্যের মতো
স্বপ্নের কথা বলছি।
উনোনের আগুনে আলোকিত
একটি উজ্জ্বল জানালার কথা বলছি।
আমি আমার মায়ের কথা বলছি,
তিনি বলতেন প্রবহমাণ নদী
যে সাঁতার জানে না তাকেও ভাসিয়ে রাখে।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে নদীতে ভাসতে পারে না।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে মাছের সঙ্গে খেলা করতে পারে না।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতে পারে না।
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
আমি বিচলিত স্নেহের কথা বলছি
গর্ভবতী বোনের মৃত্যুর কথা বলছি
আমি আমার ভালোবাসার কথা বলছি।
ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়
যুদ্ধ আসে ভালোবেসে
মায়ের ছেলেরা চলে যায়,
আমি আমার ভাইয়ের কথা বলছি।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে সন্তানের জন্য মরতে পারে না।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে ভালোবেসে যুদ্ধে যেতে পারে না।
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে সূর্যকে হৃৎপিন্ডে ধরে রাখতে পারে না।
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
তাঁর পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল
কারণ তিনি ক্রীতদাস ছিলেন।
যে কর্ষণ করে
শস্যের সম্ভার তাকে সমৃদ্ধ করবে।
যে মৎস্য লালন করে
প্রবহমাণ নদী তাকে পুরস্কৃত করবে।
যে গাভীর পরিচর্যা করে
জননীর আশীর্বাদ তাকে দীর্ঘায়ু করবে।
যে লৌহখন্ডকে প্রজ্বলিত করে
ইস্পাতের তরবারি তাকে সশস্ত্র করবে।
দীর্ঘদেহ পুত্রগণ
আমি তোমাদের বলছি।
আমি আমার মায়ের কথা বলছি
বোনের মৃত্যুর কথা বলছি
ভাইয়ের যুদ্ধের কথা বলছি
আমি আমার ভালোবাসার কথা বলছি।
আমি কবি এবং কবিতার কথা বলছি।
সশস্ত্র সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান কবিতা
সুপুরুষ ভালোবাসার সুকণ্ঠ সংগীত কবিতা
জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি মুক্ত শব্দ কবিতা
রক্তজবার মতো প্রতিরোধের উচ্চারণ কবিতা।
আমরা কি তাঁর মতো কবিতার কথা বলতে পারবো
আমরা কি তাঁর মতো স্বাধীনতার কথা বলতে পারবো
শব্দের অর্থ
উনোনের আগুনে আলোকিত একটি উজ্জ্বল জানালা-- আগুনে সবকিছু শুচি হয়ে ওঠে। তাই আগুনের উত্তাপে পরিশুদ্ধ হয়ে সকল গ্লানি মুছে ফেলে আলোয় ভরা মুক্তজীবনের প্রত্যাশা জানাতে উজ্জ্বল জানালার অনুষঙ্গ ব্যবহৃত হয়েছে।
কিংবদন্তি--জনশ্রুতি। লোকপরম্পরায় শ্রুত ও কথিত বিষয় যা একটি জাতির ঐতিহ্যের পরিচয়বাহী।
পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত--মানুষের ওপর অত্যাচারের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে এখানে। সেই অত্যাচারের আঘাত যে এখনও তাজা রয়েছে তা বোঝাতেই রক্তজবার প্রসঙ্গ ব্যবহৃত হয়েছে। আরও লক্ষণীয়, আঘাত রয়েছে পিঠে। অর্থাৎ, শত্রুরা ভীরু কাপুরুষের মতো পিছন থেকে আক্রমণ করেছে কিংবা বন্দিক্রীতদাসের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, মুক্তমানুষের সঙ্গে সম্মুখ লড়াইয়ে বীরোচিত
সাহস দেখায়নি। বিচলিত স্নেহ-- আপনজনের উৎকণ্ঠা। মুক্তিপ্রত্যাশী মানুষের আসন্ন বিপদের আশঙ্কায় তাদের স্বজনরা উদ্বিগ্ন হন। ভালোবাসা আর শঙ্কা একসঙ্গে মিশে যায়।
শ্বাপদ-- হিংস্রা মাংসাশী শিকারি জন্তু।
ক্রীতদাস-- কেনা গোলাম।
পূর্বপুরুষ-- কালের পরিক্রমায় বিভিন্ন সংকট অতিক্রমকারী জাতির পূর্বগামী সন্তানদের বুঝিয়েছেন।
মায়ের ছেলেরা চলে যায়-- দেশের ক্রান্তিকালে দেশ মাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করতে মায়ের ছেলেরা যুদ্ধে যায়।
সূর্যকে হৃৎপিন্ড ধরে রাখা-- সূর্য সকল শক্তির উৎস। তাই এই সর্বশক্তির আধারকে হৃদয়ে ধারণ করতে পারলে মুক্তি অনিবার্য। কবির মতে, এই সামর্থ্য অর্জনের একমাত্র উপায় হলো কবিতা শোনা; কবিতাকে আত্মস্থ করা। কেননা, কবির কাছে শুধু কবিতাই সত্য আর সত্যই শক্তি।
সারসংক্ষেপ
কিংবদন্তি’ শব্দটি দ্বারা লোকপরম্পরায় শ্রুত ও কথিত এমন কোনো বিষয় বুঝায়, যা একটি জাতির ঐতিহ্যেরপরিচয়বাহী। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতাটিতে কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ঐতিহ্যসচেতন শিকড়সন্ধানীমানুষের সর্বাঙ্গীণ মুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। বাঙালি জাতির হাজার বছরের সংগ্রাম ও বিজয়ের ইতিহাস এ কবিতার
প্রেক্ষাপট তৈরিতে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করেছে। এ কবিতায় কবি মানবমুক্তির আকাক্সক্ষা এবং তাঁর পূর্বপুরুষের সাহসীও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা বলেছেন। শত্রুরা কীভাবে ভীরু কাপুরুষের মতো পেছন থেকে আক্রমণ করে বা বন্দিক্রীতদাসের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তা কবি তুলে ধরেছেন। কবি মাটির কাছাকাছি মানুষের ইতিহাসের সঙ্গে বাংলার
ভ‚মিজীবী অনার্য-ক্রীতদাসের লড়াই করে টিকে থাকার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। তিনি কবি ও কবিতার কথা বলেছেন। কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ’কবিতা’ ও সত্যের অভেদ কল্পনার মাধ্যমে মায়ের কথা, বোনের কথা, ভাইয়ের কথাবলেন।
তাঁর বিশ্বাস যুদ্ধই মুক্তি আনতে পারে। যুদ্ধ শুরু হলে মানুষকে পরিবার থেকে দূরে যেতে হয়, ভালোবাসার মানুষকে মুক্ত করতে তাদের ছেড়ে যেতে হয়। এ সত্য আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস থেকে প্রাপ্ত। কবি ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ এবং ‘যে কবিতা শুনতে জানে না’ পঙ্ক্তিমালার মাধ্যমে কবিতা আর মুক্তির
আবেগকে একত্রে শিল্পরূপ দিয়েছেন। এ কবিতায় কবি একাধিক চিত্রকল্পের মাধ্যমে [যেমন, “কর্ষিত জমির প্রতিটিশস্যদানা কবিতা”] ইন্দ্রিয় থেকে ইন্দ্রিয়াতীতের দ্যোতনা সৃষ্টি করেছেন। কবির বিশ্বাস, যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত এ
দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এ-দেশের দামাল ছেলেরা। তাদের পরিশ্রমের ফসল হিসেবে সাফল্য আসবেই। কবিতাই পারে সেই সশস্ত্র সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান ঘটাতে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কে ‘কিংবদন্তির কথা’ বলেছেন?
ক. আহসান কবির খ. আহসান হাবীব
গ. আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ঘ. আবু জাফর শামসুদ্দিন
২. ‘শ্বাপদ’ বলতে বোঝায়-
ক. ইস্পাতের তরবারী খ. মৎস্য কন্যা
গ. হিংস্রৃ মাংসাশী প্রাণী ঘ. শস্যের সম্ভার
নিচের উদ্দীপপকটি পড় এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
আমিতো এসেছি চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে
আমিতো এসেছি পালযুগ নামে চিত্রকলা থেকে।
৩. উদ্দীপকে কবিতার যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে-
ক. প্রকৃতিচেতনা খ. ঐতিহ্যচেতনা
গ. ইতিহাসচেতনা ঘ. ভূগোলচেতনা
৪. উদ্দীপক এবং ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে-
i. ধর্মীয় সত্তা
ii. জাতীয় সত্তা
iii. সাংস্কৃতিক সত্তা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. iii ঘ. ii ও iii
৫. যে কবিতা শোনে না সে সন্তানের জন্য কী করতে পারে না?
ক. লড়তে খ. মরতে
গ. ত্যাগ ঘ. আশীর্বাদ
৬. কবি কেন তাঁর পূর্বপুরুষের কথা বলেছেন?
ক. উচ্চ বংশমর্যাদা ছিল বলে খ. নিপীড়িত হয়েছে বলে
গ. সংস্কৃতিচর্চা করত বলে ঘ. গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে বলে
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ৭ ও ৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
জাহানারা ইমামের বড় ছেলে রুমি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। অভূতপূর্ব দেশপ্রেম তাকে মায়ের কোল ত্যাগ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
৭. উদ্দীপকের চরিত্রটির সঙ্গে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কার সঙ্গে মিল রয়েছে?
ক. নূরুলদীন খ. কবি
গ. আনোয়ার ঘ. কলিম
৮. উদ্দীপক ও ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় প্রকাশিত হয়েছেÑ
i. শঙ্কা
ii. করুণা
iii. ভালবাসা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. iii ঘ. i ওii
৯. কবির পূর্বপুরুষের করতলে কিসের সৌরভ ছিল?
ক. পলিমাটির খ. শস্যদানার
গ. মৎস্যকন্যার ঘ. রক্তজবার
১০. কবি কেন ‘বিচলিত স্নেহের কথা বলেছেন?
ক. শঙ্কায় খ. বিপদে
গ. ভালবাসায় ঘ. কল্পনায়
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ১১ ও ১২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
‘স্মৃতিস্তম্ভ’ কবিতায় বর্ণিত হয়েছে মাটির কাছাকাছি মানুষের ইতিহাস। এই ইতিহাস বাংলার ভূমিকেন্দ্রিক অনার্য ক্রীতদাসদের লড়াই করে টিকে থাকার ইতিহাস।
১১. উদ্দীপকের সঙ্গে আপনার পঠিত কোন কবিতার সাদৃশ্য রয়েছেÑ
ক. বঙ্গভাষা খ. সাম্যবাদী
গ.আমি কিংদন্তির কথা বলছি ঘ. আঠারো বছর বয়স
১২. এরূপ সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয় যে বিষয়ে-
i. বাঙালির ইতিহাসে
ii . লড়াইয়ে
iii . বিজয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ.iii ঘ. i, ii ও iii
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তরমালা
১. গ ২. গ ৩. গ ৪. ঘ ৫. খ ৬. ঘ ৭. খ ৮. গ ৯. ঘ ১০. ক ১১. গ ১২. ঘ
সৃজনশীল প্রশ্ন-১
স্বাধীনতা তুমি
ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি
স্বাধীনতা তুমি
রোদেলা দুপুরে মধ্য পুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।
ক. প্রবহমাণ নদী কাকে ভাসিয়ে রাখে?
খ. পূর্বপুরুষদের কেন ক্রীতদাস বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার সঙ্গে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ? -আলোচনা করুন।
ঘ. ‘স্বাধীনতায় আনন্দময় মুক্ত জীবনের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।’ -উদ্দীপক ও ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার
আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করুন।
সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
ক. যে সাঁতার জানে না প্রবহমাণ নদী তাকে ভাসিয়ে রাখে।
খ.বংশপরম্পরায় যারা অন্যের দ্বারা শাসিত হয় কবিতায় তাদেরকে ক্রীতদাস বলা হযেছে।ক্রীতদাস হলো মনিবের অর্থে ক্রয় করা মানুষ। মনিব দাসকে যা করতে বলে ক্রীতদাস সেটা করতে বাধ্য থাকে। আলোচ্যকবিতায় আমাদের পিতা-পিতামহগণ ঔপনিবেশিক শক্তির হাতে বাধা ছিলেন। তারা নিজের জমিতে ফসল ফলালেও সেটা
নিজেদের মত করে ভোগ করতে পারতেন না। শত্রæশক্তির সঙ্গে পেরে উঠতে না পেরে তারা নির্জীব পাথরের মতোনিজেদের জীবন অতিবাহিত করতেন। প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে তারা প্রভুর শক্তিকে নিয়তি মনে করে সব নির্যাতন মুখ বুঁজে সহ্য করতেন।
এজন্য কবিতায় পূর্বপুরুষদের ক্রীতদাস বলা হয়েছে।
গ.
‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় বর্ণিত স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিষয়টি উদ্দীপকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কবি প্রতারক ও অত্যাচারী ভূস্বামীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার কথা বলেছেন।
জনতা যখন এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তখন সম্মিলিত কণ্ঠে প্রতিবাদের ভাষা ধ্বনিত হয়। কবির উপলব্ধিতে সে প্রতিবাদের ধ্বনি বজ্রকণ্ঠের ন্যায়। আর মাহাত্ম্য গুণে সে প্রতিবাদের ভাষাই হয়ে উঠে কবিতা। কবিতায় কবি বলেছেন, তিনি তাঁর পূর্বপুরুষের কথা থেকে তাঁদের সংগ্রামী ইতিহস ও ঐতিহ্য সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন।
সে ইতিহাস ক্রীতদাসের জীবন থেকে মুক্তিলাভের ইতিহাস। কবি বলেছেন, যখন যুদ্ধ আসে তখন মায়ের ছেলেরা যুদ্ধে চলে যায়। যুদ্ধের সময় মা-বোনের মৃত্যু হয়, জনবসতি ও ছাত্রাবাস ধ্বংস হয়। কিন্তু সূর্যকে হৃৎপিন্ডে ধারণ করে মহা
আনন্দে মুক্তিকে ছিনিয়ে আনে মায়ের ছেলেরা। অন্যদিকে উদ্দীপকে স্বাধীনতাকে দেখা হয়েছে কৃষকের মুখের হাসির মধ্য দিয়ে। এখানে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতারও স্বাধীনতার মোহময় প্রকাশ। তাই উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায,
উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ.
উদ্দীপক ও ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় স্বাধীনতার আনন্দময় মুক্তজীবনের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কবির মতে নিবেদিতপ্রাণ প্রত্যেক কৃষকই কবি। কবিতা কৃষকের পতিত জমি আবাদের প্রেরণা যোগায়। কবিতা শোনা মানুষ মুক্তমনে মাছের সঙ্গে খেলা করতে পারে। আর মায়ের কোলে শুয়ে গল্প করতে পারে।
উদ্দীপকে স্বাধীনতার আনন্দকে কৃষকের মুখের হাসির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। কৃষকের শস্যক্ষেতে ফলন ভালো হলে তার মুখে হাসি ফোটে। এই নির্মল হাসি স্বাধীনতার প্রতীক। উদ্দীপকে গ্রাম্য মেয়ের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে স্বাধীনতাকে খোঁজা হয়েছে।
উদ্দীপকের কবির মতে রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে অবাধ সাঁতার কাটাও স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ। অন্যদিকে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কবি তাঁর পূর্বপুরুষদের সংগ্রামী ও গৌরবময় জীবনের ইতিহাস বলেছেন। কবির মতে কবিতা মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে, মুক্তজীবনের স্ব¦প্ন দেখায়।
উদ্দীপকে কৃষকের হাসিমাখা মুখে মুক্তজীবনের আনন্দ ফুটে উঠেছে। গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার কাটাতেও স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। উদ্দীপকের কবির মতে স্বাধীনতা হলো আনন্দময় মুক্তজীবনের প্রতীক। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায়ও উল্লিখিত ‘কবিতা’ শব্দটি আনন্দময় মুক্তজীনের প্রতিনিধিত্ব করে। তাই উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে বলা যায়, স্বাধীনতায় আনন্দময় জীবনের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
নিজে কর
সৃজনশীল প্রশ্ন-২
আমি তো এসেছি চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে
আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙ্গার বহর থেকে।
আমি তো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে
আমি তো এসেছি পাল যুগ নামে চিত্রকলা থেকে।
ক. কে আজন্ম ক্রীতদাস থেকে যাবে?
খ. ধরে রাখা’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকটি কোন দিক থেকে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? -ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার মূলভাব পূর্ণাঙ্গরূপে প্রকাশিত হয়নি।” -মন্তব্যটি বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন-৩
৯ অক্টোবর চলে গেল চে’র প্রয়াণ দিবস। চে গুয়েভারার নাম শুনলেই চোখে ভাসে এক রোমান্টিক বিপ্লবীর অবয়ব। সারা বিশ্বের শোষিত, নিপীড়িত ও মুক্তিকামী মানুেেষর প্রদীপ্ত প্রতীক তিনি। সাম্রাজ্যবাদি শাসকদের কাছেও সমানভাবে পরিচিত এই নামটি। চে দশকের পর দশক, বছরের পর বছর জুড়ে রয়ে গেছেন তারুণ্যের প্রতীক হয়ে। যে তরুণ স্বপ্ন দেখে, যে তরুণ সবার জন্য সমান একটি পৃথিবীকে আলিঙ্গন করতে চায়, তার সবচেয়ে বড় অবলম্বন চে।
ক. ‘কিংবদন্তি’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘তার করতলে পলিমাটির সৌরভ ছিল’ কেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়ের সঙ্গে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য নির্ণয় কর।
ঘ. উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার মূল ভাব প্রকাশ করে কী? আপনার মন্তব্যের সপক্ষে কিংবা বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধর।
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url