এস এস সি ৪র্থ অধ্যায় পর্যায় সারণি জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (ক ও খ )

এস এস সি রসায়ন  ৪র্থ অধ্যায় পদার্থের অবস্থা ১০০% কমনের   নিশ্চয়তায়… আমাদের প্রচেষ্টা-- বিভিন্ন ধরনের টেষ্ট পেপার ও মূলবই থেকে কমন উপযোগী প্রশ্ন গুলো নিয়ে আমাদের সাজেশন ,আশা করি অনেক কমন আসবে ইনশাআল্লাহ্…


জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নগুলোর উত্তরসমূহ:

আমাদের  ওয়েবসাইট ও  চ্যানেলে তোমাদের  স্বাগতম । আমরা প্রতিনিয়ত সকল বোর্ডের প্রশ্নের সমাধান দিয়ে থাকি । তোমাদের যে কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে দিতে পার । আমরা উত্তর দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। পরবর্তিতে সকল প্রশ্নের ব্যাখ্যাসহ সমাধান আপলোড দেব । পড়ার টেবিল নামের পুরো একটা লাইব্রেরী!  এত বই পড়ে কি লাভ? যদি কমন না আসে এত বই পড়ার পরেও!

শিক্ষার্থীদের হতাশা থেকে মুক্তির পথে,আমরা শতভাগ (১০০%) কমনের নিশ্চয়তায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ! 

বিকল্পধারায় সহজ থেকেও সহজতর পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপহার স্বরুপ শিক্ষা,  জ্ঞান-বিজ্ঞান, CQ, MCQ,মডেল টেষ্ট, সৃজনশীল প্রশ্ন+উত্তর ও ভিডিও ক্লাস। সম্পুর্ণ ডিজিটাল পথে শিক্ষার্থীদের সফলতার সর্বোচ্চ চুড়ায় পৌঁছে দিতে আমাদের এই উদ্বেগ।

পেজ সূচিপত্র (জ্ঞানমূলক প্রশ্নগুলো)


পেজ সূচিপত্র (অনুধাবনমূলক প্রশ্নগুলো)

প্রশ্ন ১। পর্যায় সারণি কী? 

[রা. বো. '২০; চ. বো. '২১; দি, বো, '২১

উত্তর : প্রায় একই ধরনের ধর্মবিশিষ্ট মৌলসমূহকে একই শ্রেণিভুক্ত করে আবিষ্কৃত সব মৌলকে স্থান দিয়ে মৌলসমূহের যে সারণি বর্তমানে প্রচলিত তাই পর্যায় সারণি।

প্রশ্ন ২। মেন্ডেলিফের পর্যায় সূত্রটি লিখ ।

[রা. বো. '২২; কু. বো. '২১; সি. বো. '২১; ম. বো. '২২]

উত্তর : ম্যান্ডেলিফের পর্যায় সূত্রটি হলো :

“মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি তাদের পারমাণবিক ভর বৃদ্ধির সাথে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়।”

প্রশ্ন ৩। ত্রয়ী সূত্রটি লিখ । 

[ঢা. বো. ’২০; য. বো. '২২: ম. বো. '২১, '২০] 

উত্তর : পারমাণবিক ভর অনুসারে তিনটি করে মৌলকে সাজালে দ্বিতীয় মৌলের পারমাণবিক ভর প্রথম ও তৃতীয় মৌলের পারমাণবিক ভরের যোগফলের অর্ধেক বা তার কাছাকাছি, যাকে ডোবেরাইনারের ত্রয় সূত্র বলা হয় ।

প্রশ্ন ৪। পর্যায় সারণির অষ্টক তত্ত্বটি লিখ ।

 [ব. বো. ’২১; সি. বো. ‘১৭] 

উত্তর : মৌলগুলোকে তাদের পারমাণবিক ভর অনুযায়ী সাজালে প্রতি অষ্টম মৌলসমূহের ধর্মের মিল দেখা যায়, যা পর্যায় সারণির ‘অষ্টক তত্ত্ব' নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ৫। নিউল্যান্ডের অষ্টক তত্ত্বটি লিখ ।

[ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ] 

উত্তর : নিউল্যান্ডের অষ্টক সূত্রটি হচ্ছে “মৌলসমূহকে যদি পারমাণবিক ভরের ছোট থেকে বড় অনুযায়ী সাজানো যায়, তবে যেকোনো পর্যায়ের ১ম একটি মৌলের ধর্ম তার অষ্টম মৌলের ধর্মের সাথে মিলে যায়” । 

প্রশ্ন ৬। IUPAC এর পূর্ণরূপ লিখ।

উত্তর : IUPAC এর পূর্ণরূপ : International Union of Pure and Applied Chemistry |

প্রশ্ন ৭। পারমাণবিক সংখ্যার আবিষ্কারক কে?

উত্তর : 'পারমাণবিক সংখ্যার আবিষ্কারক হলেন বিজ্ঞানী হেনরি মোসলে ।

প্রশ্ন ৮। পর্যায় কাকে বলে?

[চ. বো. '২১]

উত্তর : পর্যায় সারণির বাম থেকে ডান পর্যন্ত বিস্তৃত সারিগুলোকে পর্যায় বলে ।

প্রশ্ন ৯। আধুনিক পর্যায় সূত্রটি লিখ ।

[রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ

উত্তর : আধুনিক পর্যায় সূত্রটি হলো— বিভিন্ন মৌলের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি তাদের পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধি অনুসারে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়।

প্রশ্ন ১০। সংশোধিত পর্যায় সূত্রটি লিখ।

(চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম] 

উত্তর : সংশোধিত পর্যায় সূত্র হলো— মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি তাদের পারমাণবিক সংখ্যা অনুযায়ী আবর্তিত হয়।

প্রশ্ন ১১। তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে? 

উত্তর : দুটি পরমাণু যখন সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অণুতে পরিণত হয় তখন অণুর পরমাণুগুলো বন্ধনের ইলেকট্রন দুটিকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে, এই আকর্ষণকে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলে । [ঢা বো. '২২; কু. বো. ’২২] গ্যাসীয় অবস্থায় কোনো মৌলের এক মৌল গ্যাসীয় পরমাণুতে এক মোল ইলেকট্রন প্রবেশ করিয়ে এক মৌল ঋণাত্মক আয়নে পরিণত করতে যে শক্তি নির্গত হয়, তাকে ঐ মৌলের ইলেকট্রন আসক্তি বলে ।

প্রশ্ন ১২। ইলেকট্রন আসক্তি কী?

উত্তর : গ্যাসীয় অবস্থায় কোনো মৌলের এক মৌল গ্যাসীয় পরমাণুতে এক মোল ইলেকট্রন প্রবেশ করিয়ে এক মৌল ঋণাত্মক আয়নে পরিণত করতে যে শক্তি নির্গত হয়, তাকে ঐ মৌলের ইলেকট্রন আসক্তি বলে।

প্রশ্ন ১৩। পর্যায়বৃত্ত ধর্ম কী? 

[ডাঃ খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, ময়মনসিংহ] চট্টগ্রাম;

উত্তর : পর্যায় সারণিতে অবস্থিত মৌলগুলোর কিছু ধর্ম যেমন, ধাতব ধর্ম, অধাতব ধর্ম, পরমাণুর আকার, আয়নিকরণ শক্তি, তড়িৎ ঋণাত্মকতা ইত্যাদি ধর্মসমূহকে পর্যায়বৃত্ত ধর্ম বলে ।

প্রশ্ন ১৪। মৃৎক্ষার ধাতুসমূহের সক্রিয়তার ক্রম লিখ ।

 উত্তর : Ba > Sr > Ca > Mg > Be.

প্রশ্ন ১৫। মুদ্রা ধাতু কাকে বলে?

[ঢা. বো. '১৯, '১৫; রা. বো. ’১৯; য. বো. ’২১, '২০; চ. বো. ’২২, '১৫] 

উত্তর : পর্যায় সারণির গ্রুপ 11 নং এর 4টি মৌল (Cu, Ag, Au, Rg) এর মধ্যে ১ম 3টি মৌল (Cu, Ag, Ag) কে মুদ্রা ধাতু বলে ।

প্রশ্ন ১৬। অবস্থান্তর মৌল কাকে বলে?

[য. বো. '২২]

উত্তর : যেসব মৌলের স্থিতিশীলতা আয়নের ইলেকট্রন বিন্যাসে d অরবিটাল আংশিক পূর্ণ থাকে অর্থাৎ d হয় তাদেকে অবস্থান্তর' মৌল বলে ৷

প্রশ্ন ১৭। হ্যালোজেন কাকে বলে?

[রা. বো. ১৭; কু. বো. ’১৫; ব. বো. ১৭]

উত্তর : পর্যায় সারণির গ্রুপ-17 এর 6টি মৌল (F, Cl, Br, I, At ও Ts) কে হ্যালোজেন বলে ।

প্রশ্ন ১৮। ক্ষার ধাতু কাকে বলে?

[পাবনা ক্যাডেট কলেজ;সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেট]

উত্তর : পর্যায় সারণির গ্রুপ-1 এর অন্তর্ভুক্ত 6টি মৌল Li, Na, K, Rb Cs ও Fr কে ক্ষার ধাতু বলা হয় ।

প্রশ্ন ১৯। হ্যালোজেন দ্বারা কী বুঝানো হয়? 

[ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ, চট্টগ্রাম]

উত্তর : হ্যালোজেন এর অর্থ হলো লবণ উৎপাদনকারী, সারণির গ্রুপ- 17 এর 6টি মৌলসমূহ F, Cl, Br, I, At ও Ts |

প্রশ্ন ২০। নিষ্ক্রিয় গ্যাস কী?

[ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট]

উত্তর : পর্যায় সারণির গ্রুপ 18 এ অবস্থিত He, Ne, Ar, Kr, Xe Rnএই 6টি গ্যাসীয় মৌলকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলে ।

প্রশ্ন ২১। হ্যালোজেনসমূহের মূল উৎস কী? 

উত্তর : হ্যালোজেনসমূহের মূল উৎস সামুদ্রিক লবণ ।

প্রশ্ন ২২। মুদ্রা ধাতুগুলো পর্যায় সারণির কোন গ্রুপে অবস্থিত?

উত্তর : মুদ্রা ধাতুগুলো (Cu, Ag, Au) পর্যায় সারণির গ্রুপ-11-তে অবস্থিত ।

প্রশ্ন ২৩ । অ্যাকটিনাইড মৌল কাকে বলে?

উত্তর : যে সকল মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা 89 থেকে 103 পর্যন্ত এ রকম 15টি মৌলকে অ্যাকটিনাইড মৌল বলা হয় ।

প্রশ্ন ২৪। ধাতু কাকে বলে?

উত্তর : যে সকল মৌল এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয় তাদেরকে ধাতু বলে ।

প্রশ্ন ২৫। অধাতু কাকে বলে?

উত্তর : যে সকল মৌল এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়নে পরিণত হয় তাদেরকে অধাতু বলে ।

প্রশ্ন ২৬। একটি অভিজাত ধাতুর নাম লিখ।

উত্তর : একটি অভিজাত ধাতু হলো— রূপা (Ag)।

প্রশ্ন ২৭। ধাতুর অক্সাইড কোন ধৰ্মী ?

উত্তর : ধাতুর অক্সাইডসমূহ ক্ষারধর্মী ।

প্রশ্ন ২৮। ক্ষার ধাতুর সাথে পানির বিক্রিয়ায় কী উৎপন্ন হয়? 

উত্তর : ক্ষার ধাতুর সাথে পানির বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন গ্যাস ও ক্ষার দ্রবণ তৈরি হয় ।

অনুধাবনমূলক প্রশ্নগুলো

প্রশ্ন ১। উপযুক্ত উদাহরণের সাহায্যে ত্রয়ী সূত্র ব্যাখ্যা কর।

 [বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, বগুড়া 

উত্তর : রাসায়নিকভাবে সদৃশ প্রতি 3টি মৌল শ্রেণির মাঝের মৌলটির পারমাণবিক ভর মোটামুটিভাবে অপর মৌল দুটির পারমাণবিক ভরের গড় হয়— এটিই ডোবেরাইনার ত্রয়ী সূত্র। উদাহরণ, লিথিয়াম (7) ও পটাসিয়াম (39) এর পারমাণবিক ভরের গড় সোডিয়াম (23) এর পারমাণবিক ভরের প্রায় সমান ।

প্রশ্ন ২। পর্যায় সারণিতে বোরনের অবস্থান নির্ণয় কর।

[সিলেট ক্যাডেট কলেজ]

উত্তর : বোরন (B) এর ইলেকট্রন বিন্যাস—



সর্বশেষ ইলেকট্রন p অরবিটালে যায় বলে— গ্রুপ সংখ্যা = 10 + যোজ্যতা স্তরের মোট e সংখ্যা

= 10 + 3 = 13

আবার, ইলেকট্রন বিন্যাস দুইটি স্তরে বিন্যস্ত হওয়ায় এটি ২য় পর্যায়ের মৌল। সুতরাং B মৌলটি ২য় পর্যায়ের গ্রুপ-13 তে অবস্থিত।

প্রশ্ন ৩। ইলেকট্রন বিন্যাস করে পর্যায় সারণিতে Sc এর অবস্থান নির্ণয় কর ৷ 

[ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]

উত্তর : Sc(21) এর ইলেকট্রন বিন্যাস—

পর্যায় নির্ণয় : ইলেকট্রন বিন্যাস চারটি স্তরে বিন্যস্ত হওয়ায় এটি ৪র্থ পর্যায়ের মৌল ।

গ্রুপ নির্ণয় : সর্বশেষ ইলেকট্রন d অরবিটালের প্রবেশ করায় (n – 1)d ও ns অরবিটালের মোট ইলেকট্রন গ্রুপ নির্দেশ করে। অর্থাৎ 1 + 2 = 3 নং গ্রুপে Sc মৌলটি অবস্থিত।

প্রশ্ন ৪। ফসফরাস মৌলের পর্যায় সারণিতে অবস্থান ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর : কোনো মৌলের সর্ববহিঃস্থ শেলের ইলেকট্রন সংখ্যা অনুসারে তার গ্রুপ এবং শেলের স্তরের সংখ্যা অনুসারে পর্যায় নির্ধারণ করা হয়। ফসফরাস (15) এর ইলেকট্রন বিন্যাস 2, 8, 5। এর শেন সংখ্যা 3টি এবং সর্ববহঃস্থ স্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা 5টি সুতরাং ফসফরাস ৩য় পর্যায়ের 5 + 10 = 15 নং গ্রুপে অবস্থান করবে।

প্রশ্ন ৫। পর্যায় সারণিতে ক্লোরিনের অবস্থান ব্যাখ্যা কর।

 উত্তর : ক্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপ-

ইলেকট্রন বিন্যাস অনুযায়ী, ইলেকট্রনগুলো তিনটি শক্তিস্তরে বিন্যস্ত। কাজেই, ক্লোরিনের অবস্থান হবে তৃতীয় পর্যায়ে। আবার, সর্ববহিঃশ্ব শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা 7। অতএব ক্লোরিনের গ্রুপ সংখ্যা হবে 7 + 10 = 17 । 

প্রশ্ন ৬। পর্যায় সারণিতে 20 পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌলের অবস্থান নির্ণয় কর ।

উত্তর : 20 পারমাণবিক সংখ্যাবিশিষ্ট মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপ-


ইলেকট্রন বিন্যাস অনুযায়ী, ইলেকট্রনগুলো চারটি শক্তিস্তরে বিন্যস্ত। কাজেই মৌলটির অবস্থান হবে চতুর্থ পর্যায়ে।

আবার, সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা 2। অতএব, মৌলটির গ্রুপ সংখ্যা হবে 2।

প্রশ্ন ৭। পর্যায় সারণিতে একটি মৌল একটি মাত্র স্থান দখল করে কেন? 

উত্তর : প্রতিটি মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা নির্দিষ্ট বলে প্রতিটি মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসও নির্দিষ্ট এবং একটির ইলেকট্রন বিন্যাস অন্যটি থেকে ভিন্ন। আবার প্রতিটি পারমাণবিক সংখ্যার জন্য পর্যায় সারণিতে একটি নির্দিষ্ট অবস্থান হয়েছে। তাই পর্যায় সারণিতে একটি মৌল একটিমাত্র স্থান দখল করে।

প্রশ্ন ৮। হিলিয়ামকে 18নং গ্রুপে রাখা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

 [রা. বো, '২২: য. বো, '২২

 উত্তর : হিলিয়ামকে গ্রুপ-18 তে রাখা হয়। কারণ He এর ইলেকট্রন বিন্যাস He(2) = 1s2 । He এর সর্বশেষ কক্ষপথ ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকে । এজন্য এটি অপর কোনো মৌলের সাথে ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন বা শেয়ার করে না ৷ অর্থাৎ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। আবার 18 নং গ্রুপ হচ্ছে নিষ্ক্রিয় মৌলসমূহের গ্রুপ। এক্ষেত্রে মৌলগুলোর ইলেকট্রন বিন্যাসে সর্ববহিঃস্থ স্তর ইলেকট্রন দ্বারা অষ্টক পূর্ণ, যা স্থিতিশীল। যার জন্য অন্য মৌলের সাথে শেয়ার বা আদান-প্রদান করে না। অর্থাৎ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে । তাই He কে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সাথে গ্রুপ- 18 তে রাখা হয় ৷

প্রশ্ন ৯ । He কে গ্রুপ II-এ রাখা হয়নি কেন ব্যাখ্যা কর।

[চ. বো. ’২০; ব. বো. ১৯, '১৬/

উত্তর : হিলিয়াম (He) এর ইলেকট্রন বিন্যাস 1s2। অর্থাৎ হিলিয়ামের (He) সর্বশেষ কক্ষপথে 2টি ইলেকট্রন রয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবে He এর অবস্থান পর্যায় সারণিতে দ্বিতীয় গ্রুপে মৃৎক্ষার ধাতুদের সাথে হওয়া উচিত। He এর সর্বশেষ কক্ষপথ ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকায় He গ্রুপ-II এর মৌলসমূহের মত সক্রিয়তা, ধাতব বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে না। সর্বোপরি, মৃৎক্ষার ধাতুদের সাথে ইলেকট্রন বিন্যাস ব্যতীত বৈশিষ্ট্যগত কোন মিল না থাকায় He কে গ্রুপ-II এ না রেখে শূন্য (0) গ্রুপে রাখা হয়েছে।

প্রশ্ন ১০।H কে গ্রুপ-। এ স্থান দেয়া হয়েছে কেন?

[সি. বো. '২২]

উত্তর : H কে গ্রুপ-1 এ স্থান দেওয়া হয়। কারণ গ্রুপ-1 এর মৌলগুলোর যোজ্যতা স্তরে 1টি মাত্র ইলেকট্রন থাকে। H(1) = 1s' পরমাণুর যোজ্যতা স্তরেও 1টি মাত্র ইলেকট্রন থাকে। গ্রুপ-1 এর মৌলগুলোর যোজনী-1, H এর যোজনীও 1। গ্রুপ-1 এর মৌলগুলো হ্যালোজেনের সাথে ধাতব হ্যালাইড (MX) গঠন করে, Hও হ্যালোজেনের সাথে HX যৌগ গঠন করতে পারে। অর্থাৎ গ্রুপ-1 এর বৈশিষ্ট্য H এর সাথে মিল থাকায় H কে গ্রুপ-1 এ স্থান দেওয়া হয়েছে ।

প্রশ্ন ১১। CI অপেক্ষা P এর তড়িৎ ঋণাত্মকতা কম— ব্যাখ্যা কর ।

[দি. বো. ২০]

 উত্তর : দুটি পরমাণু যখন সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অণুতে পরিণত হয় তখন অণুর পরমাণুগুলো বন্ধনের ইলেকট্রন দুটিকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে; এই আকর্ষণকে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলে । একই পর্যায়ের যত বাম থেকে ডানে যাওয়া যায় মৌলের আকার তত কমে, শেয়ারকৃত ইলেকট্রনের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় ফলে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বৃদ্ধি পায়। P ও CI একই পর্যায়ের মৌল এবং CI ডানে অবস্থিত হওয়ায় CI এর আকার ছোট তাই তড়িৎ ঋণাত্মকতা বেশি । অর্থাৎ CI অপেক্ষা P এর তড়িৎ ঋণাত্মকতা কম ।

প্রশ্ন ১২। F ও Ne এর মধ্যে কোনটির আকার বড়? ব্যাখ্যা কর ।

[চ. বো. '২২] 

উত্তর : F এবং Ne এর মধ্যে F আয়নের আকার বড়। কারণ F আয়নে ৭টি প্রোটন ও 10টি ইলেকট্রন থাকায় নিউক্লিয়াস কর্তৃক বহিঃস্থ স্তরের অধিক সংখ্যক ইলেকট্রনের প্রতি আকর্ষণ কমে যায়। ফলে পরমাণুর আকার বড় হয়। পক্ষান্তরে Ne পরমাণুতে 10টি ইলেকট্রন ও 10টি প্রোটন থাকায় বহিঃস্তরে তুলনামূলক কম ইলেকট্রন থাকায় ইলেকট্রনের প্রতি নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ অধিক হয়। ফলে পরমাণুর আকার ক্ষুদ্র হয়। এজন্য F আয়নের আকার (147 pm), যা Ne পরমাণুর আকার (38 pm) এর তুলনায় অনেক বড় ।

প্রশ্ন ১৩। ক্লোরিন অপেক্ষা ফ্লোরিন এর ইলেকট্রন আসক্তি কম- ব্যাখ্যা কর । 

[দি বো. '২২]

উত্তর : 

F ও Cl এর সর্বশেষ শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা 7 কিন্তু F এর সর্বশেষ ইলেকট্রনগুলো ২য় শক্তিস্তরে এবং Cl এর ইলেকট্রনগুলো ৩য় শক্তিস্তরে থাকে । F এর আকার ছোট হওয়ায় ২য় শক্তিস্তরে ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব বেশি। ফলে নতুন ইলেকট্রন আগমনে বিকর্ষণ বৃদ্ধি পায়। তাই F এর ইলেকট্রন আসক্তির মান CI এর তুলনায় কম।

প্রশ্ন ১৪। CI ও Ar এর মধ্যে কোনটির আকার ছোট?

[ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ, চট্টগ্রাম]

 উত্তর : CI ও Ar এর মধ্যে Ar এর আকার ছোট। কারণ Cl 

 মৌল দুটি পর্যায় সারণির ৩য় পর্যায়ের যথাক্রমে গ্রুপ-17 ও গ্রুপ-18 তে অবস্থিত। একই পর্যায়ের বাম থেকে ডানে পারমাণবিক আকার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়। কারণ বাম থেকে ডানে যোজ্যতা স্তর বৃদ্ধি পায়। ফলে আগত ইলেকট্রনের প্রতি নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় এবং পরমাণুর আকার ছোট হয়। Ar(18) পরমাণু Cl(17) এর ডানে অবস্থিত হওয়ায় Ar আকার ছোট হয়।

প্রশ্ন ১৫। Na অপেক্ষা Na+ এর আকার ছোট কেন?

[বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ]


উত্তর :  Na এর গঠন বিন্যাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে এর বিন্যাস 2, 8, 1। এর সর্ববহিঃস্থ Na Nat কক্ষপথে একটি মাত্র ইলেকট্রন এবং Na পরমাণু Na+ আয়ন তিনটি কক্ষপথ বিদ্যমান । +

আবার যখন Na তার সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন ত্যাগ করে Nat আয়নে পরিণত হয় তখন তার বিন্যাস দাঁড়ায় 2, 8। ইলেকট্রন ত্যাগের মাধ্যমে এর শক্তিস্তর দুটিতে পরিণত হয়। ফলে Nat এর আকার ছোট হয়ে আসে। তাই Na অপেক্ষা Na+ এর আকার ছোট।

প্রশ্ন ১৬। পর্যায় বৃত্ত ধর্ম বলতে কী বুঝ ?

উত্তর : মৌলসমূহের ভৌত, রাসায়নিক ধর্মাবলি তাদের ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। যেহেতু মৌলসমূহের ইলেকট্রন বিন্যাস পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয়, সেহেতু মৌলসমূহের কিছু ধর্ম পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়। এসব ধর্মকে পর্যায়বৃত্ত ধর্ম বলা হয়। যেমন—ইলেকট্রন আসক্তি, আয়নিকরণ বিভব, তড়িৎ ঋণাত্মকতা, পারমাণবিক ব্যাসার্ধ ইত্যাদি মৌলের পর্যায়বৃত্ত ধর্ম ।

প্রশ্ন ১৭। Na, Mg, Al, Si এর মধ্যে কার ইলেকট্রন আসক্তি বেশি বা কার ইলেকট্রন আসক্তির মান কম?

উত্তর : Na, Mg, Al, Si এর মৌলগুলো পর্যায় সারণির 3নং পর্যায়ের মৌল। এই মৌলগুলোর মধ্যে Na এর পারমাণবিক ব্যাসার্ধের মান সবচেয়ে বেশি এজন্য সোডিয়াম এর ইলেকট্রন আসক্তির মান সবচেয়ে কম। আবার, Si এর পারমাণবিক ব্যাসার্ধের মান সবচেয়ে কম সেজন্য এর ইলেকট্রন আসক্তির মান সবচেয়ে বেশি ।

প্রশ্ন ১৮। একই গ্রুপে উপর থেকে নিচে গেলে পদার্থের গলনাঙ্কের মান কমতে থাকে কেন?

উত্তর : একই গ্রুপে উপর থেকে নিচের দিকে গেলে পারমাণবিক সংখ্যার বৃদ্ধি সাথে সাথে নতুন শক্তি স্তরের সৃষ্টি হয়। ফলে নিউক্লিয়াস থেকে সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনের দূরত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে । যার ফলে নিউক্লিয়াস ও সর্বশেষ ইলেকট্রনের মধ্যবর্তী আকর্ষণ বল কমতে থাকে। ফলে সর্বশেষ শক্তি স্তর থেকে ইলেকট্রন অপসারণ করতে কম তাপের প্রয়োজন হয়। যার ফলে একই গ্রুপে উপর থেকে নিচের দিকে গেলে গলনাঙ্কের মান কমতে থাকে ।

প্রশ্ন ১৯। Na অপেক্ষা CI এর ইলেকট্রন আসক্তি বেশি কেন?

উত্তর : জানা আছে, একই পর্যায়ের যত বাম থেকে ডানে যাওয়া যায় পরমাণুর আকার তত ক্ষুদ্র হয় এবং ইলেকট্রন আসক্তির মান তত বৃদ্ধি পায়। Na ও CI পর্যায় সারণির ৩য় পর্যায়ের মৌল। Na সর্ববামে ও Cl সর্বডানে অবস্থিত হওয়ায় Na অপেক্ষা Cl এর ইলেকট্রন আসক্তি বেশি ।

প্রশ্ন ২০। Ar কে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলা হয় কেন? 

[ঢা. বো. '২০; চ. বো. '২১; সি. বো. '২১]

উত্তর : আর্গন (Ar) নিষ্ক্রিয় গ্যাস। কারণ, 18Ar এর (1s2 2s2 2p6 3s 2 3p') সর্ববহিঃস্থ স্তরে ইলেকট্রন দ্বারা অষ্টক পূর্ণ থাকে, যা অত্যন্ত সুস্থিত। এ সুস্থিত ইলেকট্রন বিন্যাস ভাঙতে অনেক শক্তির প্রয়োজন। তাই Ar স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো মৌলের সাথে যুক্ত হয় না। অর্থাৎ বহিঃস্থ স্তরের সুবিন্যস্ত ইলেকট্রন বিন্যাসের কারণে Ar নিষ্ক্রিয় হয় ।

প্রশ্ন ২১। Ne নিষ্ক্রিয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

 [ব. বো. '২১] 

উত্তর : নিয়ন (Ne) নিষ্ক্রিয় গ্যাস। কারণ, 1oNe এর ইলেকট্রন বিন্যাস (1s2 2s2 2po)-এ সর্ববহিঃস্থ স্তরে ইলেকট্রন দ্বারা অষ্টক পূর্ণ থাকে, যা অত্যন্ত সুস্থিত। এ সুস্থিত ইলেকট্রন বিন্যাস ভাঙতে অনেক শক্তির প্রয়োজন। তাই Ne স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো মৌলের সাথে যুক্ত হয় না। অর্থাৎ বহিঃস্থ স্তরের সুবিন্যস্ত ইলেকট্রন বিন্যাসের কারণে Ne নিষ্ক্রিয় হয় ।

প্রশ্ন ২২। হিলিয়াম নিষ্ক্রিয় গ্যাস- ব্যাখ্যা কর।

[ঢা. বো. '১৬; ম. বো. '২০]

উত্তর : হিলিয়াম একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। কারণ হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস He (2) 1s± অর্থাৎ ইলেকট্রন বিন্যাসে 1s অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকে। ১ম পর্যায়ের ক্ষেত্রে অন্য কোনো অরবিটাল না থাকায় এবং s অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকায় হিলিয়াম মৌলটি অন্য কোনো মৌল এমনকি আরেকটি হিলিয়ামের সাথে যুক্ত হতে পারে না। ইলেকট্রন দান বা গ্রহণ এবং শেয়ারের মাধ্যমে যৌগ গঠন করতে পারে না বলে এটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস ।

প্রশ্ন ২৩। Rb কে ক্ষার ধাতু বলা হয় কেন? 

[রা. বো. '২১]

উত্তর : Rb কে ক্ষারধাতু বলা হয়। কারণ এটি গ্রুপ-1 এ অবস্থিত মৌল এবং পানির সাথে বিক্রিয়া করে তীব্র ক্ষার (RbOH) তৈরি করে।

বিক্রিয়া :

প্রশ্ন ২৪। পটাশিয়াম কে ক্ষার ধাতু বলা হয় কেন?

 য. বো. ’২১; রা. বো. ;১৬, '১৭; কু. বো. '২১, '১৭, '১৬]

উত্তর : 

পটাসিয়াম (K) কে ক্ষার ধাতু বলা হয়। কারণ পটাসিয়াম গ্রুপ-1 এর মৌল এবং পানির সাথে বিক্রিয়া করে তীব্র ক্ষারীয় KOH যৌগ উৎপন্ন করে ।

আবার KOH অম্লের অম্লত্বকে বিনষ্ট করতে পারে এবং বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।


প্রশ্ন ২৫ । মৃৎক্ষার ধাতু বলতে কী বুঝায়?

[দি. বো. '১৫] 

উত্তর : গ্রুপ-2 এ অবস্থিত Be থেকে শুরু করে Ra পর্যন্ত মৌলসমূহকে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয় । এদের ধর্ম অনেকটা ক্ষার ধাতুর মতোই । এদের অক্সাইডসমূহ পানিতে ক্ষারীয় দ্রবণ তৈরি করে। এরাও সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরের 2টি ইলেকট্রন প্রদান করে আয়নিক যৌগ (লবণ) তৈরি করে। এ মৌলসমূহ বিভিন্ন যৌগ হিসেবে মাটিতে থাকে ।

প্রশ্ন ২৬। ক্যালসিয়ামকে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর ।

 [য. বো. '২২; চ. বো. ’২১; দি. বো. '২১]

 উত্তর : ক্যালসিয়ামকে (Ca)-কে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয়; এর কারণ হলো এটি গ্রুপ-2 এর মৌল এবং এদের অক্সাইডসমূহ পানিতে ক্ষারীয় দ্রবণ তৈরি করে। এছাড়া মৌলটি বিভিন্ন যৌগ হিসেবে মাটিতে থাকে ।

বিক্রিয়া : 

প্রশ্ন ২৭। Cu কে মুদ্রা ধাতু বলা হয় কেন? 

[সি. বো. '২২]

উত্তর : Cu কে মুদ্রা ধাতু বলা হয়। কারণ প্রাচীনকালে Cu ধাতু দ্বারা মুদ্রা তৈরি হতো এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেনের মাধ্যম হিসাবে Cu ধাতুর মুদ্রা ব্যবহার করা হতো। এজন্য Cu কে মুদ্রা ধাতু বলে ।

প্রশ্ন ২৮। ক্লোরিনকে হ্যালোজেন বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

 (ঢা. বো. '২২, দিবো, '২১)

উত্তর : হ্যালোজেন মানে লবণ উৎপাদনকারী। এর মূল  উৎস সামুদ্রিক লবণ। হ্যালোজেন মৌলগুলোর সাথে ধাতু যুক্ত হয়ে লবণ গঠিত হয়। যেমন Cl এর সাথে Na ধাতু যুক্ত হয়ে সোডিয়াম ক্লোরাইড লবণ বা খাদ্য লবণ (NaCl) গঠিত হয়।

এজন্যই ক্লোরিন (CI) কে হ্যালোজেন বলা হয় ।

প্রশ্ন ২৯। অবস্থান্তর ধাতুর ২টি বৈশিষ্ট্য লেখ।

 [বগুড়া জিলা স্কুল ]

 উত্তর : অবস্থান্তর মৌলের ২টি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ : ১. অবস্থান্তর মৌলসমূহ পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে। ২. অবস্থান্তর মৌলসমূহ রঙিন ও জটিল যৌগ গঠন করে ।

প্রশ্ন ৩০। অবস্থান্তর মৌলের ব্যাখ্যা কর ।

 [গভঃ ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা] 

উত্তর : পর্যায় সারণিতে গ্রুপ -3থেকে গ্রুপ-11 পর্যন্ত অবস্থিত মৌলসমূহকে অবস্থান্তর মৌল বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যেসব d ব্লকভুক্ত মৌলের সর্বশেষ স্তরের d অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা আংশিকভাবে (J−) পূর্ণ থাকে তাদেরকে অবস্থান্তর মৌল বলে। অবস্থান্তর মৌলসমূহের নিজস্ব বর্ণ আছে, এরা পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে এবং প্রভাবক হিসাবে কাজ করতে পারে।

প্রশ্ন ৩১। Fe একটি অবস্থান্তর মৌল-ব্যাখ্যা কর ।

[সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজ, টঙ্গী, গাজীপুর] 

উত্তর : যে সকল d-ব্লক মৌলের স্থায়ী আয়নের ইলেকট্রন বিন্যাস করলে d অরবিটালে ইলেকট্রন সংখ্যা 1 ৭টি হয় তাদেরকে অবস্থান্তর মৌল বলে। আয়রন তথা Fe এর একটি স্থায়ী আয়ন হচ্ছে Fe+2। এর ইলেকট্রন বিন্যাস করলে d অরবিটালে ইলেকট্রন সংখ্যা 6টি (যা, 1 – 9 এর মধ্যে) হয়। তাই Fe কে অবস্থান্তর মৌল বলা হয় । যেমন—

প্রশ্ন ৩২। Zn কে অবস্থান্তর মৌল বলা হয় না কেন?

[চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ]

উত্তর : যে সকল d-ব্লক মৌলের স্থায়ী আয়নে d অরবিটালের ইলেকট্রন বিন্যাস d9 হয় তাদেরকে অবস্থান্তর মৌল বলা হয়। এক্ষেত্রে Zn এর স্থায়ী আয়ন Zn2+ এর ইলেকট্রন বিন্যাস হলো Zn2+ (30) = 1s2 2s2 2p 6 3s 2 3p 3d 10 4s°

যেহেতু d অরবিটালের ইলেকট্রন বিন্যাস d9 নয় তাই Zn কে অবস্থান্তর মৌল বলা হয় না ।

প্রশ্ন ৩৩। Cu অবস্থান্তর মৌল কেন?

 [রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ, রাজশাহী ]

 উত্তর : যেসব ধাতব মৌলের সুস্থিত আয়নের d অরবিটাল আংশিকভাবে ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকে, সেগুলোকে অবস্থান্তর মৌল বলা হয়।


প্রশ্ন ৩৪। Sc মৌলটি d ব্লক হলেও অবস্থান্তর নয়- ব্যাখ্যা কর ।

 [রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ ]

উত্তর : যে সকল d-ব্লক মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে d অরবিটাল, ইলেকট্রন দ্বারা আংশিকভাবে (d) পূর্ণ থাকে তাদেরকে অবস্থান্তর মৌল বলে। যে সকল মৌলের সুস্থিত আয়নে d-অরবিটাল ইলেকট্রন

দ্বারা পূর্ণ বা শূন্য থাকলে তারা d-ব্লক মোল হওয়া সত্ত্বেও অবস্থান্তর মৌল নয় । Sc(21) এর ইলেকট্রন বিন্যাস-

প্রশ্ন ৩৫। নিষ্ক্রিয় গ্যাসের নিষ্ক্রিয়তার কারণ ব্যাখ্যা কর।

[ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, কুমিল্লা]

 উত্তর : পর্যায় সারণির গ্রুপ নং 18-এ অবস্থিত মৌলসমূহকে (Ne, Ar, Kr .....) নিষ্ক্রিয় মৌল বলা হয়। এদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইলেকট্রন দ্বারা অষ্টকপূর্ণ (ns2 np) থাকায় এরা ইলেকট্রন আদান-প্রদান বা শেয়ারের মাধ্যমে যৌগ গঠনে সাধারণত আগ্রহ প্রকাশ করে না। এ কারণেই নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলো সাধারণত নিষ্ক্রিয় হয় ।

প্রশ্ন ৩৬। Mg কে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয় কেন ? 

[কুমিল্লা জিলা স্কুল]

উত্তর : পর্যায় সারণির 2নং গ্রুপের Be Mg Ca Sr Ba Ra এই ৬টি ধাতুকে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয়। পৃথিবীর উপরিভাগের মাটির আবরণ হলো ভূ-ত্বক। ভূ-ত্বকে বিভিন্ন ধাতু যৌগরূপে বিদ্যমান । ম্যাগনেশিয়াম (Mg) কে মাটির নিচে যৌগ রূপে পাওয়া যায় বলেই Mg কে মৃৎক্ষার ধাতু বলে। Mg মাটিতে MgO রূপে বিদ্যমান থাকে ।

প্রশ্ন ৩৭ । Be কে মৃৎক্ষার ধাতু বলে কেন ? 

[কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ ]

উত্তর : বেরিলিয়ামকে (Be)-কে মৃৎক্ষার ধাতু বলা হয়; এর কারণ হলো এটি গ্রুপ-2 এর মৌল এবং এদের অক্সাইডসমূহ পানিতে ক্ষারীয় দ্রবণ তৈরি করে। এছাড়া মৌলটি বিভিন্ন যৌগ হিসেবে মাটিতে থাকে ।

বিক্রিয়া : 

প্রশ্ন ৩৮। হ্যালোজেন বলতে কি বুঝ? ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর : গ্রুপ-17 এর F. Cl Br I At ও Ts কে হ্যালোজেন বলা হয়। কারণ হ্যালোজেন এর অর্থ লবণ উৎপাদনকারী এবং এর মূল উৎস সামুদ্রিক লবণ। হ্যালোজেন মৌলগুলোর সাথে ধাতু যুক্ত হয়ে লবণ গঠন করে। যেমন— Na ধাতু হ্যালোজেন মৌল CI এর সাথে যুক্ত হয়ে NaCl লবণ গঠন করে।

প্রশ্ন ৩৯। সকল d ব্লক মৌলই অবস্থান্তর মৌল নয়— ব্যাখ্যা কর।

 উত্তর : যে সকল d-ব্লক মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে -অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা আংশিকভাবে (d) পূর্ণ থাকে তাদেরকে অবস্থান্তর

মৌল বলে। যে সকল মৌলের সুস্থিত আয়নে d-অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ বা শূন্য থাকলে তারা d-ব্লক মৌল হওয়া সত্ত্বেও অবস্থান্তর মৌল নয়। যেমন Set (21) =......3d° এবং Zn2+ = 3d 4so মৌল দুটি d-ব্লক মৌল হওয়া সত্ত্বেও অবস্থান্তর নয়। তাই বলা যায়, সকল d-ব্লক মৌলই অবস্থান্তর মৌল নয় ।

প্রশ্ন ৪০ ৷ সোনা, রুপা প্রভৃতি ধাতুকে অভিজাত ধাতু বলা হয় কেন? 

উত্তর : সোনা, রুপা প্রভৃতি ধাতু তুলনামূলকভাবে কম সক্রিয় হওয়ায় এদেরকে অন্য কোনো মৌলের সাথে যুক্ত হতে দেখা যায় না। এমনকি এরা সাধারণ ঘনমাত্রার এসিড বা ক্ষার দ্বারাও আক্রান্ত হয় না। এসব ধাতুর মাঝে স্থায়ী উজ্জ্বলতা বর্তমান থাকে এবং এদেরকে ধাতব মুদ্রা হিসেবে যথেষ্ট ব্যবহার করা হয়। এজন্যই সোনা, রুপা প্রভৃতি ধাতুকে অভিজাত ধাতু হিসেবে অভিহিত করা হয়। 

প্রশ্ন ৪১। F2 ও Cl, একই ধরনের বিক্রিয়া প্রদর্শন করে— ব্যাখ্যা 

[চ. বো. '২২]

 উত্তর : F2 ও Cl2 একই ধরনের বিক্রিয়া প্রদর্শন করে । কারণ মৌল দুটি একই গ্রুপ-17 এর অন্তর্ভুক্ত। এ গ্রুপের মৌলগুলো হ্যালোজেন নামে পরিচিত। এরা ধাতুর সাথে যুক্ত হয়ে ধাতুর হ্যালাইড (NaF, NaCl) গঠন করে। যেমন,

আবার হাইড্রোজেন (H2) এর সাথে যুক্ত হয়ে হাইড্রাসিড গঠন করে।

সুতরাং F2 ও Cl2 একই ধরনের বিক্রিয়া প্রদর্শন করে ।

প্রশ্ন ৪২। AL,O, উভধর্মী অক্সাইড কেন?

উত্তর : ধাতুর যেসব অক্সাইড পৃথক পৃথকভাবে এসিড ও ক্ষারকের সাথে বিক্রিয়া করে প্রতিক্ষেত্রে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাদেরকে উভধর্মী অক্সাইড বলে ।

Al2O3 একটি উভধর্মী অক্সাইড। কারণ এটি এসিড যেমন HCl এবং ক্ষার NaOH এর সাথে পৃথকভাবে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে ।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url